1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন

আশ্রায়ণ প্রকল্প: বদলে গেছে অসহায়, দরিদ্র মানুষের জীবনধারা

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ২০ মার্চ, ২০২৩
  • ৯৪ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিব বর্ষে দেশের অসহায়, দরিদ্র ও ভূমিহীনদের দিয়েছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ মাধ্যমে গৃহ পুনর্বাসনের সুবিধা। এর ধারাবাহিকতায় এ উপজেলায় তিন ধাপে ৬৩০ জন ভূমিহীন পরিবার পেয়েছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। এতে বদলে গেছে ভূমিহীনদের জীবনধারা।

আগামী ২২ মার্চ নির্মাণাধীন আরও ২১৪ টি ঘরের মধ্যে ইতিমধ্যে সম্পন্ন হওয়া চতুর্থ ধাপে ৭৪ টি পরিবার পাবেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার দক্ষিণে মাত্র পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলাটি। ভৌগোলিক অবস্থান ও আয়তনে দেশের ছোট কয়েকটি উপজেলার মধ্যে একটি। মৎস্য, কৃষি, আর পর্যটনের অপর সম্ভাবনাময় এ উপজেলাটি নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা।

লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষই দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের। যাদের বেশিরভাগ মানুষের প্রধান পেশা কৃষিকাজ, মৎস্য আহরন ও দিনমজুর। এদের মধ্যে নদী ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারা, হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর অনেকেরই নেই মাথা গোজার ঠাঁই।

এর মধ্যে পাড়েরহাট ইউনিয়নে ৪৫টি, পত্তাশী ইউনিয়নে ১৪ টি এবং চন্ডিপুর ইউনিয়নে ১৫ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দুই শতক খাস জমির উপর নির্মিত হওয়া সামনে বারান্দা, রান্নাঘর,স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা সহ দুই রুম বিশিষ্ট রঙিন টিনের ছাউনিতে ইটের দেয়ালে ঘেরা আধাপাকা বাড়ি ঐদিন উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জমির মালিকানা সহ ঘরগুলোর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন ও পিরোজপুর জেলা সহ এ উপজেলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে  ‘ক’ শ্রেণীর ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন।

এই উপলক্ষে গতকাল ১৮ মার্চ উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করেন ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সময়ের সাথে বদলেছে আশ্রায়ণে ঘর পাওয়া ছিন্নমূল মানুষের জীবন। ভিটে-মাটিহীন ছিন্নমূল মানুষগুলো এখন বসবাস করছে রঙিন টিন আর পাকা দেয়ালের আধাপাকা বাড়িতে। সেই বাড়িতেই ব্যক্তি উদ্যোগে করছেন শাক-সবজির আবাদ। কেউবা করছে হাঁস-মুরগি পালন। আবার কেউ কেউ হস্ত শিল্প, সেলাই কাজসহ নানা কর্মমূখি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সন্তানদের পাঠাচ্ছেন স্কুলে। বসতির দুশ্চিন্তা ছেড়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজ করে এগিয়ে নিচ্ছে সংসার। পরিবারে এসেছে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। বসবাসের জন্য সরকারের দেয়া এই ঘর পেয়ে খুশি আশ্রয়হীন মানুষগুলো। লাল সবুজের রঙিন টিনের আধাপাকা ঘর পেয়ে এখন রঙিন স্বপ্ন বুনছেন তারা। চলছে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা।

পূনর্বাসিত পরিবারগুলোর জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে এবং প্রকল্পের জায়গায় নিরাপদ পানির জন্য নলকূপ স্থাপন এবং বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য আশ্রয়ণ গুলোতে রেইন ওয়াটার হারভেস্ট প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার লিটারের ধারনক্ষম একটি করে পানির ট্যাংকি দেয়া হয়েছে।

আশ্রয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সহ সব ধরনের সহায়তা ও পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ। এছাড়া আশ্রয়নের বাসিন্দারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাচ্ছেন সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা।

এই মানুষগুলোর একসময় ছিলোনা নিজস্ব কোন স্থায়ী ঠিকানা। খাস জমি কিংবা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে ভাঙ্গা ঘরে আবার কেউ স্বল্প টাকার ভাড়া বাসায় থেকে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ উপহার বাসস্থানসহ নানাবিধ সুবিধার ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে তাদের জীবনমান। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের এই ঘর অনাবিল হাসি ফুটিয়েছে তাদের মুখে। নিজের একটি পাকা-পরিচ্ছন্ন ঘরে থাকার আজন্ম লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

সরেজমিনে এসব ঘরে বাস করা মানুষদের দেখা যায়, মানবেতর জীবনমান থেকে মুক্তি পেয়ে এখন তারা সুখ- স্বাচ্ছন্দে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন যাবন করছেন।

হোগলাবুনিয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পে মাথা গোজার ঠাঁই হওয়া ভূমিহীন শোভারানী, ভিক্ষুক আলতাফ হোসেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী জবেদা বেগম ভিক্ষুক শামীম, কলারন আশ্রায়ন প্রকল্পের বৃদ্ধ সালাম গাজী, চাড়াখালী গুচ্ছগ্রামের ভ্যান চালক স্বপন হাওলাদার, দেবীপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাওয়া ভূমিহীন ঝুমুর বেগম, পশ্চিম বালিপাড়ার সালমা, কলারনের জলিল জোমাদ্দার, কচা নদীর পাড়ে পারেরহাটের আশ্রায়ণ প্রকল্পের শাহিনুর বেগম, বিধবা শেফালী বেগমের মত অনেকের চোখে মুখে এখন খুশির ঝিলিক।

প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তারা পেয়েছেন আপন নিবাস। মাস ছয়েক আগেও ভাবেননি এমন একটা সুন্দর মাথা গোজার ঠাঁই হবে তাদের। যেখানে হবে তাদের একটা স্থায়ী ঠিকানা। তাদের কাছে সত্যিই এটা স্বপ্নের মত। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই তাদের। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে এসব অসহায় আশ্রয়হীন মানুষদের ঠিকানা গড়ে দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করছেন সবাই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, কাজের গুনগত মান ঠিক রেখে এ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর গুলো আমরা সঠিকভাবে নির্মান ও উপকারভোগীদের সার্বিক সুযোগ সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই দিন রাত পরিশ্রম করেছি।

ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুৎফুন্নেসা খানম বলেন, ‘দেশের একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবেনা’ মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণা বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ইন্দুরকানী উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার ৫ ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ৬৩০টি পরিবারের জন্য রঙিন পাকা ঘর নির্মাণ শেষে উপকার ভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী ২২ মার্চ আরও ৭৪টি ভূমিহীন পরিবারকে আমরা জমি সহ ঘর হস্তান্তর করব। এছাড়া এ উপজেলায় ১৪০টি ঘর নির্মাণাধীন অবস্থায় রয়েছে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে ঘর গুলো হস্তান্তর করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. এম মতিউর রহমান বলেন, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগ সরকরের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল দেশের একটি পরিবারও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবেনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভুমিহীন ছিন্নমূল পরিবার গুলোর মাথা গুজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। এই প্রকল্প বর্তমান আ.লীগ সরকারের একটি রোল মডেল কারণ এভাবে বিশ্বের আর কোন দেশে আশ্রয়হীনদের জন্য সরকারিভাবে নিরাপদ ছাদ তৈরির ব্যবস্থা হয়নি।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :