অনলাইন ডেস্ক: রংপুরে নিখোঁজের চার দিন পর অটোচালকের মরদেহ উদ্ধার ও এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে মহানগর পুলিশ। নিহত অটোচালকের ছিনতাইকৃত অটো বিক্রির টাকা দিয়ে নেশা ও জুয়ার টাকা যোগাতেই তিন বন্ধু মিলে অটো চালককে হত্যা করে। নিহতের মরদেহ উদ্ধারের মাত্র ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত ৩ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের নবাব ফাঁড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো. আবু মারুফ হোসেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা জন হলেন-রংপুর নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামপুরা এলাকার ভাড়াটিয়া মোজাম্মেল হক এর পুত্র ফাইয়াজ ওরফে ফাইনাল (২৫), একই এলাকার রফিকুল ইসলামের পুত্র সাকিল হাসান (২০) এবং ফজলুর রহমান ফজলুর পুত্র রাশেদ (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার আরও জানান, গত ৩১ মার্চ অটোচালক কামরুল হাসান বাসায় ইফতার করে ভাড়ার জন্য অটো নিয়ে বের হয়। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ফাইয়াজ ওরফে ফাইনাল অটোচালক কামরুল হাসানকে বিয়ের ভাড়ার কথা বলে প্রাইম মেডিক্যাল হাসপাতালের পাশে দরগার মোড়ে ডেকে নেয়। পরে কৌশলে ৩ বন্ধু ফাইয়াজ, সাকিল ও রাশেদ অটোচালককে অটোসহ দরগার মোড়ের গাছ বাগানে নিয়ে যায়। গাছবাগানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা শেষে অন্ধকার হলে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তিনবন্ধু মিলে অটোচালককে আঘাত করে।
এ সময় অটোচালক জীবন বাচাঁতে পালানোর চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। পা পিছলে ধান খেতে পরে গেলে সেখানেই খেতের পানিতে মাথা ডুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। দ্বিতীয় দফা পরীক্ষা শেষে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে সেখানেই অটোচালক কামরুল হাসানের মরদেহ রেখে চলে যায় হত্যাকারীরা। পরে ছিনতাইকৃত অটোটি নিজের কাছে নেয় রাশেদ এবং নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নেন ফাইয়াজ। অটোর ব্যাটারি বিক্রির ৩৫ হাজার টাকা তিন বন্ধু মিলে ভাগ করে নিয়ে গা ঢাকা দেয়।
এদিকে সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে পীরজাবাদ দরগাহ পাড়া এলাকার ধান খেত থেকে নগরীর লাকীপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে কামরুল হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে মাত্র ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকারী তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে গ্রেপ্তারকৃতদের জবানবন্দি রেকোর্ডের জন্য কোর্টে প্রেরণ করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান, রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ রহমান, ওসি তদন্ত হোসেন আলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।
Leave a Reply