1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

শিবালয়ে অব্যাহত অভিযানের মধ্যেও চলছে মা ইলিশ নিধন

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২
  • ১০১ বার পড়েছেন

শাহজাহান বিশ্বাস: মানিকগঞ্জের শিবালয়ের পদ্মা-যমুনায় একদিকে চলছে প্রশাসনের অব্যাহত অভিযান। অপরদিকে চলছে মা ইলিশ নিধন। জাতীয় মাছ ইলিশের প্রধান প্রজনন এ মওসুমে সরকারীভাবে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন মা’ ইলিশ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তুু তা উপেক্ষা করে  কিছু অসাধু মৌসুমী জেলেরা পদ্মা-যমুনা নদীতে জাল ফেলে ইলিশ মাছ ধরছে এবং বিক্রি করছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এতে  ইলিশের বংশ বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন অনেকেই।

জানা গেছে, চরাঞ্চল ও এলাকার সৌখিন ও মৌসুমী চোরা মৎস শিকারীরা বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মৎস্য  বিভাগ ইলিশ মাছ নিধন বন্ধে সোচ্চার হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না তাদেরকে। এছাড়া স্থানীয় কিছু সোর্সের কারণে মৎস্য শিকারীরা আগেই খবর পেয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের বিশেষ অভিযানের। এ সুযোগে মৎস্য শিকারী ও ক্রেতা-বিক্রেতারা আরো সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইলিশ মাছ নিধন বন্ধে হিমশিম খাচ্ছেন।

শিবালয় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জসীম জানান, গত রবিবার পর্যন্ত শিবালয়ে ৪১ টি অভিযান চালিয়ে ১৬ টি  মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৪ জন জেলেকে জেল দেওয়া হয়েছে। একই সাথে ৩৬ লক্ষ টাকা সমমূল্যের ১.৭৫ মিটার জাল জব্দ করে ধ্বংশ করা হয়েছে। জেলেদের নিকট হতে ২৭২ কেজি ইলিশ উদ্ধার করে এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।  ৫০ জন জেলের নিকট হতে ১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান  তিনি।

জেলা মৎস্য অফিসার সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, জেলায় গত ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১৫৫ টি অভিযান পরিচালনা করে ৩৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৯৯ লক্ষ ৬ শত ৫০ টাকা মূল্যের কারেন্ট জাল ধ্বংশ করা হয়েছে। একই সাথে ৪১১ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা জরিমানা করে ১৪ জন জেলেকে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে।

বিগত দিনের অভিযানে জব্দকৃত জাল-নৌকা ধ্বংস করাসহ জব্দকৃত ইলিশ স্থানীয় দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। শিবালয়, দৌলতপুর ও হরিরামপুর উপজেলার প্রায় ৬০ কিলোমিটার বিস্তৃত পদ্মা-যমুনা বক্ষে প্রত্যহ বিপুল সংখ্যক ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে দিনে ও রাতে অবৈধ কারেন্ট জালের মাধ্যমে নির্বিঘ্নে ইলিশ শিকারের উৎসব চলছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এই কাজে হালদার সম্প্রদায়ের প্রকৃত জেলেরা নিরব থাকলেও মৌসুমী জেলেরা তৎপর রয়েছে। ধৃত ইলিশ ক্রয়ে আগ্রহী এক শ্রেণির লোকজন নদী পাড়ে নিয়মিত ভিড় জমাচ্ছেন। শিবালয়ের আলোকদিয়া চরে প্রতি কেজি ইলিশ আট’শ থেকে এক হাজার টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই অঞ্চলে ইলিশ শিকারী ও সুবিধা ভোগীদের মধ্যে যেন উৎসব চলছে।

শিবালয়ের তেওতার আলোকদিয়া গ্রামের চাঁন মিয়া বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে নদীতে একদিকে চলছে ইলিশ নিধন। অপরদিকে চলছে প্রশাসনের অভিযান।

তিনি আরো বলেন নাম মাত্র এ অভিযানে জাল-নৌকা জব্দ করা হলেও শিকারীরা থাকছে ধরা-ছোয়ার বাইরে। এতে অন্যান্যরাও ইলিশ শিকারে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

আরোও একটি সুত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, গত প্রজনন মৌসুমে মা’ইলিশ রক্ষায় শিবালয় উপজেলার পদ্মা-যমুনার অংশে প্রশাসনের অভিযানে আড়াই’শর অধিক জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও লাখ-লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এবার নদীতে একই অবস্থা চললেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভুমিকা রহস্যজনক বলে অনেকেই মনে করছেন।

এব্যাপারে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, প্রতিদিনই আমাদের অফিসাররা নদীতে অভিযান পরিচালনা করছে। অসাধু জেলেদেরকে ধরছে, জেল-জরিমানা করছে। তারপরও চোরা মৎস্য শিকারীরা থেমে নেই, চুরি করে মাছ শিকার করছে। সবসময়তো নদীতে বসে থাকা সম্ভব নয়। এরপরও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

 

 

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :