1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২০ অপরাহ্ন

আরিচার যমুনায় বিশাল চর, বিরুপ প্রভাব পড়েছে ব্যাবসা-বাণিজ্যে

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪
  • ১২৬ বার পড়েছেন

শাহজাহান বিশ্বাস: মানিকগঞ্জের শিবালয়ে আরিচা ঘাট ও বন্দর বাজার সংলগ্ন যমুনা নদীর বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে  চর পড়ার কারণে নদীর পানি তীরবর্তি এলাকা থেকে ২কিলোমিটার দুরে সরে গেছে। এতে নাব্যতা সংকট চরম আকার ধারণ করছে। ফলে আরিচা ঘাট ও বন্দর বাজার এবং গরু-ছালের হাটে নৌপথে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিরুপ প্রভাব পড়েছে আরিচা ঘাট কেন্দ্রীক ব্যাবসা-বাণিজ্যেও। ক্রেতা-বিক্রেতা কমে যাওয়ায় ক্রয়-বিক্রয়ও কমে গেছে। ফলে ঐতিহ্যবাহী আরিচা ঘাট বন্দর বাজার এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়ার আশংকা করছেন এ এলাকার লোকজন।

জানা গেছে, ১৯৬৩ সালের ৩১ মার্চ  একটি মাত্র ফেরি দিয়ে আরিচা ঘাটের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকেই এ ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আরিচা বন্দর বাজার, মাছের আড়ৎ, ৭টি স-মিল এবং পরবর্তিতে আরিচা গরু-ছাগলের হাটসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসবের সাথে জরিয়ে রয়েছে এ এলাকার মানুষের রুটি-রুজি। কিন্তুু চরের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা পড়ে আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় চিন্তিত রয়েছেন স্থানীয়রা।

বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং ইউনিট শুস্ক মৌসুম শুরু হবার আগে থেকেই আরিচা কাছে যনুমা নদীতে ৭/৮টি ড্রেজার দিয়ে  কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেজিং করে কোন রকমে চালু রেখেছে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট সার্ভিস। এছাড়া আর কোন কাজে আসেনি ব্যায় বহুল এ ড্রেজিং। উল্টো ড্রেজিংকৃত মাটি নদীতে ফেলার কারণে বন্দর বাজার সংলগ্ন চরের দুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে। প্রায় দুই কিলোমিটার পথ চরের মধ্য দিয়ে পায়ে হেটে হাটে পোছাতে হয়। ফলে মাছের আড়তে, গরু-ছাগলের হাটে এবং প্রত্যান্ত চরাঞ্চল থেকে সকাল বেলার বাজারে সবজি নিয়ে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে চরম দুর্ভো পোহাতে হচ্ছে। ফলে অনেকেই এখন অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এতে আরিচা বাজারের সবজির আমদানি কমে গিয়ে এবং দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।এমতাবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন আরিচা বন্দর হাট-বাজার কেন্দ্রিক ব্যাবসায়ীরা।

গরু ব্যবসায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, মো. কুদ্দুস ও মো. রশিদ শেখ বলেন, চর পড়ে নদী অনেক দুরে সরে  যাওয়াতে গরু নিয়ে হাটে আসা অনেক কষ্টকর।  প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে নৌকা থেকে গরু-ছাগল নামিয়ে চরের উপর দিয়ে পায়ে হেটে হাটে পোছাতে হচ্ছে। শুধু চরের কারণে ব্যাবসায়ীদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।

শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ডের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্র ও মঙ্গলবার সপ্তাহে দুই দিন গরু-ছাগলের হাট বসে আরিচা ঘাটে। প্রতি হাটে আড়াই থেকে তিন হাজার গরু-ছাগল উঠে।  প্রত্যান্ত  চরাঞ্চালের হাটবাজারসহ নদীর ওপারে  মাগুরা, ঝিনাইদা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর,  রাজবাড়ি, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে গরু নিয়ে আরিচা হাটে আসেন ব্যবসায়ীরা। চরের কারণে এসব গরু-ছাগল প্রায় ২কিলোমিটার দুরে নৌকা থেকে নামিয়ে পায়ে হেটে আরিচা হাটে যেতে হচ্ছে। এছাড়া আরিচা হাট-বাজার থেকে প্রতিবছর সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে। এবারও ৬কোটি টাকা ডাকে এ গরু-ছাগলের হাট থেকে ভ্যাট-আইটিসহ সরকারের প্রায় ৭কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। তাই ঐতিহ্যবাহী আরিচা ঘাটের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং গরু-ছাগলের হাট টিকিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্টদের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন তিনি।

আরিচা মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুর রজ্জাক বলেন, চরের কারণে এক কিলোমিটার দুরে নৌকা রেখে আড়তে যাতায়াত করতে হচ্ছে জেলে এবং মাছ ব্যবসায়ীদেরকে। রাত জেগে মাছ ধরে ভোরে দীর্ঘ পথ পায়ে হেটে চর পাড়ি দিয়ে আড়ত করা অনেক কষ্ট হচ্ছে। অনেকেই এখন মাছ নিয়ে আর আরিচা আড়তে না এসে অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করছে। এতে আরিচা মাছের আড়তে মাছের আমদানি আগের চেয়ে অনেকটা কমে গেছে বলে তিনি জানান।

কাঠ ব্যবসায়ী ও শিবালয় বন্দর বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ বলেন, আরিচা বন্দর  বাজারে ৭টি স-মিলের ৪০টি পরিবারের রুটি-রুজি হয় এখান থেকেই। প্রত্যান্ত চরাঞ্চল যেমন বাচামারা, বাঘুটিয়া, পারুলিয়া,আলোকদিয়া, চরকাটারি, দত্তকান্দি ও সিরাজগঞ্জের চৌহালিসহ বিভিন্ন এলকা থেকে ক্রেতারা আসতেন কাঠ নেওয়ার জন্য। এছাড়া পাবনার বেড়া-নাকালিয়া থেকে চাল বোঝাই নৌকা আসতো আরিচা ঘাটে। আরিচা ঘাটের কাছে  চর পড়ে নাব্যতা সংকটের  কারণে ওইসব এলাকা থেকে এখন আর ক্রেতা-বিক্রেতারা আসছেন না। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটা মন্দা। এ পরিস্থিতিতে এখন টিকে থাকা অনেকটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :