অনলাইন ডেস্ক: ভারতে তিস্তা নদীর ঘোলা পানির ঘূর্ণিতে ভেসে আসছে মরদেহ, চটি, জামাকাপড়, বাসনপত্র, গবাদি পশু থেকে রান্নার গ্যাসের আধভর্তি সিলিন্ডার। বুধবার ঘুম ভেঙে এমন দৃশ্য দেখলেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।
তিস্তা নদী ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে বুধবার সকাল থেকে। ভোর হওয়ার আগেই সিকিমে টানা বর্ষণে সৃষ্ট আকশ্মিক বন্যায় হুড়হুড় করে পানি গড়াতে থাকে তিস্তায়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
সিকিমে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির পরে সমতলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় তিস্তার দু’ধারে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কোথায় ঠিক কতটা ক্ষতি, তা পানি কমার পরে স্পষ্ট হবে। গজলডোবা ব্যারাজেরও ক্ষতি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যারাজ মেরামত শুরু হবে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের সেচমন্ত্রী এবং সেচসচিব উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সেবকের রেলসেতুতেও দেখা গেল, মাত্র ফুট চারেক নিচ দিয়ে বইছে তিস্তা। এই পথে রেল চলাচলের গতি কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তা রেল সেতুর কাছেও পানি বেড়ে গেছে। সেই সেতুর ওপর দিয়ে আসাম এবং দিল্লিগামী দু’টিসহ অন্য ট্রেন চালানো হয়েছে অত্যন্ত ধীরগতিতে।
দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা বাদ দিলে শুধু সমতলে তিস্তার দু’পার থেকে অন্তত পাঁচ হাজার বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার মিলিয়ে খোলা হয়েছে ২৮টি ত্রাণশিবির।
জলপাইগুড়ির গজলডোবা এলাকায় এক নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত মৃতদের পরিচয় জানা যায়নি। মনে করা হচ্ছে, দেহগুলি সিকিম বা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকা থেকে ভেসে এসেছে।
বুধবার সন্ধ্যার পরে তিস্তায় ভেসে আসা আরও একটি দেহ জলপাইগুড়িতে মিলেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চারটি দলকে শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি জেলায় উদ্ধারকাজের জন্য এসেছে। রয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলার আরও সাতটি দল।
বুধবার সকালেই গজলডোবা ব্যারাজের মূল ৪৫টি গেটই খুলে দেয়া হয়েছিল।ভোর থেকে হঠাৎ পানির তোড় এমন বেড়ে গিয়েছিল যে, গেট না খুলে দিয়ে গোটা ব্যারাজটাই ভেসে যেত। এরই মধ্যে পানির তোড়ে ক্ষতি হয়েছে জলপাইগুড়ি লাগোয়া তিস্তা বাঁধ ও স্পারের। সুত্র: ভোরের কাগজ
Leave a Reply