অনলাইন ডেস্ক: প্রতিদিন বায়ুদূষণ হচ্ছে ঢাকায়। কোনো কোনো দিন দূষণের মাত্রা অন্যান্য দেশের তুলনায় শীর্ষে অবস্থান করে। আবার কোনো দিন মাত্রা ওঠানামা করে। তবে একেবারে বায়ুদূষণ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। বায়ুদূষণের কারণে অনেক মানুষের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা হচ্ছে। এমনকি অকালমৃত্য হচ্ছে। বায়ুদূষণ রোধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। অনেক অর্থ ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু কাক্সিক্ষত সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
সভায় এ নিয়ে বিভিন্ন আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ময়লা আবজর্না, গাছের লতাপাতা খোলা জায়গায় পোড়ানো যাবে না। যদি কেউ পোড়ায় তা হলে সংশ্লিষ্ট দফতর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। আগামী জানুয়ারি মাস থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকায় ডিজেলচালিত পুরাতন বাস-ট্রাকের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় যানবাহনের নিঃসরণ পরীক্ষা বাধ্যতামূলকভাবে চালু করা হবে। রাস্তা ও ফুটপাথ খোঁড়াখুঁড়িতে কোনো ধরনের বায়ুদূষণ সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। সব হাসপাতালের মেডিকেল বর্জ্য পরিবেশসম্মতভাবে ডিসপোজাল করতে হবে। বেসরকারি পর্যায়ে উন্নত জ্বালানির চুলার প্রচলন ও প্রসার করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উল্লেখ করা হয়, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বায়ুদূষণসহ পরিবেশ ব্যবস্থাপনাবাবদ ব্যয় বরাদ্দ থাকে। সে খাতের বরাদ্দ ঠিকাদার সঠিকভাবে ব্যবহার করছে কি না তা তদারকি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিশ্চিত করতে হবে। কোনো অভিযোগ প্রমাণ হলে ঠিকাদার ও প্রকল্পের তদারকি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
সভায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, দেশে দূষণ সৃষ্টিকারী ইটভাঁটাগুলো বন্ধ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এগুলো বন্ধ করার জন্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা করতে হবে। স্থানীয় সরকার সচিব সভায় বলেন, বায়ুদূষণ রোধে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করছে। কিন্তু অপরাধ বন্ধ করা যাচ্ছে না।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, শহরের আবাসিক এলাকাসহ যেখানে সেখানে ময়লা আর্বজনা, পৌরবর্জ্য, গাছের লতাপাতা ও বায়োমাস উন্মুক্তভাবে পোড়ানোর ফলে ব্যাপক বায়ুদূষণ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও রাস্তা নির্মাণ বা মেরামতের সময় খোলা জায়গায় বিটুমিন গরম করলে ব্যাপক বায়ুদূষণ সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ সচিব সভায় উল্লেখ করেন, সনাতন পদ্ধতির চুলা ব্যবহারের ক্ষতিকর বিষয়গুলো জনগণকে জানানো হলে উন্নত চুলা ব্যবহার ক্রমশ বাড়বে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, দেশে ডেঙ্গু বা কোভিডের চেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হচ্ছে। বায়ুদূষণের কারণে অনেক মানুষ অনেক ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীর অকালমৃত্যও হচ্ছে। সুত্র:সময়ের আলো
Leave a Reply