অনলাইন ডেস্ক: বেসরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা, যন্ত্রপাতি, অবস্থান, লোকবল, সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী এ, বি, সি, ডি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। ‘এ’ ক্যাটাগরির এক রকম সুবিধা, ‘বি’ ক্যাটাগরির এক রকম সুবিধা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির হাসপাতালগুলোর মান ভেদে এবং সুযোগ-সুবিধা উল্লেখসহ নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করে দেবে সরকার। এতে মানুষ আগে থেকেই জানতে পারবে কোন হাসপাতালে গেলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে এবং চিকিৎসা বাবদ কত ব্যয় হবে। রোববার সচিবালয়ে সারা দেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের ক্যাটাগরি নির্ধারণ বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান। দেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে একেক রকমের চার্জ, টেস্ট ফি নেওয়া হয়। যত্রতত্র ফি সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারিভাবে একটি গাইডলাইন তৈরি করে হাসপাতালগুলোর মান অনুযায়ী ক্যাটাগরি করা হবে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এসংক্রান্ত একটি কমিটি করে এক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান। এতে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পাবে, যত্রতত্র ফি দিয়ে দেশের জনগণের অযাচিত অর্থ ব্যয় হবে না বলে উল্লেখ করেন।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মান প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সারা দেশে অলি-গলিতে ক্লিনিক হয়ে গেছে। কিছু ক্লিনিক মানসম্মত সেবা দিলেও অধিকাংশেরই সেবার মান ভালো না। ইচ্ছেমতো ফি নেওয়া হয়। সেসব প্রতিষ্ঠানে স্ট্যান্ডার্ড ও নিয়ম অনুযায়ী যন্ত্রপাতি নেই। মেশিন আছে, সেগুলোও ঠিকমতো কাজ করে না। শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সুবিধা নেই। মানসম্পন্ন চিকিৎসক থাকে না। তবুও ফি নেওয়া হয় অনেক বেশি। এসব অনিয়ম আর চলতে পারবে না। তিনি বলেন, আমরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মান বাড়াতে চাই। আমাদের হাসপাতালের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আমাদের মোট বেসরকারি হাসপাতাল আছে ১৩ হাজার ৭২৬টি। সেগুলোর মধ্যে হাসপাতাল ৪ হাজার ৫২৮টি এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে প্রায় ৯ হাজারের মতো আর বেসরকারি ব্লাড ব্যাংক আছে ১৭৭টি। উপজেলা থেকে জেলা পর্যন্ত হাসপাতালে যন্ত্রপাতি আছে। তবে জনবলের কিছু ঘাটতি আছে। জনবল বৃদ্ধির প্রচেষ্টা আমরা করছি।
দেশে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর দেশে ৮ জন ব্যক্তি নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ৮ জনের মধ্যে ৫ জনই মারা গেছেন। এ জন্য দেশবাসীকে শীতকালীন খেজুরের রস খাওয়ার ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনার বিশেষ কোনো ওষুধ নেই, টিকা বেরিয়েছে কিন্তু নিপাহ ভাইরাসের কোনো টিকাও নেই। কাজেই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। খেজুরের কাঁচা রস পান করা যাবে না এবং পাখি খাওয়া ফল খাওয়া যাবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, মহাসচিব ও এমপি আনোয়ার হোসেন খান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুর রহমান, সৈয়দ মজিবুল হক প্রমুখ।
Leave a Reply