1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২০ পূর্বাহ্ন

বৈদেশিক ঋণ ও অর্থ ছাড়ে ভাটা কাটছে না

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১১৩ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: চলমান অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে যখন বৈদেশিক সহায়তা খুব বেশি প্রয়োজন সেই মুহূর্তেই কমছে দাতা সংস্থার ঋণ ও অর্থছাড়। যার ফলে সংকট মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া ব্যয় সংকোচন নীতি ততটা কাজে আসছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) সরকার বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ও সহায়তা বাবদ ৩৭৮ কোটি ৫ লাখ ডলার পেয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৯ কোটি ডলার কম। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এ খাতে এসেছিল প্রায় ৪১৭ কোটি ডলার। অর্থছাড় কম হলেও এ সময়ে বেড়েছে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ। একই সঙ্গে কমেছে ঋণের প্রতিশ্রুতিও। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) বিদেশি ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও ছাড়ের যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে তা বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া যায়।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে খাদ্য এবং প্রকল্প সহায়তা বাবদ বৈদেশিক অনুদানের অর্থছাড় গত অর্থবছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। তবে এ সময়ে ঋণের অর্থছাড় অনেকটা কম হয়েছে। প্রথম ছয় মাসে অনুদানের অর্থছাড় হয়েছে প্রায় ২১ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছর একই সময়ে ছিল প্রায় ১৫ কোটি ডলার। আর ঋণের অর্থছাড় হয়েছে প্রায় ৩৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরে ছিল ৪০২ কোটি ৫২ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় হয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে। তাদের কাছ থেকে এসেছে ৯২ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থছাড় করেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। তাদের কাছ থেকে এসেছে ৫৬ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। এ ছাড়া বিশ^ব্যাংকের উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) কাছ থেকে এসেছে ৫৪ কোটি ৩ লাখ ডলার। চীন থেকে এসেছে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। রাশিয়া থেকে অর্থছাড় হয়েছে প্রায় ৪৪ কোটি ডলার, ভারত দিয়েছে ১৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। এ ছাড়া অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এ সময়ে অর্থছাড় হয়েছে ৩৬ কোটি ২৮ লাখ ডলার।

একই সঙ্গে কমেছে অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতিও। ইআরডির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতিও কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। এ সময় বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ ১৭৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। অথচ এর আগের বছরের একই সময়ে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল প্রায় ৪৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬০ শতাংশ।

শুধু এডিবি ছাড়া সব উন্নয়ন সংস্থা থেকে অর্থ সহায়তা কম পেয়েছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় দুই কোটি ডলার বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। এ সময়ে এডিবি ৮৩ কোটি ৮২ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এদিকে গত বছরের এ সময় পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিলেও আইডিএ এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক গত বছরের একই সময়ে ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৫০ কোটি ডলারের, এবার দিয়েছে মাত্র ৩০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি।

গত অর্থবছরের চেয়ে এ বছর অনেক কম প্রতিশ্রুতি কম এসেছে আমেরিকা, জাপান থেকে। দেশ দুটি থেকে গত বছর প্রতিশ্রুতি ছিল ৩৮ কোটি ২২ লাখ ডলার। অথচ এ বছর মাত্র ৩ লাখ ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশ দুটি। এ ছাড়া ইউরোপ থেকে প্রতিশ্রুতি ছিল ৯১ কোটি ডলারের বেশি সেখানে এখন পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি এসেছে প্রায় ৩৬ কোটি ডলার। এ ছাড়া অন্যান্য সংস্থা থেকে ১৭৪ কোটি প্রতিশ্রুতি থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে এ সময়ে ঋণ পরিশোধের চাপেও পড়েছে সরকার। আগের চেয়ে বেশি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ১০৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০৪ কোটি ৩ লাখ ডলার। ডলারে পরিশোধের পরিমাণ মাত্র ১ কোটির একটু বেশি হলেও টাকার হিসেবে পরিমাণটি তুলনামূলক বেশি। ডলারের দাম বাড়ায় ১ হাজার ২৬১ কোটি টাকা বেশি খরচ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ খাতে খরচ হয়েছে ১০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা বেশি। গত বছর একই সময়ে যা ছিল ৮ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরে খাদ্য, প্রকল্প ও বাজেট সহায়তা বাবদ প্রায় ১ হাজার ২৩৮ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

ইআরডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৭১০ কোটি (৭.১ বিলিয়ন) ডলার ঋণ সহায়তা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিদেশি ঋণ আসে বাংলাদেশে। ওই বছর ৭৩৮ কোটি (৭.৩৮ বিলিয়ন) ডলার ঋণ পাওয়া গিয়েছিল।

বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ ছাড়ের প্রবণতা বাড়তে থাকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে। ওই বছরই এক লাফে অর্থছাড় ৩০০ কোটি থেকে ৬৩৭ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। তারপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসেছিল ৬৫৪ কোটি ডলার।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :