নিজস্ব প্রতিনিধি: জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, কিংবদন্তী হীরালাল সেনের পূণ্যভুমিতে এসে আমরা ধন্য।এই মাটিতে আচার্য্য দীনেশ চন্দ্র সেন,অর্থনীতিবিদ ড.অমর্ত্য সেনসহ তাদের স্মৃতি সংরক্ষণে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।এছাড়া হীরালাল সেনের স্মৃতি রক্ষায়ও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বুধবার (২ আগস্ট) দুপুরে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার বকজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ভরতীয় উপমহাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা হীরালাল সেন এর ১৫৭ তম জন্ম দিন উদযাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ্বর পালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারঃ।
অনুষ্টানে অন্যান্যাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র মোঃ রমজান আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সানোয়ারুল হক, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইসরাফিল হোসেন, লেখক ও সাবেক অধ্যক্ষ আবুল ইসলাম শিকদার, পরিবেশবাদী আন্দোলন কর্মী দিপক ঘোষ প্রমুখ। উক্ত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উন্নয়নকর্মী মো.নজরুল ইসলাম।
মেয়র রমজান আলী বলেন, ইতেমধ্যে স্কুলের সামনের রাস্তা হীরালাল সেনের নামে হয়েছে। রাস্তা কার্পেটিং জন্য প্রায় দের কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চলতি বছরেই কাজ শুরু হবে।
সভাপতি বলেন হীরালাল সেনই উপমহাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা। তাঁর সৃষ্টিকর্ম অবাক যুগেই সীমাবদ্ধ ছিল। পথিক পথ দেখায় তাই আজকের আধুনিক চলচ্চিত্রের তিনিই পথপ্রদর্শক।
উপজেলা প্রশাসনের সংক্ষিপ্ত জী্যবনপঞ্জি থেকে জানাযায়, হীরালাল সেন ১৮৬৬ সালের ২ আগস্ট তারিখে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার বকজুরী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। আজ বুধবার এই তারিখে তার ১৫৭ তম জন্মদিন। হীরালাল সেন ততকালীন ১৮৯৬ সালে কলকাতায় আইএসসি ক্লাসে অধ্যয়নকালে স্টার থিয়েটার আয়োজিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী দেখে, তার চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহ সৃষ্ঠি হয়েছিল। চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহের জন্য তার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা এগোয়নি। তিনি পড়াশুনা ত্যাগ করে ১৮৯৮ সালে ভোলায় এসডিওর ডাক বাংলোতে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করেন। ছোট ভাই মতিলাল সেনকে নিয়ে গড়ে তোলেন দ্যা রয়েল বায়োস্কোপ কোম্পানি। সে ১৯০০ সালে বিদেশ থেকে সে সময়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি আমদানি করেন চলচ্চিত্র নির্মানের জন্য। পরে তিনি মুভি ক্যামেরা চালানো ও বিশেষ কলাকৌশল রপ্ত করেন এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্যপূর্ণ গতিশীল দৃশ্যের চিত্র গ্রহণ শুরু করেন।
তার নির্মিত কাহিনী চিত্র ভ্রমর, আলিবাবা, হরিরাজ, দোললীলা, সরলা, বুদ্ধ, সীতারাম, দুটি প্রাণ, মৃণালিনী, সোনার স্বপন, মনের মতন, মজা, বধূ, চাবুক, গুপ্তকথা, ফটিকজল, দলিতা ফনিনী ইত্যাদি ছায়াছবি তিনি নির্মিত করেছিলেন, ১৯০০ থেকে ১৯০৫ সালে মধ্যে।
সংসার জীবনে হীরালাল সেন বিয়ে করেন হেমাঙ্গিনী দেবী নামের এক মেয়েকে। তবে তার তিন সন্তান কথা জানা যায়।
এই কিংবদন্তি হীরালাল সেন ১৯১৭ সালের ২৯ অক্টোবরে কলকাতায় তিনি মৃত্যু বরন করেন।
Leave a Reply