1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
ঘিওরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ : সাবেক ছাত্রদল নেতা নিহত – আহত ৬ দেশ একজন লেডি ফেরাউনের হাতে পড়েছিল-রুহুল কবির রিজভী মানিকগঞ্জে দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপিত মানিকগঞ্জে ঢাকা বিভাগীয় জিয়া  ক্রিকেট  টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হরিরামপুরে  বিএনপির ৩১ দফা তুলে ধরলেন সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জি: মঈনুল ইসলাম খান আজ ৬ডিসেম্বর জনযুদ্ধের বাংলাদেশকে স্বীকৃতির দিন সিংগাইরে টমেটো ক্ষেত থেকে অটো চালকের মৃতদেহ উদ্ধার  শিবালয়ে স্মার্ট কার্ড বিতরণ উদ্বোধন মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান ভবনে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট আয়োজিত গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড ’সোনার বাংলার’ প্রাকৃতিক সৌন্দযের অন্যতম পাহাড়-নদী বেষ্টিত নেত্রকোণা

সুন্নাতে খৎনা করাতে গিয়ে আবারো শিশুর মৃত্যু, দুই চিকিৎসক গ্রেফতার

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১২৭ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক:সুন্নাতে খৎনা করাতে গিয়ে আবারো এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এবার ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে। মারা যাওয়া শিশুটির নাম আহনাফ তাহমিন আয়হাম (১০)। সে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো। এ ঘটনায় ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসাথে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

শিশুটির বাবা আবাসন নির্মাণ ব্যবসায়ী ফখরুল আলম। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আলেখারচরে। তিনি ডেনমার্কে ছিলেন। নিহত আয়হামের জন্ম হয় ডেনমার্কেই। ছেলের জন্মের পর তিনি সপরিবারে দেশে ফিরে আসেন। দুই ছেলের মধ্যে আয়হাম বড়। বর্তমানে তারা খিলগাঁও রেলগেট এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন।

গত মঙ্গলবার রাতে শিশু আয়হামের সুন্নতে খৎনা করাতে নিয়ে আসেন মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে। সঙ্গে ছিলো শিশুর মা খায়কুন নাহার চুমকি। সেখানের অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন ডা. এস এম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে সুন্নতে খতনার কাজ শুরু হয়। রাত ৮টার দিকে খতনা করানোর জন্য আয়হামকে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর আর ঘুম ভাঙেনি। এর ঘণ্টাখানেক পর হাসপাতালটির পক্ষ থেকে আয়হামকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

শিশুটির বাবা ব্যবসায়ী ফখরুল আলম বলেন, ছেলেকে ওটিতে ঢুকানো আগে ও বলছিল একটু ভয় লাগছিল। আমি বলেছিলাম, বাবা কোনো সমস্যা নেই, আল্লাহ ভরসা। এরপর থেকে আমার ছেলে খুব উৎফুল্ল ছিলো। তার খৎনা করানো হবে, এতে সে খুব খুশি ছিল। এরপর ওটিতে ঢুকল, আর সব শেষ। তিনি বলেন, আমার সুস্থ ছেলে, সপ্তাহে পাঁচ দিন স্কুলে যায়। তারপর স্কাউটেও জয়েন করেছে, সে ক্লাস ক্যাপ্টেনও। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সুন্নাতে খৎনার সময় অ্যানেস্থেসিয়ার ভুল প্রয়োগের কারণে শিশুটির আর জ্ঞান ফেরেনি। পরে তার মৃত্যু হয়। লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় শিশু আয়হামকে।

সন্তান হারানো পাগলপ্রায় বাবা ফখরুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার সুস্থ সন্তানকে মেরে ফেলা হলো। আমি চিকিৎসক মোক্তাদির ও ইশতিয়াকের পা ধরে বলেছি, ছেলেকে পূর্ণ অ্যানেসথেসিয়া দিয়েন না। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেননি। আমার সোনার টুকরা ছেলেটাকে তারা শেষ করে দিল।’ আমার ছেলের শরীরে অ্যানেসথেসিয়া পুশ করেন ডা. মুক্তাদির। আমার সন্তানকে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ মৃত্যুর দায় মুক্তাদিরসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবারই। আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে ছেলের মৃত্যুর পর ফখরুল আলম মামলা করেছেন। হাতিরঝিল থানায় করা এ মামলায় হাসপাতালটির মালিক মোক্তাদির, অবেদনবিদ মাহবুব ও অস্ত্রোপচারবিশেষজ্ঞ ইশতিয়াক আজাদকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

হাতিরঝিল থানার ওসি মো. আওলাদ হোসেন জানান, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন, ডা. এস এম মোক্তাদির হোসেন ও ডা. মাহবুব হোসেন। ঘটনার পর ইশতিয়াক পালিয়ে গেছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক বলে জানা গেছে।

পুলিশের তথ্যমতে, ডা. মোক্তাদির হোসেন জে এস হাসপাতালের মালিক। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অর্থোপেডিক সার্জন। আর ডা. মাহবুব হোসেন একই হাসপাতালের অবেদনবিদ্যা (অ্যানেসথেসিওলজি) বিভাগের চিকিৎসক।

এদিকে সুন্নাতে খৎনা করানোকালে শিশুর মৃত্যু, থানায় মামলা এবং চিকিৎসকদের গ্রেফতারের পর গতকাল বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে অভিযান চালিয়ে সেটিতে তালা ঝুলিয়ে সিলগালা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান বলেন, অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার জন্য হাসপাতালের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানের শুধু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন আছে। এ কারণে তাদের অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগের কোনো সুযোগ নেই। তাই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সিলগালা শেষে সেন্টারটির মূলফটকে লিখিত এক নির্দেশে বলা হয়, আহনাফ তাহমিন আয়হাম নাসেরের সুন্নাতে খৎনার সময়ে মৃত্যু সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টার ও জে এস হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

এর আগে, গত ৮ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলে ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুন্নাতে খৎনা করাতে গিয়ে পাঁচ বছর বয়সী শিশু আয়ানের মৃত্যু হয়। আয়ানের মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে নতুন করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :