অনলাইন ডেস্ক: গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার মাঠপর্যায়ে শুরু হয়েছে বোরো ধান চাষাবাদের কাজ। ইতিমধ্যে সেচযন্ত্র চালু করে কাদা মাটিতে সার দিয়ে চারা রোপণ শুরু করেছেন বোরো চাষিরা। তবে এ বছর চাষাবাদে বাড়তি খরচে নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের। একদিকে অর্থ সংকট অন্যদিকে ধান চাষে খরচের ঊর্ধ্বগতির কারণে চাষিদের কপালে পড়ছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় চাষিদের কাক্সিক্ষত বোরো আবাদের চিত্র। অন্যান্য বছর বোরো চাষের এই সময়টায় চাষিদের মুখে হাসি দেখা গেলেও এ বছর তাদের মুখ মলিন। হাল, সার, বীজ, বিদ্যুৎ, ডিজেল ও শ্রমিকসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর বোরো আবাদের অতিরিক্ত খরচে চরম হিমশিম খাচ্ছেন তারা। চাষাবাদের খরচ জোগাতে অনেকেই ঋণের ফাঁদে পড়ছেন। সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন দরিদ্র চাষিরা।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম বসনিয়া বলেন, বোরো আবাদে কৃষকদের লাভবান করতে ইতোমধ্যে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু জায়গায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা বোরো ধান ঘরে তুলে লাভবান হবেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রহুল আমিন বলেন, সেচকাজে কৃষকের কিছুটা খরচ বাড়বে। তবে তাদের লোকসান হবে না। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে ফলন বাড়াতে এবং খরচ কমাতে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
স্থানীয় চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে বীজতলা তৈরির পর কুয়াশায় কিছু চারা নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। বর্তমানে প্রতি বস্তা ইউরিয়া ও টিএসপি সার ১ হাজার ৩৫০ টাকা, এমওপি এক হাজার টাকা, ডিএপি ১ হাজার ৫০ টাকা এবং দস্তা প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর আগে প্রতি কেজি হাইব্রিড জাতের বীজ ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকায় কিনেছেন চাষিরা। এছাড়া রোপণের সময় শ্রমিকের মজুরি ৫শ টাকা দিতে হচ্ছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের সময় শ্রমিক সংকট দেখা দিলে তাদের মজুরি গুনতে হবে ৬-৭শ টাকা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৪ হাজার ৪০৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষিদের জমিতে সেচ দিতে বিদ্যুৎচালিত গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, ডিজেলচালিত শ্যালোমেশিন এবং সৌর বিদুৎচালিত সেচযন্ত্র চালু রয়েছে। এসব যন্ত্র দিয়ে বোরো চাষিদের সেচের চাহিদা মেটানো হচ্ছে।
কৃষক আব্দুস ছালাম জানান, গতবার ১ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করেছিলেন। এতে তার সর্বমোট খরচ হয়েছিল হেক্টর প্রতি ৯৭ হাজার টাকার মতো। এ বছর লক্ষাধিক টাকা খরচ হতে পারে। চলতি মৌসুমে বোরো ধান আবাদের বাড়তি খরচ নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, গত বোরো মৌসুমে চাষিদের কাছ থেকে বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৫শ টাকা নেওয়া হয়েছে। এ বছর কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
Leave a Reply