1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১২:৩৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আজ শুরু হচ্ছে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ সংবাদ সম্মেলন করবেন নিষেধাজ্ঞা শেষে শুরু হচ্ছে সাগরে ইলিশ ধরা শিবালয়ে শ্রমিক লীগের উদ্যোগে মহান মে দিবস পালিত শিবালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন শিবালয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর গাড়িতে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা আ.লীগ নেতাকর্মীদের দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করার আহ্বান প্রচণ্ড গরমে যা করলে সুস্থ থাকবেন গুচ্ছভুক্ত ২৪ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শনিবার

বাজারে দ্রব্য মূল্য বেড়েই চলছে ক্রেতাদের স্বস্তি নেই

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩
  • ১০৬ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: কাঁচামরিচ নিয়ে বাজারে এতটা টালমাটাল অবস্থা আর কখনো দেখা যায়নি। দেদার আমদানির পরও এখনও কাঁচামরিচের কেজি ৩০০-৪০০ টাকা। অথচ ভারত থেকে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, এ স্থলবন্দরে কাঁচামরিচ শূন্য দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন করে খালাস হচ্ছে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজির মূল্য ৩২ দশমিক ২০ টাকা পড়ে। যে ব্যবসায়ী এ দামে আমদানি করছেন খালাসের পর সেখানেই তিনি এক কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ১৫০ টাকায়। আরও দুই-তিন হাত ঘুরে ভোক্তার ব্যাগে ঢুকছে ৩০০-৪০০ টাকায়। কাজেই পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণেই কাঁচামরিচের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে আর কমছে না।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে একের পর এক পণ্যে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে ভোক্তার টাকা লুট করলেও অসাধু ব্যবসায়ীদের হচ্ছে না কোনো শাস্তি। আর শাস্তি না হওয়ায় বাজারেও মিলছে না স্বস্তি।

সম্প্রতি সময়ে ভোগ্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট শুরু হয় মূলত গত করোনা মহামারি থেকে। বাজার সিন্ডিকেট শুরু হয় তখন প্রধান খাদ্যপণ্য চাল নিয়ে। এরপর একে একে সয়াবিন তেল, আটা-ময়দা, চিনি, মসুর ডাল, সবজি, মুরগি, ডিম, মাছ-মাংস, পেঁয়াজ, আলু, মসলা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে অস্বাভাবিক দাম বাড়ায়। মাঝে কয়েক দিন গরম বেশি হওয়ার সুবাদে চার্জার ফ্যানের ব্যবসায়ীরা দ্বিগুণ-তিনগুণ দাম বাড়িয়ে লুটপাট করে। এখন চলছে কাঁচামরিচ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দাপট।

এভাবে একের পর এক পণ্যে কারসাজি করে দাম বাড়িয়েও শাস্তি না হওয়ার বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, ‘দেশে আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই। এ জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট ফাঁকা করছে। আগে হয়তো পেঁয়াজ বা চিনির মতো দুয়েকটি পণ্যে সিন্ডিকেট হতে দেখা যেত। কিন্তু এখন প্রতিটা ভোগ্যপণ্যেই সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে, পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে, তখন তেল ব্যবসায়ী ভাবছে আমি কেন বসে থাকব, আমরাও দাম বাড়াই। এভাবেই এখন একটির পর একটি পণ্য নিয়ে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।’

তিনি আরও বলেন, এই যে কাঁচামরিচের দাম বাড়ানো হলো অস্বাভাবিক হারে। ৩০-৩২ টাকায় ভারত থেকে আমদানি করে বিক্রি করা হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজিতে। কেন এমনটি হবে। সরকারি সংস্থাগুলোর কাছে কি এ বিষয়ে তথ্য নেই, তারা কি দেখছে না। ভোক্তা অধিদফতর মাঝেমধ্যে বাজারে অভিযানে নামছে। তাদের অভিযানে দেখা গেছে একজন ব্যবসায়ীও কাঁচামরিচের ক্রয় রসিদ দেখাতে পারেনি। তাদের শুধু ৫-৬ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ তারা যে অপরাধ করেছে তাতে তাদের জেল হওয়ার বিধান রয়েছে আইনে। কেন সে ধরনের শাস্তি না দিয়ে নামকাওয়াস্তে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ছেড়ে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। এ ছাড়া বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সরকারের ওপর মহলের অনেকেই এমনভাবে ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন, তাতেও ব্যবসায়ীদের সাহস বেড়ে যাচ্ছে। মূলত বাণিজ্যমন্ত্রীসহ অন্যদের দায়িত্বহীন বক্তব্যও বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশে দায়ী।

করোনা মহামারি শুরুর দিকেও দেশের বাজারে মোটা চালের কেজি ছিল ৩৪-৩৬ টাকা, আর চিকন চালের কেজি ছিল ৫৫-৬০ টাকা। সে সময় লকডাউনের কারণে নিম্নআয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন গরিবদের মধ্যে বিনামূল্যে চাল-ডাল, তেলসহ কিছু পণ্য বিতরণ শুরু করে। এ কারণে তখন হঠাৎ করেই চালের চাহিদা বেড়ে যায়। চাল ব্যবসায়ীরা এটিকে দাম বাড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে পেয়ে যান। তখন এক মাসের ব্যবধানে মোটা চালের কেজি ৪৫-৫০ টাকা হয়ে যায় এবং চিকন চালের কেজি ৬৫-৭০ টাকা হয়ে যায়। চালের দাম বৃদ্ধি সেই যে শুরু হলো-আর কমল না। এর মধ্যে চালের ব্যবসায় ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে চালের বাজারের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় এসব প্রতিষ্ঠানের হাতে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেটের কারণেই মোটা চালের কেজি ৬০ টাকা, আর চিকন চালের কেজি ৮০ টাকায় ছাড়িয়ে যায়। দেশে ধানের বাম্পার ফলন হলেও চালের দাম আর কমেনি। এমনকি ভরা মৌসুমেও চালের দাম বেড়েছে দেশে।

চালের বাজারে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর প্রমাণও পায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নামে মামলাও করে কমিশন, কিন্তু ওই মামলাতেই সীমাবদ্ধ। আজও কোনো প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি দিতে পারেনি প্রতিযোগিতা কমিশন। ফলে চালের বাজারে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর দৌরাত্ম্য এখনও চলছে।

এরপর বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ১০০ টাকা লিটারের সয়াবিন তেল ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। বিশ্ব বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ১ হাজার ১০০ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৯০০ ডলার হওয়ায় তখন দাম বাড়ানো হয়েছিল। তবে দফায দফায় বিশ্ব বাজারে দাম কমে আবারও ১ হাজার ১০০ ডলারের কাছাকাছি চলে এসেছে সয়াবিন তেলের দাম। কিন্তু সয়াবিন তেলের দাম এখনও ২০০ টাকার কাছাকাছি। সম্প্রতি দুই দফায় ১০ টাকা করে লিটারে ২০ টাকা কমানো হলেও সে দামে কোথাও মিলছে না তেল।

ভোজ্য তেলের মতোই চিনির বাজারেও একইভাবে সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা লুটপাট করছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কখনো দাম বাড়িয়ে আবার কখনো বাজারে সরবরাহ কমিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে চিনি ব্যবসায়ীরা। এতে চিনির বাজার আরও টালামাটাল হয়ে যায়। প্রতিযোগিতা কমিশনের তদন্তে চিনির বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতার প্রমাণও মিলেছে, কিন্তু হয়নি কোনো শাস্তি। তাই চিনি ব্যবসায়ীরা এখনও বেপরোয়া, এখনও ভোক্তার পকেট কাটতে ব্যস্ত।

মাস দুয়েক আগেও দেশের বাজারে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা। এর পর এক লাফে হলো ৫০ টাকা। পরে বেড়ে হলো ৮০-১০০ টাকা কেজি। অথচ দেশে এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে, বাজারেও কোনো ঘাটতি ছিল না। তা হলে হুট করে পেঁয়াজের কেজিতে ৫০-৭০ টাকা বেড়ে গেল কেন। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই দাম বাড়িয়েছে পেঁয়াজের।

কয়েক দিনের অস্বাভাবিক গরমে চার্জার ফ্যান ব্যবসায়ীরা লুটপাটের মৌসুম পেয়ে যায়। একদিকে অস্বাভাবিক গরম, অন্যদিকে লোডশেডিং। তাই দেশের মানুষ চার্জার ফ্যান কিনতে ইলেকট্রনিকসের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা ২ হাজার টাকা দামের ফ্যান ৬ হাজার টাকা, আবার কোথাও ৮ হাজার টাকাতেও বিক্রি করেছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বাজার তদারকিতে এর প্রমাণ মেলে। ঢাকার স্টেডিয়াম মার্কেটসহ দেশের বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা গরমের ওই কয়েক দিনে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে লুটে নিয়েছে বাড়তি মুনাফা। এভাবেই তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে চার্জার ফ্যানের।

মাঝে সিন্ডিকেট করে মুরগি ও ডিম ব্যবসায়ীরা। হঠাৎই ১৫০ টাকার ব্রয়লার মুরগির দাম কয়েক ধাপে বেড়ে হয়ে যায় ২৮০ টাকা। আর ২২০ টাকা সোনালি মুরগির কেজি হয়ে যায় ৩৮০-৪০০ টাকা। এ ছাড়া ৪০ টাকা ডিমের হালির দাম হয় ৫৫-৬০ টাকা। অথচ পোল্ট্রি খাতে বিগত এক-দেড় বছরে বড় কোনো বিপর্যয় দেখা যায়নি। এখানেও অজুহাত দেওয়া হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের। এখানেও সিন্ডিকেট করে সেই হাতেগোনা কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। ক্ষুদ্র খামারিদের সংগঠনের সভাপতি অভিযোগ তোলেন, মুরগি ও ডিম সিন্ডিকেট ১৫-২০ দিনে সিন্ডিকেট করে দেশ থেকে লুটে নেয় দেড় হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন সূত্রে জানা যায়, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য ৪৪ কোম্পানির বিরুদ্ধে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মামলা করে প্রতিযোগিতা কমিশন। চাল, তেল, সাবান, আটা, ডিম ও মুরগি উৎপাদন ও সরবরাহ খাতের এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কমিশনেই পৃথকভাবে এসব মামলা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ আনা হয়, পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে বাজার ‘অস্থিতিশীল’ করার। কমিশন বিভিন্ন অবস্থা ও পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে এসব মামলা করে। প্রতিযোগিতা আইন অনুযায়ী, উৎপাদন, সরবরাহ, খুচরা ও ভোক্তা যেকোনো পর্যায় থেকে কমিশনে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। আবার কমিশন নিজেও মামলা করতে পারে। এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কমিশন নিজেই মামলা করে। কিন্তু এসব মামলার একটিও নিষ্পত্তি করতে পারেনি কমিশন, পারেনি কোনো শাস্তি দিতে। আর শাস্তি না হওয়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান সময়ের আলোকে বলেন, ‘কোন কোন ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ী কখন-কীভাবে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে-সেগুলো আমরা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরছি। কিন্তু কোনো সমাধান আসছে না। বাজারের এ সিন্ডিকেট ভাঙার এখতিয়ার ভোক্তা অধিদফতরের নেই, ভোক্তা আইনেও এটা কাভার করে না। সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য সরকার আরেকটি প্রতিষ্ঠান গড়েছে। সেটি হলো বাংলাদেশ কম্পিটিশিন কমিশন। জানি না, তারা কী করছে এ ব্যাপারে। তবে ভোক্তা অধিদফতর তার সামর্থ্য অনুযায়ী বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে।’ সুত্র: সময়ের আলো

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :