অনলাইন ডেস্ক: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্র আজিজুল হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব জানায়, ইজিবাইক ছিনিয়ে নেওয়ায় বাধা দেওয়ায় আজিজুলকে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
তারা হলেন- সাকিব (১৯), সজীব (১৯), আরমান (২০), আরাফাত (১৯), হৃদয় (২০), সাইফুল (২২), সজিব (২৪), জিতু (১৯) ও ইব্রাহিম (১৯)।
র্যাব অধিনায়ক, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের মতো যাত্রী পরিবহনের জন্য আজিজুল অটো নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরে সে আর রাতে ফিরে আসেনি। ফলে পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে থাকে। এসময় তার ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে রাত সাড়ে নটার দিকে প্রতিবেশী রুমা বেগমের ছোট ছেলে জানায় বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় আজিজুলকে হত্যার পর তার অটো ছিনিয়ে নিয়ে গেছে হত্যাকারীরা। পরে বেল্ট দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় আজিজুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় আজিজুলের পরিবার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ছয়টার দিকে আজিজুল ও তার প্রতিবেশী রবিউল ইজিবাইক নিয়ে ইকুরিয়া আন্ডারপাসে অবস্থান করে। এ সময় সাকিব ও আরমান সারিঘাট যাওয়ার কথা বলে তার ইজিবাইকে ওঠে। সারিঘাট যাওয়ার পথে হাসনাবাদ এলাকায় আরাফাত সজীব ও রায়হান ওঠে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় হোয়াইট হাউস এর কাছে পৌঁছালে সাকিব গাড়ি থেকে নেমে মানুষের চলাফেরা নজর রাখতে শুরু করে।
তিনি বলেন, অপর চারজন বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকার ক্লাস মোটরস লিমিটেড নামের একটি বাস তৈরির গ্যারেজের পেছনে নিয়ে যায়। এরপর তারা আজিজুলের ইজিবাইকটি নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং আজিজুল তার ইজিবাইকটি দিতে অস্বীকার জানায়। কিন্তু ওই সময় তার গাড়িতে থাকা প্রতিবেশী রবিউল নামে এক ছোট ছেলেকে তারা নামিয়ে আটকে রাখে। এরপর আরাফাত, আরমান ও রায়হান গ্যারেজের পেছনে কলা গাছের নিচে নিয়ে আজিজুলকে মারতে থাকে। একপর্যায়ে তারা বুকের উপর উঠে হাত ধরে রাখে এবং রায়হান মুখ চেপে ধরে আরাফাত তার প্যান্টের বেল্ট খুলে তার গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। ছোট ছেলে রবিউল আজিজুলকে হত্যার বিষয়টি যেন কাউকে না জানায় এজন্য তাকে ভয়-ভীতি দেখায়।
তিনি আরও বলেন, পরে তারা ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। শেষে হৃদয়, জিতু ও ইব্রাহিম ছিনতাই করা ইজিবাইকটি হত্যাকারীদের কাছ থেকে গ্রহণ করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জ এলাকায় গিয়ে তার সহযোগী সাইফুলের কাছে হস্তান্তর করে। সাইফুল তাদের আরেক সহযোগী সজীবের কাছে হস্তান্তর করে। সজীব সাইফুলের কাছ থেকে ইজিবাইকটি বুঝে নিয়ে তা আজিজুর নামে আরেকজনের কাছে বিশ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। পরে তারা ইজিবাইক বিক্রির টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়।
Leave a Reply