অনলাইন ডেস্ক: নিজের মাকে নিয়ে জীবন যুদ্ধে হার না মানা অসহায় শিশু সিফাতের পাশে দাঁড়িয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)। সিফাত ও তার মায়ের দায়িত্ব নেওয়া ছাড়াও নগদ দুই লাখ টাকা প্রদান ও সিফাতের পড়াশোনার জন্য প্রতি মাসে আর্থিক সহায়তা দেবে সংস্থাটি। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের কামাওরখন্দ এলাকার ১০ বছর বয়সী মুরাদ হোসেন সিফাত নামের এক শিশুর জীবন সংগ্রামের খবর র্যাব মহাপরিচালকের (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেনের নজরে আসে। শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। পাশাপাশি পাহাড়সম দায়িত্ব নিয়ে তার অসুস্থ মা ও পরিবারের খরচ যোগানোর প্রানান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। শিশুটি ভোর ৫টা থেকে স্থানীয় বাজারের একটি চায়ের দোকানে ২ ঘণ্টা করে নাস্তা পরিবেশন, চা বানানোর কাজ করে। এর বিনিময়ে ৫০ টাকা পারিশ্রমিক পেয়ে সংসারের বাজার ও মায়ের ওষুধ কিনতো। অসুস্থ মায়ের দেখাশুনা শেষে পড়াশোনার জন্য আবার যেতো স্কুলে।
র্যাব জানায়, সিফাতের মা শিল্পী খাতুন সিরাজগঞ্জের কামাওরখন্দ এলাকার বাসিন্দা। সিফাতের বয়স ৪ মাসের সময় তার স্বামী মাসুদ রানা মারা যান। এরপর বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু কিডনি ও থাইরয়েডজনিত অসুস্থতায় গত সাড়ে ৩ বছর ধরে অক্ষম হয়ে বর্তমানে শয্যাশায়ী। অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছিলো না। ফলে সংসারের ব্যয় বহন করতে ১০ বছরের ছোট্ট শিশু সিফাত লেখাপড়ার পাশাপাশি চায়ের দোকানে কাজ শুরু করে।
র্যাব জানায়, সিফাত ও তার অসুস্থ মাকে র্যাব সদর দফতরে নিয়ে এসে তাদের সার্বিক খোঁজ খবর নেন র্যাব মহাপরিচালক। তিনি তাদের নগদ দুই লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেন এবং সিফাতের এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। প্রতিমাসে তার পরিবারের অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রদানের আশ্বাস দেন। এছাড়াও সিফাতের মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য র্যাবের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।
র্যাব ডিজি এম খুরশীদ হোসেন আশা প্রকাশ করে বলেন, সমাজের শিল্পপতি, সমাজপতি, ও জনপ্রতিনিধিসহ সামর্থ্যবান মানুষ অসহায় মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসলে খুব দ্রুতই বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে উঠবে। পাশাপাশি এ ধরণের মানবিক সংবাদ প্রচারে ফলে সমাজের সামর্থবানরা অনুপ্রাণিত হয়ে অসহায় মানুষদের পাশে দাড়ানোর সুযোগ পাবে। তিনি সংবাদ মাধ্যমকেও ধন্যবাদ জানান।
Leave a Reply