অনলাইন ডেস্ক:কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইজারল্যান্ডের সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সেখানে কাঁচামরিচের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা উঠেছিল। সেদিন কাঁচামরিচের দাম ছিল প্রতি কেজি ২০০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং দিনে দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে।
দাম বাড়তির বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। যে কারণে দাম স্থিতিশীল রাখতে কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমদানির খবর শুনে দাম থিতু হবে, এটাই সবাই ভেবেছিল। কিন্তু উল্টো কাঁচামরিচের ঝাল বাড়ছে। কোনোভাবেই লাগাম টেনে ধরতে পারছে না কেউ।
মালিবাগ বাজারে ইউসুফের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক চলছিল কাঁচামরিচ বিক্রেতার। কয়েক দিন পরপর ইউসুফ কাঁচামরিচ কেনেন ২৫০ গ্রাম করে। কয়েক দিন আগে তিনি কিনেছেন এই পরিমাণ কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকায়। আর সোমবার কিনতে গিয়ে দেখেন ১০০ টাকা। আর কেজি হচ্ছে ৩৬০-৪০০ টাকা। কেন এত দাম বাড়ল? এর কোনো জবাব দিতে পারেন না বিক্রেতা। তবে সাজু নামে এক বিক্রেতা জানান, বৃষ্টিতে কাঁচামরিচের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর আমদানিও কমে গেছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কমে গেছে।
শান্তিনগরের ব্যবসায়ী আউয়াল বলেন, আসলে আড়তে কাঁচামরিচ খুব বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এত দাম কীভাবে বাড়ল, ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আর এখন কম দামে কাঁচামরিচ বিক্রি করা যাচ্ছে না।
ফকিরাপুলের সবজি ব্যবসায়ী ফায়জুল বলেন, কারসাজির মাধ্যমে কাঁচামরিচের দাম বাড়ানো হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে এই কারসাজি শুরু হয়েছে। আবার দেখবেন ঈদের পর দাম কমে গেছে। এর পেছনে একটি চক্র কাজ করছে বলে আমি মনে করি।
হাতিরপুল বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে এসেছিলেন বেসরকারি অফিসের এক কর্মকর্তা। তিনি কাঁচামরিচের দাম শুনে হতভম্ব। যে পরিমাণ কেনার ইচ্ছে ছিল সে পরিমাণ আর কিনলেন না। কিনলেন ৩৬০ টাকা কেজিতে। তিনি রাগে গজগজ করে বলেন, বাজার মনিটরিং করার দায়িত্ব যাদের- তারা কি করে বুঝি না।
একই বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, আমাদের করার কিছুই নেই। পাইকারের কাছ থেকে আমরা যে দামে কিনে আনছি তাতে ৩৬০ টাকার কমে বিক্রি করলে পোষায় না। তবে আকারে-ইঙ্গিতে তিনিও আঙুল ওঠালেন মুনাফালোভী একশ্রেণি ব্যবসায়ীর ওপর। তারাই ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়েছে। সামনে ঈদ। সবাই সালাদ খাবেন। আর সালাদের সঙ্গে তো কাঁচামরিচ লাগেই।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে কাঁচামরিচের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে বাজারে সরবরাহ কম। আর সরকার যে আমদানির অনুমতি দিয়েছে তাতে এই কাঁচামরিচ দেশে আসতে অনেক সময় লাগবে। ততদিনে ঈদ শেষ। সরকার ভালোভাবেই জানে- আমদানির অনুমতি দিলেও সঙ্গে সঙ্গে সেই কাঁচামরিচ দেশে আসবে না। আসতে বেশ সময় লাগবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বৃষ্টিতে কাঁচামরিচের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এত দাম বেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ দেখি না। এরপরও সরকার আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবে এটি এমন এক পণ্য যে, ঘরের চাহিদা কমানো যায় না। তিনি আরও বলেন, সরকার ১১ হাজার ৬০০ টন কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। আর আমদানির পণ্য দেশে আসতে একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে ভোক্তা অধিদফতরকে মনিটরিং করতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply