শাহজাহান বিশ্বাস: মানিকগঞ্জের শিবালয়ে সরিষার হুলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ‘সোনার বাংলার’ দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। সত্যি দেখতে কতই না সুন্দর! এটি একদিকে দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি হুলুদ ফুলে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন কৃষকরা। ঋতুচক্রের পরিক্রমায় শীতকালে অপরূপ এই সোনার বাংলার যে দিকে তাকানো যায়, সে দিকেই শুধু চোখে পড়ে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠগুলো যেন বিশাল আকৃতির হুলুদ চাদর বিছিয়ে বসে আছে। বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দৃষ্টিজুড়ে হলুদের অপার সৌন্দর্যের সমারোহ। ভোরে সরিষা ক্ষেতের ওপর ভেসে থাকা কুয়াশা সকালবেলার প্রকৃতি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। সরিষার ভালো ফলন নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
সোমবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,সরিষার সবুজ গাছের হুলুদ ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দয্যের দৃশ্য। দেখে যেন মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ বরণ মেখে। মৌমাছির গুন গুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত।ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠ জুড়ে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিভিন্ন বয়সের বিনোদন প্রেমিরা।
শিবালয় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সরিষা চাষে গত বছর ২০২৩ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬,৫৮৩ হেক্টর,চাষ হয়েছিল ৬,৮৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন হয় ১০,৪৮১ মেট্রিক টন। এবছর ২০২৪ সালে ৬,৮৫০ হেক্টর লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করে আবাদ হয়েছে ৯,৯১০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার শিবালয়, তেওতা, উথলী, উলাইল, শিমুলিয়া, মহাদেবপুর ও আরোয়া এ ইউনিয়নগুলোতে সরিষার চাষ করা হয়ে, সরিষা চাষের জন্য এলাকার কৃষকরা বারি- ১৪,১৭ বারি-১৬,১৯, ৪, এবছরের প্রথম বারি-১৮ জাতের সরিষা আবাদ করেছে।
উপজেলার শিবালয় উপজেলার কৃষক আওয়াল জানান, আমি এবছর ১শ’ শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছি গতবছর থেকে এবার সরিষা বুনছি একটু বেশি ।সরিষা আবাদে খরচ অনেক কম কিন্তু দাম যদি একটু হয় তাহলে আমাদের একটু ভাল হবে। সরিষা ভাল ফলন হলে প্রতি মণ ৩ হাজার ৫শত টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করার আশা করছি।
বড় বোয়ালী এলাকার কৃষক ইয়াকুব সিকদার জানান, আমাদের সরিষা খেত খুবই ভালো হয়েছে। প্রতি বছর হালাক বৃষ্টি হয় এই বছর এখনো বৃষ্টি হয়নি যদি বৃষ্টি হয় তাহলে ক্ষেতের ক্ষতি হবে। কারণ বৃষ্টি হলে ফুল নষ্ট হয়ে যায়। যদি বৃষ্টি বাদল না হয়, তাহলে একটু লাভের মুখ দেখতে পারবো আমরা।
শিবালয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার জানান,গত বছরের তুলনায় এ বছর সবচেয়ে বেশী সরিষার আবাদ হয়েছে এবং ফলন ভাল হবে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা কোন প্রকার ক্ষয়-ক্ষতি না হলে উপজেলায় সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া সরিষা আবাদ বাড়াতে প্রণোদনা কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। কৃষক যেন ভালো ফলন পায় সেলক্ষে কৃষি বিভাগের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি এবছর বাম্পার ফলন হবে।
Leave a Reply