অনলাইন ডেস্ক: সম্প্রতি আবিষ্কার হয়েছে একটি সবুজ ধূমকেতু। এই ধূমকেতু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে এবং একবার পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে ৫০ হাজার বছর। নিজের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর পাশ দিয়ে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অতিক্রম করেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর আগে এই ধূমকেতু শেষবার যখন পৃথিবীর এত কাছে এসেছিল তখন পৃথিবীতে নিয়ানডার্থাল মানুষ বসবাস করত।
প্ল্যানেটারি সোসাইটির বক্তব্য অনুযায়ী, সি/২০২২(জেডটিএফ) নামে পরিচিত ধূমকেতুটির সূর্যের চারপাশে একটি কক্ষপথ রয়েছে, যা সৌরজগতের বাইরের প্রান্তের মধ্য দিয়ে যায়। এই কারণেই এটি পৃথিবী দ্বারা আবার দোলানোর জন্য এত দীর্ঘ পথ এবং দীর্ঘ সময় নিয়েছে। আর্থস্কাই অনুসারে বরফের মহাকাশীয় বস্তুটি ৩ ফেব্রুয়ারি প্রায় ২৬ মিলিয়ন মাইল থেকে ২৭ মিলিয়ন মাইল দূরে পৃথিবৃনিকটতম অভিগমনের সময়ও ধূমকেতুটি পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বের ১০০ গুণেরও বেশি দূরে থাকে।
ধূমকেতু পৃথিবীর কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে পর্যবেক্ষকরা এটিকে উজ্জ্বল নক্ষত্র পোলারিসের কাছে একটি ক্ষীণ সবুজ ধোঁয়া হিসেবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হন, যাকে উত্তর তারকাও বলা হয়। ধূমকেতুগুলো কক্ষপথে তাদের বর্তমান অবস্থান এবং রাসায়নিক সংমিশ্রণের কারণে আলোর বিভিন্ন রং প্রতিফলিত করে। ভোরের আকাশ, উত্তর গোলার্ধের লোকদের জন্য মধ্যরাতের পরে চাঁদ অস্তমিত হয়ে গেলে ধূমকেতু দেখার জন্য সর্বোত্তম।
জেডটিএফের দুই প্রিন্সিপাল বিজ্ঞানী হলেন টম প্রিন্স ও ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের মাইকেল কেলি। কেলি বলেন, ধূমকেতুর কক্ষপথ দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটি আমাদের সৌরজগতের শেষ কোণে থাকা উর্ট ক্লাউড থেকে এসেছে। এই উর্ট ক্লাউড হলো প্লুটো গ্রহেরও পেছনে অবস্থিত কোটি কোটি ধূমকেতু ও গ্রহাণুর আবাসস্থল।
এই উর্ট ক্লাউডকে সৌরজগতের দূরতম অঞ্চল ও ধূমকেতুদের বাড়ি বলে আখ্যা দিয়েছে নাসা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, সবুজ ধূমকেতুটি এখন পৃথিবী থেকে ২.৫ আলোক মিনিট দূরে আছে, যার অর্থ ২.৭ কোটি মাইল দূরে। নাসা জানিয়েছে, টেলিস্কোপ ও দুরবিনে সবুজ ধূমকেতুকে দেখা গেছে, রাতের আকাশ পরিষ্কার হওয়ায় খালি চোখেও দেখা যায়।
উত্তর গোলার্ধের মানুষ একে জানুয়ারি মাসের শেষে ভোরবেলা দেখতে পেয়েছেন। দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে দেখা যাবে রাতের আকাশে ও ফেব্রুয়ারি মাসে। এশিয়ার দেশগুলো থেকে যারা দেখবেন তাদের উত্তর-পশ্চিম আকাশের দিকে তাকাতে হবে।
দিগন্তরেখার সঙ্গে ১৬ ডিগ্রি কোণ করে অবস্থান করবে সবুজ ধূমকেতু। তবে বাড়িঘরের আলো ও রাস্তার আলোর দাপটে একে খালি চোখে দেখা মুশকিল হবে। এবার পৃথিবী অতিক্রম করে গভীর মহাকাশে ফিরে যাওয়ার পর বর্তমান পৃথিবীতে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি ধূমকেতুটিকে আর দেখতে পাবে না।
Leave a Reply