নিজস্ব প্রতিবেদক: পেঁয়াজের বাজারে আগুণ লাগায় (দাম বৃদ্ধির কারণে) মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির ঘটনা ঘটছে।গত এক সপ্তাহে অনন্ত ১৩ বিঘা জমির পিঁয়াজ চুরি হয়েছে বলে ভুক্তভোগি কৃষকরা জানিয়েছেন।ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির আশংকায় চরম আতংক বিরাজ করছে হরিরামপুরের পেঁয়াজ চাষীদের মাঝে। এমতাবস্থায় কৃষকরা রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহাড়া দিয়ে রাখছেন আবার অনেকেই অপরিপক্ক পিঁয়াজ উঠিয়ে বিক্রি করছেন।এতে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় পিঁয়াজ চাষীরা জানান, উপজেলার বাল্লা, চালা, গালা, গোপীনাথপুর, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে আগাম মুড়ি কাটা পেঁয়াজের চাষ করে থাকেন কৃষকরা।পেঁয়াজ চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন এবার অনেকটা ভালই হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু চুরির ভয়ে অপরিপক্ক পেঁয়াজ উঠিয়েই বিক্রি করতে হচ্ছে।পরিপক্ক হতে আরো ১৫-৩০দিন সময় লাগবে।এরপর পেঁয়াজ তোলার উপযোগী হয়ে উঠবে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম ভাল হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে । চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন এ এলাকার কৃষকরা। ক্ষেতের পাশে ছোট ছোট অস্থায়ী টং ঘরের মতো ঝুপড়ি ঘর তুলে সকালের সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত পেঁয়াজ ক্ষেতের ঝুপড়িতেই রাত কাটান তারা।
বাহিরচর এলাকার কৃষক লাল খান এর ছেলে আব্দুল মালেক জানান, ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন তিনি । সার কিটনাশকের দাম বাড়ায় পেয়াজ আবাদে এবার খরচ বেশি। তবে পিঁয়াজের দাম ভাল থাকায় লাভবান হতাম এবার।কিন্তু ৫ বিঘা জমির মধ্যে ৩ বিঘা জমির পেঁয়াজ চুরি হয়ে গেছে। তোলার উপযোগী না হলেও চুরির ভয়ে অপরিপক্ক অবস্থায় পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করছে বলে তিনি জানান।
একই এলাকার কৃষক মঙ্গল জানান, কয়েকদিন আগে তার ক্ষেতের পাশের জমি থেকে এক কৃষকের অনেক পেঁয়াজ চুরি হয়েছে । এরপর থেকেই তিনি রাত জেগে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন। এখন পেঁয়াজের আকার বড় হলেও তোলার উপযোগী হয়নি। চোরের ভয়ে এখনই পেঁয়াজ তোলা হচ্ছে । সঠিক সময়ে তুলতে পারলে ৪২ বিঘা জমিতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মন পেয়াজ হতো। কিন্তু চুরির ভয়ে আগে ওঠানোর কারনে ৩৫ থেকে ৪০ মন পেঁয়াজ হবে।
কৃষক মো. হারুনুর রশিদ জানান, এবার ৪০বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। কয়েকদিন আগে ১০বিঘা জমির পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে চুরি গেছে। যে কারণে অপরিপক্ক পেঁয়াজ তোলে বিক্রি করছি। এতে উৎপাদন কম হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বলেন, আমার বিভিন্ন ওয়ার্ড সদস্যরা পেঁয়াজ চুরি হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে পাহারা দিয়ে পেঁয়ার রক্ষা বিষয়টি চলমান রয়েছে। এরপর আর চুরি হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, এ অঞ্চলের জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলায় বাল্লা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ বছর উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কন্দ (মুড়ি কাটা) পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে বলে তিনি জানা।
হরিরামপুর থানা ওসি শাহ্ নুর এ আলম জানান, পিঁয়াজ চুরির ব্যাপারে এ পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি।অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানা।
Leave a Reply