অনলাইন ডেস্ক: সুইস আল্পস পর্বতমালায় হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে বরফের মধ্যে জমে থাকা মৃতদেহগুলো বেরিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষও আবিষ্কৃত হয়েছে। বিমানটির ধ্বংসাবশেষ নিয়ে তদন্ত চলছে। বিমানটি ৫০ বছরেরও আগে বিধ্বস্ত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাগাজিন নিউজউইকের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
ছোট বিমানের ধ্বংসাবশেষটি পাইপার চেরোকি আলেশ হিমবাহে পাওয়া গেছে। পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯৬৮ সালের ৩০ জুনের কাছাকাছি সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল। বিমান এবং হিমবাহে এর উপাদানগুলির সন্ধান সম্পর্কে তথ্য বিমান বাহিনী সুইস সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন সার্ভিসকে (এসইএসই) দেওয়া হয়েছে।
জুরিখের হিমবাহবিদ ড্যানিয়েল ফারিনোটি নিউজউইককে বলেছেন, কয়েক বছর থেকে শুরু করে কয়েক দশক আগের জমা হওয়া সব কিছু হিমবাহ সংরক্ষণ করে। এটি গাছপালা এবং প্রাণীর দেহাবশেশ, পর্বতারোহীদের ফেলে যাওয়া জিনিসপত্র এবং আবর্জনা থেকে সব কিছুই বরফের মধ্যে জমে থাকে।
৫৫ বছর বয়সী লুক লেচানোইন জারম্যাটের কাছে স্টকজি হিমবাহে একটি দেহ আবিষ্কার করেন। তিনি ভেবেছিলেন মানুষের হয়ত সাহায্যের প্রয়োজন কিন্তু কাছে গিয়ে দেখলেন এটি আসলে একটি সংরক্ষিত দেহ। তিনি সুইজারল্যান্ড টাইমসকে বলেন, ‘আমরা জানি না এই ব্যক্তি কতদিন ধরে সেখানে ছিলেন। তবে তার পোশাক ছিল নিয়ন রঙের এবং ৮০ দশকের দশকের স্টাইলের। দেহটি ছিল মমির মত তবে সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।’
কয়েক সপ্তাহ পরে চেসজেন হিমবাহে, মানুষের কঙ্কাল একটি পুরানো অব্যবহৃত পথের কাছে পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে তিনি পর্বতারোহী ছিলেন। ব্রিটানিয়া হাটের ওয়ার্ডেন দারিও অ্যান্ডেনম্যাটেন বলেছেন, হাড়ের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, ১৯৭০ বা ১৯৮০ এর দশকে ব্যক্তিটি মারা যান। এখনও মৃতদেহের পরিচয় পাওয়া যায় নি।
গত দশক থেকে গড়ে সুইস হিমবাহগুলি প্রতি বছর তাদের বরফের পরিমাণের প্রায় ২ শতাংশ হারাচ্ছে। বিশেষজ্ঞ্ররা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই মূলত হিমবাহ গুলি গলে যাচ্ছে।গত শতাব্দীতে, আল্পস পর্বতে প্রায় ৩০০ জন মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই সম্ভবত মারা গেছেন।
যেহেতু গ্রীষ্মকালে হিমবাহ গলে যায় তাই বরফ থেকে আরও বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যেতে পারে। স্থানীয় পুলিশ নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করে তাদের কাছে তথ্য পাঠানোর জন্য।
Leave a Reply