1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
ঘিওরে গলায় লিচুর বিচি আটকে এক ব্যাক্তির মুত্যু মানিকগঞ্জে প্রশিক্ষণের খাবার খেয়ে অসুস্থ প্রশিক্ষক ও শিক্ষকেরা সিংগাইরে হিসাবরক্ষণ অফিসের ৩ দিন ব্যাপি সেবা সপ্তাহের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত শিবালয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আ,লীগ দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে চলছে উত্তেজনা শৈশবের স্মৃতিময় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা স্কুল-কলেজের সভাপতি হতে গেলে এইচএসসি পাস লাগবে জানাযা শেষে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন নিহত পাইলট আসিম  একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাইলট আসিমের মা এখন পাগল প্রায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট জাওয়াদের মরদেহ মানিকগঞ্জে পৌঁছেছে মানিকগঞ্জে মরিচের উৎপাদন হ্রাস লোকসানে চাষিরা

শীতের দাপট বেড়েই চলছে

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৭১ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে শীতের তীব্রতা ছড়িয়েছে রাজধানীসহ সারাদেশে। কনকনে হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত। মাঝে-মধ্যে সূর্যের দেখা পাওয়া গেলেও  শীতের দাপট কমেনি। আবার কিছু কিছু এলাকায় দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিলছে না। বরং মাঝরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে কুয়াশা।  দেশের অধিকাংশ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবস্থান করছে। এর মধ্যে শুক্রবার মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রিতে নেমেছিল পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায়।

ফলে হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ। একইসঙ্গে ফলে শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ ভীষণ বিপাকে পড়েছে। কিছুক্ষণ কাজ করার পর অসাড় হয়ে আসছে তাদের হাত-পা। এদিকে শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন বয়স্ক, শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। মানুষের পাশাপাশি ভীষণ কষ্টে রয়েছে গবাদিপশুও।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে রাতের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এতে শৈত্যপ্রবাহ আরও বিস্তৃত হতে পারে। একইসঙ্গে ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, নৌপরিবহন ও সড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আংশিক মেঘলা আকাশ থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে অন্যান্য এলাকায়।

আবহাওয়ার অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এটিই চলতি মৌসুমের সবচেয়ে কম সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। অন্যদিকে, রংপুর জেলায় ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৯ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি, নীলফামারীর ডিমলায় ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি, গাইবান্ধায় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, লালমনিরহাটে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তবে শুক্রবার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অঅর গত বুধবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আরো অব্যাহত থাকতে পারে। শনিবার সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। রোববার সারাদেশে রাতের সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ফলে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এমনটা দুই দিন থাকার পর তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করবে। আর ৩১ জানুয়ারি দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বেশ কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। ১ ও ২ ফেব্রুয়ারিও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, এ জেলায় বেড়েই চলেছে শীতের প্রকোপ। দিনে মেঘলুপ্ত সূর্যের লুকোচুরি আর রাতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শুক্রবার জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেতুঁলিয়ায় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে ঠান্ডার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানালো আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান সময়ের আলোকে জানান, সকাল ৯টায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। ঘন কুয়াশার কারণে ঠান্ডার পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেতুঁলিয়ায় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস বলে জানান তিনি।

এদিকে, হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যপ্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। দিনের বেলায় হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষ। শীতের প্রভাবে হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। যার মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

শীত বেশি অনুভূত হওয়ায় এবং শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকায় মানুষ শহরের পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে সারাদিন মানুষ ভিড় জমায়। বেচাকেনাও হয় বেশ। সন্ধ্যার পরও দোকানগুলো থেকে ক্রেতাদেরকে হাতের ও পায়ের মোজা, মাফলার, টুপি, কানটুপি জাতীয় কাপড় কিনতে দেখা যায়।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, মাঝারি শৈত্য প্রবাহ ও মাঘের শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রাম জনপদের মানুষ। শুক্রবার এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কনকনে ঠান্ডা ও শীতের দাপটে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশায় ঢেঁকে গেছে গোটা জনপদ। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না।

শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে  ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় শীত কষ্টে  পড়েছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমরসহ ১৬টি নদ-নদী তীরবর্তী চার শতাধিক চরাঞ্চলের মানুষজন।তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নীচে থাকায় জেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের ২ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের নাজিমখান এলাকার স্কুল শিক্ষক ইয়াকুব আলী বলেন, এবারে এত ঠান্ডা ও কনকনে শীত গত এক যুগের রেকর্ড ভোঙ্গ করেছে। শ্রমজীবী মানুষ জন তাদের কাজে যেতে পারছে না। ভরা মৌসুমেও কৃষকরা মাঠে কাজ করতে পারছে না। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা স্কুল -কলেজে মেতে পারছে না। কি ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

নীলারাম স্কুল এন্ড কলেজের ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সুরাইয়া বেগম বলেন, কনকনে ঠান্ডা ঘর থেকে বের হতে পারছিনা। আর কতদিন যে শীত থাকবে জানি না। লেখা পড়ায় মনোযোগ হারিয়ে ফেলছি।

জেলা সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের মকবুল হোসেন বলেন , ২২ দিন থেকে ঠান্ডা, কাজ কামাই করতে পারছি না। আমরা যারা দিন করে দিন খাই, আমারগুলার সমস্যা হইছে। ওই এলাকার মোক্তার আলী নামের এক শ্রমিক বলেন, সকালে যখন বোরো ধানের বীজতলায় কাজ করি, তখন হাত পা বরফ হয়ে যায়। দীর্ঘস্হায়ী ঠান্ডায় অবস্থা খারাপ। কামকাজ নেই, হাতেও টাকা নেই। তাই ধার কর্জো করে চলতে হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, জানুয়ারি মাস জুড়েই তাপমাত্রা এরকম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ মাসের ২৮ তারিখের পর তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

রংপুর প্রতিনিধি জানান, রংপুর অঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীতের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশা অব্যাহত রয়েছে। ফলে অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাত থেকে কুয়াশা শুরু হলেও অব্যাহত রয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের প্রধান সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, রংপুর বিভাগে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। নেমে যেতে পারে ২ ডিগ্রিতে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশাও অব্যাহত থাকতে পারে। সুত্র:সময়ের আলো

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :