অনলাইন ডেস্ক: ঋণের ১৫ লাখ টাকা সুদসহ পরিশোধের পরও রাজধানীর লালবাগের একটি ৬ তলা ভবন নিলামে তোলার ঘটনায় উত্তরা ব্যাংকের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন করে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আদালত বলেন, উত্তরা ব্যাংক তাদের গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বড় ধরনের জালিয়াতি করেছে। মৃত ব্যক্তির নামে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে যা মেনে নেওয়া যায় না। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী। রিটের পক্ষে ছিলেন তুষার কান্তি দাস।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী বলেন, ২০১০ সালের ৩ অক্টোবর উত্তরা ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখা থেকে লালবাগের বাসিন্দা মো,. হামিদ উল্লাহ ১৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। শর্ত অনুযায়ী তিনি ঋণের টাকা সুদসহ পরিশোধ করেন। এর মধ্যে গত বছরের ২২ এপ্রিল মো. হামিদ উল্লাহ মারা যান। তার ওয়ারিশ হিসেবে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। হঠাৎ গত বছর উত্তরা ব্যাংক মৃত হামিদ উল্লাহর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা পাওনা বলে দাবি করে। পরে ১০ লাখ টাকা আদায়ের জন্য মৃত হামিদ উল্লাহর কয়েক কোটি টাকা দামের লালবাগের ৬ তলা ভবন নিলামে বিক্রির জন্য বিজ্ঞপ্তির জন্য প্রচার করে।
চলতি বছরের ২০ অক্টোবর সমকাল পত্রিকায় এই নিলামের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। নিলামের জন্য বুধবার (১৬ নভেম্বর) দিন ধার্য রয়েছে। এই নিলাম বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৮ নভেম্বর মৃত হামিদ উল্লাহর ছেলে মো. রাসেল হাইকোর্টে রিট করেন। রিট আবেদনের সঙ্গে ১৫ লাখ টা ঋণের সুদসহ ২৪ লাখ টাকা পরিশোধের সমস্ত নথি আদালতে দাখিল করেন।
পরে রিটের শুনানি নিয়ে রোববার (১৩ নভেম্বর) উত্তরা ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখার ম্যানেজারকে তলব করেন হাইকোর্ট। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) ব্যাংকের ম্যানেজার আবু ইউসুফ পাটোয়ারী হাইকোর্টে হাজির হন। কিন্তু তিনি ঋণ পরিশোধের পরও ৬ তলা ভবন নিলামে তোলার ঘটনার কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। পরে আদালত এ ঘটনা তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি নিলাম সংক্রান্ত কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
Leave a Reply