1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন

 ‘এই চল্লিশ টাকা দিয়া কী হবে’ বাড়িওলি ম্যালা খরচ নিয়া যাবার কইছে!

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৮৮ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: ‘ভ্যান খান নষ্ট আছিলো সকাল থাকি,  ঠিক ঠাক করিয়া চল্লিশ টাকা কামাই করছু। এলা বাকি সময়টা আরেকনা কামাই হবার পারে। রমজান মাস চলেছে, বাড়িওলি ম্যালা খরচ নিয়া যাবার কইছে। চাল কেনার লাগিবে, ফির ইফতার কেনার লাগিবে। এই চল্লিশ টাকা দিয়া কী হবে। জিনিসপত্রের যে দাম বাড়িছে, আইজকা সেহেরি খামো কী করি সেটাই চিন্তা করেছো। বেটা আছে, বেটাতো দেখে না বউ নিয়া আলাদা খায়। মুই যা কামাই করো তা দিয়া বাড়িওলি আর একটা মোর ছোট বেটি আছে তিন জন মিলি খাই।’

শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নীলফামারীর ডোমার পৌর শহরের কাঁচা বাজার এলাকায় গণমাধ্যমের সাথে কথাগুলো বলছিলেন ভ্যানচালক হুসেন আলী। তিনি ডোমার উপজেলার চিকনমাটি খামাত পাড়ার বাসিন্দা। হুসেন আলীর পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে তিন মেয়ে ও ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের পর থেকে ছেলে বউকে নিয়ে আলাদা সংসার করছেন। ছোট মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভ্যান চালিয়ে যা আয় করেন তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চলে হুসেন আলীর।

হুসেন আলী বলেন, ‘মাইনষির জায়গাত বাড়ি করি আছি। আবাদ করার মতো কোনো জমি নাই। সরকারি সুযোগ-সুবিধাও সেরকম পাও নাই, বয়স্ক ভাতার জন্য গেছি। কার্ড দিখি কয় যে বয়স হয় নাই।’ শুধু হুসেন আলী নয়, তার মতো রমজানে মাসে উপার্জন কমে যাওয়ায় সেহরি ও ইফতার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা।

জহুরুল নামে আরেক ভ্যানচালক বলেন, গরু-ছাগলের মাংসের সঙ্গে দেশি ও সোনালি মুরগির মাংস খাওয়া বাদ দিয়েছি অনেক আগেই। ব্রয়লার মুরগির মাংস ছিল আমাদের গরিবের মাংস। ১৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে আগে ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনতাম। সরকার রমজান উপলক্ষ্যে ১৯৫ টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় কিছুটা খুশি হয়েছিলাম। মনে করেছিলাম সন্তানদের ব্রয়লারের মাংস হলেও সেহরিতে খাওয়াতে পারবো। তবে বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগি এখন আর গরিব মানুষের মাংস নাই।

তিনি বলেন, সামর্থ্য না থাকায় ছোট ছোট রিটা মাছ কিনে সেহরি করেছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক শত টাকার ভাড়াও মারতে পারি নাই। ইফতারের খাবারের টাকাও উপার্জন হয় নাই। দিনমজুর আমিনার রহমান বলেন, রমজান মাস আসলেই আমাদের দেশে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। দিনে তিন থেকে চার শত টাকা আয় হয়। এই টাকা দিয়ে কোনো রকম চাল, ডাল, আলু কেনা যায়। মাংস কেনার কথা কল্পনাতেও আনি না।

বাজার ঘুরে জানা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ২৬০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৬০০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৫০ ৪০০, গরুর মাংস ৬৫০ ও খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম ৫০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

ডোমার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম আহমেদ বলেন, সদর ইউনিয়নে কোনো খাসজমি না থাকায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে যে আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো হচ্ছে সেখানে ১৯টি পরিবারের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হুসেন আলী যদি সেখানে থাকতে ইচ্ছুক হন সেখানে ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে।

জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং চলছে। কেউ বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় তাদের আনা হবে।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :