1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৮৯ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। যার চারপাশে সাগর আর আকাশের নীল মিলেমিশে একাকার। খোলামেলা বালুকাময় সমুদ্রসৈকত আর সমুদ্রের বিরামহীন গর্জন যেন নীল রঙের রাজ্যে পরিণত করেছে সেন্টমার্টিন। প্রকৃতি দুই হাত মেলে যেন সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে এখানে। দক্ষিণের স্বর্গ নামে পরিচিত এই দ্বীপে সারি সারি নারিকেল গাছ, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলা গাঙচিল। সৈকতে বসে স্নিগ্ধ বাতাসে গা জুড়িয়ে নেওয়া, কেয়া বন আর সাগরলতার মায়াময় স্নিগ্ধতায় মন জুড়িয়ে যায় নিমিষেই।

দেশের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পরম আরাধ্য একটি পর্যটন গন্তব্য হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। সেন্টমার্টিনের প্রতিবেশ ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু হলো প্রবাল। সাগরের ছোট-বড়, মেরুদণ্ডী-অমেরুদণ্ডী অধিকাংশ প্রাণী ও উদ্ভিদকে আগলে রাখে এসব প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ। ভাটায় জেগে ওঠা নান্দনিক প্রবাল প্রাচীর, উড়ে চলা গাঙচিল, পশ্চিম বিচ থেকে দেখা সূর্যাস্তের অপরূপ সৌন্দর্য, স্নিগ্ধ বাতাস আর অগভীর সাগরের স্বচ্ছ নীল জলে দলবেঁধে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার লোভে প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে লাখ লাখ পর্যটক পদচিহ্ন আঁকেন এ দ্বীপে। বাংলাদেশের মানচিত্রের সর্ব দক্ষিণের শেষ স্থান সেন্টমার্টিন দ্বীপ। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য অবলোকন ও ভ্রমণের একটি আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে গড়ে ওঠা ছোট দ্বীপ এটি।

স্থানীয়রা এটিকে ‘নারিকেল জিনজিরা’ নামে চেনেন। সেন্টমার্টিন দ্বীপের আয়তন প্রায় ৮ বর্গকিলোমিটার ও উত্তর-দক্ষিণে লম্বা। এ দ্বীপের তিন দিকের ভিত শিলা যা জোয়ারের সময় তলিয়ে যায় এবং ভাটার সময় জেগে ওঠে। এগুলোকে ধরলে এর আয়তন হবে প্রায় ১০-১৫ বর্গকিলোমিটার। এ দ্বীপটি উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় ৫ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার লম্বা। দ্বীপের প্রস্থ কোথাও ৭০০ মিটার আবার কোথাও ২০০ মিটার।

দ্বীপের বালির মধ্যে দেখা যায় গোলাকার পাতার আইপোমিয়া লতা। প্রতিকূল পরিবেশে প্রথম প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টিকারী এই উদ্ভিদে ফানেল আকৃতির সাদা-বেগুনি ফুল দেখা যায়। অন্যান্য উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে-কেয়া, শ্যাওড়া, সাগরলতা, বাইন গাছ ইত্যাদি। বৃক্ষজাতীয় গাছের মধ্যে অন্যতম হলো নারিকেল গাছ। আরও রয়েছে-শিমুল, আম, সুপারি, বাবলা, কড়ই ইত্যাদি। সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঐতিহ্যবাহী উদ্ভিদ হলো কেয়া গাছ। দ্বীপে কেওড়া বন ছাড়া প্রাকৃতিক বন বলতে যা বোঝায় তা নেই। ভাটার সময় পাথুরে প্রবালের মাঝে প্রাণের সাড়া দেয় কেওড়া গাছ। তবে দ্বীপের দক্ষিণ দিকে প্রচুর পরিমাণে কেওড়ার ঝোপঝাঁড়সহ কিছু ম্যানগ্রোভ গাছও দেখা যায়। সৈকতের প্রান্তজুড়ে আরও দেখা যায় বেশ কিছু ঝাউ গাছ।

দ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। এখানে জীবন-জীবিকা মাছ ধরা, শুটকি প্রক্রিয়াকরণ, সামান্য চাষাবাদ ও পর্যটন সেবার ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে (অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত) দ্বীপটি কর্মচঞ্চল থাকে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ নিতান্ত সহজ-সরল, তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।

কীভাবে যাবেন : বাংলাদেশের যেকোনো স্থান থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য প্রথমে যেতে হবে কক্সবাজার। তারপর কক্সবাজার থেকে লোকাল বাস, সিএনজি বা মাইক্রোবাস/জিপ ভাড়া করে টেকনাফ যেতে হবে। পর্যটন মৌসুমে (অক্টোবর থেকে মার্চ মাস) টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাত্রী পারাপারে জাহাজ চালু থাকে। এ ছাড়াও এই সমুদ্র রুটে বেশকিছু ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করে।

কোথায় থাকবেন : সেন্টমার্টিনে থাকার জন্য বেশ উন্নতমানের কয়েকটি হোটেল ও কটেজ রয়েছে। অনেক বাড়িতেও আছে পর্যটকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা। এ ছাড়া তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। নিজের সাধ্যমতো যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই ভাড়া আগে মিটিয়ে নিতে হবে।

খাবারের ব্যবস্থা : পর্যটকদের খাবারের জন্য রয়েছে এখানে বেশ কিছু হোটেল ও রেস্তোরাঁ। সন্ধ্যাবেলা হোটেল-রেস্তোরাঁর সামনে পথের দুই ধারে, সৈকতের পাশে নানারকম মাছ, কাঁকড়া, অক্টোপাস সাজিয়ে বসে দোকানিরা। ভাজা মাছের সুগন্ধে চারদিক ম-ম করে। রাতে প্রায় সব হোটেলের আঙিনায় চলে মাছের বারবিকিউ উৎসব।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :