1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
মিজানকে মোবাইলে প্রাণনাশের হুমকি থানায় জিডি অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন এবং সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণের দাবিতে মানিকগঞ্জে সুজনের মানববন্ধন    মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের সবটিতেই বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী শিবালয় কৃষকদলের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত শিবালয়ে শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষক আটক মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাটের যমুনা নদীর তীরে ৫লাখ কৃষকের সমাবেশের প্রস্তুতি শিবালয়ে নাশকতা মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা, শিবালয়ে আনন্দমিছিল মানিকগঞ্জ ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী কমিটি গঠন শিবালয়ে বিএনপি’র আনন্দ মিছিল

যে কারণে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা

  • সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৩১ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জসহ আটটি জেলা। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙনস্থল দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় একের পর এক জনপদ প্লাবিত হচ্ছে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যার পেছনে ভারত বাঁধের গেট খুলে দেওয়া অন্যতম কারণ হলেও এটি মূল কারণ নয়। তাদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে যাওয়ায় পাহাড়ি ঢল ও বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ভারী বর্ষণে নদীগুলোর পানি বিপদসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় ভারতের ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন অঞ্চলও বন্যার কবলে পড়েছে। প্রতি বছর ভারত বন্যায় আক্রান্ত হলেই বাঁধের গেট খুলে দেয়। এ বছরও তারা কোথাও কোথাও গেট খুলে দিয়েছে এবং কিছু জায়গায় অতিরিক্ত পানির কারণে বাঁধের গেটগুলো ভেঙে গেছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া সময়ের আলোকে বলেন, বাংলাদেশের উজানের অংশে বিশেষ করে ভারতের মিজোরাম ও ত্রিপুরা অঞ্চলে প্রচুর ভারী বর্ষণের কারণে ঢলের পানি নেমে আসায় উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় হঠাৎ বন্যা হয়েছে। অতি বৃষ্টিপাতের কারণে নদীগুলোর পানি বিপদসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় ভারতের ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন এলাকাও বন্যার কবলে পড়েছে। ভারত বন্যায় আক্রান্ত হলে সাধারণত বাঁধের গেট খুলে দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে অতিরিক্ত পানির কারণে বাঁধের গেটগুলো ভেঙে যেতে পারে। এ কারণে তাদের ওখানে বেশি বৃষ্টিপাত হলে তারা বাঁধের গেট খুলে দিতে বাধ্য হয়।

তিনি বলেন, উজানের পানি পাহাড় থেকে নেমেই বাংলাদেশে ঢুকে যায়। তাই আমরা যদি কোনো বড় জলাধর করতে পারি তা হলে পানি সরাসরি আঘাত না করে জলাধারে পড়লে আমাদের ক্ষতিটা কম হবে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করলে তারা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার আগে যদি জানিয়ে দেয় তা হলে আমরা সতর্ক হয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারব। না জানিয়ে হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দিলে মুশকিল হয়।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দুদিন আগে সুস্পষ্ট লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। লঘুচাপের কারণে সিলেট ও চট্টগ্রামে অস্বাভাবিকভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, অন্যদিকে উষ্ণ, মৌসুমি বায়ুর কারণে অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে কম ছিল। এমনটা সাধারণত ঘটে না। এ কারণেও বন্যা হয়েছে।

পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক সময়ের আলোকে বলেন, সিলেট অঞ্চলের নদীতে প্রচুর বালি ও পাথর আসে। তাই ড্রেজিং করার কয়েক দিন পরই দেখা যায় ফের ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে উজানের ঢল এলে সিলেট অঞ্চলে বন্যা হয়। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার বিষয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নৌপথ ও পানি সম্পদ বিষয়ক গবেষক আশীষ কুমার দে সময়ের আলোকে বলেন, প্রতি বছর উজান থেকে পানির সঙ্গে পলি আর পাথর নেমে এসে আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর বাংলাদেশ অংশের তলদেশ ভরাট করে ফেলে। এতে নদীগুলোর পানি ধারণক্ষমতা কমে গেছে। ফলে এসব নদীতে বেশি পানি এলে তা উপচে আশপাশের এলাকা ভাসিয়ে ফেলে। নদীর নাব্য সংকট, হাওরে অপরিকল্পিত বাঁধ ও সøুইস গেটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, হাওর-বিল-ঝিল ভরাট, নির্বিচারে পাহাড়-টিলা কাটার কারণে প্রায় প্রতি বছরই সিলেট অঞ্চলে বন্যা হয়।

নদী গবেষক শেখ রোকন গণমাধ্যমকে বলেন, অভিন্ন নদী অববাহিকায় বৃষ্টিপাত ও বন্যার তথ্য পরস্পরকে জানানোর বিষয়ে ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি রয়েছে। যেমন-ব্রহ্মপুত্রের তথ্য চীন আমাদের জানিয়ে থাকে। আবার আত্রাই বা পুনর্ভবা নদী অববাহিকার দিনাজপুর বা ঠাকুরগাঁওয়ে অতিবর্ষণ বা বন্যা হলে আমরা ভারতকে সতর্ক করি, যাতে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর বা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রস্তুতি নিতে পারে। এ ক্ষেত্রেও ভারত ত্রিপুরায় অতি বৃষ্টিপাত ও বন্যার তথ্য জানিয়েছে। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে ডম্বুর ও কলসি ড্যাম এবং ব্যারেজের গেট খোলার তথ্য জানায়নি। ভারতীয় পররাষ্ট্র বা আবহাওয়া দফতরও সেটি দাবি করেনি। এই যে ড্যাম বা ব্যারেজের গেট খোলার তথ্য জানায়নি, সেটিই বন্যাটিকে বিপর্যয়কর করে তুলেছে।

তবে ভারতের ত্রিপুরার গণমাধ্যমগুলো বলছে, ত্রিপুরা রাজ্যজুড়েই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যায় সেখানে দুদিনে ১২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সেখানকার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে ভারত। ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতীর জেলা প্রশাসক তরিৎ কান্তি চাকমা তার সরকারি এক্স অ্যাকাউন্টে এ কথা জানিয়েছেন।

এ ছাড়া বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘ত্রিপুরা এবং পাশের এলাকায় অত্যধিক বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা হয়েছে। বাংলাদেশের তরফে অভিযোগ উঠছে, ত্রিপুরার দামদুর বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ায় সেই দেশের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এটি তথ্যগতভাবে ভুল। দামদুর বাঁধ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। সেই বাঁধের উচ্চতা মাত্র ৩০ মিটার, সেখানে যে পানি জমা হয় সেটি বাংলাদেশে বন্যার কারণ হতে পারে না।’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন নদী রয়েছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে দুই দেশের লোকেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে, অযথা দোষারোপ করার প্রয়োজন নেই।’

যেকোনো যৌথ নদীর বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে জানানোর রীতি রয়েছে জানিয়ে যৌথ নদী কমিশন, বাংলাদেশের সদস্য ড. মোহাম্মদ আবুল হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, হাইড্রোপাওয়ারে গেট থাকে না, যেটি খুলে দিতে হবে। এটি ‘স্পিল’ করেছে। ভারতের পার্টের লেক পানিতে পূর্ণ হয়ে গেলে অটো স্পিল করে। ভারতের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তা সত্য। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল। এটি খুব ছোট হাইড্রোপাওয়ার, গোমতী নদীর ১২৩ কিলোমিটার উজানে এ হাইড্রোপাওয়ার। হঠাৎ টানা বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়েছে। তিন দিন আগে ভারতের যে পূর্বাভাস, তার চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, গোমতী নদীতে একটা স্টেশনের (অমরপুর) পানির লেবেলের তথ্য ভারত দিয়েছে।

ফেনীর বন্যা তিনটি কারণে হয়েছে জানিয়ে ড. মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, আগে থেকেই সেখানে নদীতে পানির লেবেল অনেক বেশি ছিল। তার পরে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ৩১৩ মিলিলিটার বৃষ্টি পরশুরামে হয়েছে। আর বর্ডারের ওই পাশে বিলোনিয়ার বৃষ্টি হয়েছে ৩২৪ মিলিলিটার যা রেকর্ড। অন্যদিকে নিম্নচাপের কারণে সমুদ্র ফুলেফেঁপে উঠেছে।নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রের লেবেলের উচ্চতা বেড়ে গেলে উজানের পানি সমুদ্রের দিকে ঠিকমতো নামে না। এ তিনটি কারণে ফেনী অঞ্চলে বন্যা হয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :