1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বিতর্কিত কাউকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না:মির্জা ফখরুল ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ রোপণ বন্ধ করতে উপদেষ্টার নির্দেশ মানব সমাজ পরিবর্তনশীল এর তাল মিলাতে না পারলে আওয়ামী লীগের মতো ছিটকে পড়তে হবে:ড.মঈন খান জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পর্যাপ্ত সহায়তা প্রয়োজন:ড. ইউনূস অনলাইনে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে মানিকগঞ্জে তারণ্যনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মানে আমাদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় মানিকগঞ্জের কোথায়ও অতিরিক্ত মূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক বিক্রি ও সরবরাহের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে: সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন কেয়ামতের আগে মানুষের যে অবস্থা হবে দেশে থাকলে দ্রুতই গ্রেপ্তার হচ্ছেন ওবায়দুল কাদের

মানিকগঞ্জের ডিসি রেহেনা আকতার বদলী, এখন খেঁজুর গাছ প্রকল্পের কি হবে?

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১০৯ বার পড়েছেন

শাহজাহান বিশ্বাস: মানিকগঞ্জের ডিসি রেহেনা আকতারের বদলী, এখন বহুল আলোচিত খেঁজুর গাছ প্রকল্পের কি হবে?প্রজেক্ট মানেই টাকার খুনি।খাঁচা আছে গাছ নেই, থাকলেও খেঁজুর গাছের পরিবর্তে আম গাছ। এটি ছিল মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের নিজস্ব উদ্ভাবনী মানিকগঞ্জের ব্রান্ডিং ঐতিবাহী হাজিরী গুরের ইতিহাস ধরে রাখার একটি প্রয়াস। সেই লক্ষ্যেই তিনি এ প্রকল্প হাতে নেন। প্রথম পরযায়ে ঢাক ঢোল পিটেয়ে নামলেও শেষের দিকে এসে ঝিমিয়ে পরে এ প্রকল্পের কাজ। অবশেষে বহুল আলোচিত এ “খেজুর গাছ প্রকল্প’ বানিয়ে নয়-ছয় করে টাকা লুট-পাটসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের বিরুদ্ধে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ের শামসুন্নাহার হলের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগ করার আর্শিবাদেই মানিকগঞ্জের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি।বিধায় সাধারণ মানুষতো দুরের কথা, কাউকেই পাত্তা দিতেন না তিনি। জরুরী প্রয়োজনে তাকে ফোনে পাওয়া অনেকটা দুরুহ ব্যাপার ছিল। মানিকগঞ্জ জেলার ইতিহাসে এরকম ডিসি আর কখনই আসেনি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তিনি রাষ্টীয় দায়িত্বের চেযে দলীয় কর্মকাণ্ডে বেশি ৎপরতা, বিরোধী দলীয় বা মতের মানুষদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য  করা ছিল তার জন্য মামলিক ব্যাপার।

এছাড়া বালু মহাল, বিভিন্ন হাট-ঘাট ইজারা, লঞ্চ-বাস-ট্রাক সহ বিভিন্ন পরিবহন সংগঠন, ইটভাটা, জলমহাল, চাকুরির নিয়োগ বাণিজ্য, বিভিন্ন ক্রয় কমিটির কমিশন খাওয়া,সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের সকল অপকর্মের সহযোগীতা, নির্দ্দিষ্ট কয়েকটা আওয়ামী দালাল মিডিয়ার পৃষ্ঠপোষকতা সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা এই ডিসির বিরুদ্ধে।২৭তম বিসিএস-এর এই কর্মকর্তা গত ২০২৩ সালের ২৪শে জুলাই মানিকগঞ্জে জেলা প্রশাসক হিসাবে যোগদান করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামসুন্নাহার হলের ছাত্রলীগের হল শাখার সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলেও জানা যায়।

জানা গেছে, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সরকারি প্রকল্প এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানী নিমিটেড এর কারখানা স্থাপনের জন্যে জমি ক্রয় সংক্রান্ত শত কোটি টাকার দূর্নীতির গোপন রহস্য ফাঁস ও মন্ত্রীর সম্ভাব্য দূর্নীতি ঠেকানোর দায়ে তৎকালিন সুনামধন্য জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফকে সরিয়ে মানিকগঞ্জে ডিসি করা হয় রেহেনা আকতারকে।

রেহেনা আকতার মানিকগঞ্জে বিখ্যাত হাজারী গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও এই ঐতিহ্যবাহী পণ্যটিকে ব্যাপকভাবে প্রচার করার জন্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে খেজুর গাছের চারা রোপন, রক্ষণাবেক্ষণ, সভা-সেমিনার, প্রদর্শনী করে বেশ সাড়া ফেলে দেন। জেলাবাসী তার এই উদ্যোগকে প্রথমে অভিনন্দনও জানান। চলতি বছরের ২রা ফেব্রুয়ারী জেলর হাজারী গুড় উৎপাদনকারী এলাকা হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকার হাজারী গ্রামে হাজারী পল্লী নাম দিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠান করে গুড় চাষীদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতার ঘোষণা দেন তিনি।সেই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সাবিরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ডিসি রেহেনা আকতার ঘোষণা করেন করেন, কোন গাছী কতগুলো গাছ থেকে গুড় উৎপাদন করেন সেই মোতাবেক তাদের কম সুদে ঋণ দেয়া হবে। এলাকায় সুপেয় পানির জন্যে পাম্প স্থাপন করা হবে। সেই সময় দরিদ্র গাছীরা অনেক খরচ করে তাদের মেহমানদারী করান।তাদের কাজের অনেক ক্ষতি করে ডিসিকে সময় দেন।

এরপর গত ৮ই ফেব্রুয়ারী মানিকগঞ্জ বিজয় মেলার মাঠে ধুমধাম করে হাজারী গুড় প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করে সকল গাছীকে ডেকে আনা হয় সেখানে। তাদের দেখানো হয় বড় বড় স্বপ্ন। প্রধান অতিথি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আর সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সাবিরুল ইসলাম।

এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিসি ঘোষণা করেন, জেলায় নতুন করে ৫ লক্ষ খেজুর চারা লাগানো হবে। পরে এটাকে বৃদ্ধি করে বলা হয় ৭ লক্ষ চারা লাগানো হবে।ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে খেঁজুর গাছের চার রোপন করা হয়েছে। রোপনকৃত চারাগুলো প্লাস্টিকের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেয়া হয়েছে।তিন যেতে না যেতেই অধিকাংশ জায়গাতেই দেখা গেছে বেড়া আছে কিন্তু খেঁজুর গাছের চারা নেই। খালি খাচা পড়ে রয়েছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় খেঁজুর গাছের পরিবর্তে আম বা অন্য গাছ রোপন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, চারা রোপণ, রক্ষনাবেক্ষণ ও এ সংক্রান্ত কাজের জন্য এলআর ফান্ডের (লোকাল রিসোর্স ফান্ড ) নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি করা হয়েছে। এসব বিষয়ের সাথে সরাসরি জড়িত আরেকজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, পুরো জেলায় নতুন করে লাগনো ৫ হাজার খেজুর গাছের চারাও বেঁচে নেই। এটা শুধুই ডিসির প্রমোশন আর টাকা আয়ের একটা মতলব। জেলার বিভিন্ন খাত থেকে টাকা নেয়া হয়েছে এই উদ্যোগের কথা বলে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি, বালুমহাল, বিভিন্ন পরিবহন সেক্টর, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, উপজেলা ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে খেজুর প্রকল্পের নামে চাঁদাবাজি।

একেতো আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ে তার হাত রয়েছে, অপর দিকে নিজেই ছাত্রলীগ নেত্রী ছিলেন। এইসব ভয়ে কেউ ডিসির বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারেনি। তাছাড়া তিনি সরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তাদের দিয়েই এলআর ফান্ডের নামে ব্যাপক দূর্নীতি করেছেন বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

হাজারী গুড় উৎপাদন সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান শামীম হাজারী বলেন, আমাদের কোন গাছীকেই কোন ঋণ দেয়া হয়নি এবং পানির পাম্পও দেয়া হয়নি।

প্রতিটি খেজুর গাছের চারা রোপনে কত টাকা খরচ হয়েছে? এ টাকাগুলো কিভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তারিকুল ইসলাম বলেন, অফিসে এসে স্যারের সাথে কথা বলেন। তাকে অনুরোধ করা হয় যেন ডিসি ফোন ধরেন। কিন্তু অনেক ফোন করলেও ডিসি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও ডিসি কোন উত্তর দেননি। তবে রাত ৮টা ৩৯ মিনিটে ডিসি ফোন করে তার বিরুদ্ধে উখাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয় আপনি কি ঢাবির সামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন কি’না? তিনি উত্তর না দিয়ে বলেন, আমার একটাই পরিচয় আমি মানিকগঞ্জে ডিসি। এ সময় তিনি বলেন, সব চারা লাগানো হয়নি। এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আর এই চারাগুলো লাগিয়েছেন বিভিন্ন এনজিও, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। এ সময় খেজুর গাছের চারা রোপণের নামে চাঁদাবাজির বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :