1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বিতর্কিত কাউকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না:মির্জা ফখরুল ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ রোপণ বন্ধ করতে উপদেষ্টার নির্দেশ মানব সমাজ পরিবর্তনশীল এর তাল মিলাতে না পারলে আওয়ামী লীগের মতো ছিটকে পড়তে হবে:ড.মঈন খান জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পর্যাপ্ত সহায়তা প্রয়োজন:ড. ইউনূস অনলাইনে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে মানিকগঞ্জে তারণ্যনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মানে আমাদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় মানিকগঞ্জের কোথায়ও অতিরিক্ত মূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক বিক্রি ও সরবরাহের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে: সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন কেয়ামতের আগে মানুষের যে অবস্থা হবে দেশে থাকলে দ্রুতই গ্রেপ্তার হচ্ছেন ওবায়দুল কাদের

‘শূন্য থেকে শিখর’ পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়া সাজ্জাদের শিক্ষনীয় স্টাটাস

  • সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৭৫ বার পড়েছেন

সোনার বাংলা নিউজ ডেস্ক: ‘শূন্য থেকে শিখর’ নিজ ফেসবুকে এমনি একটি আবেঘণ শিক্ষনীয় স্টাটাস দিয়েছেন পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়া সাজ্জাদ হোসাইন হ্রদয়।সরাসরি তার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে নিয়ে শিক্ষনীয় এ স্টাটাসটি তুলে ধরা হলো সোনার বাংলা নিউজে।

আমার পড়াশোনার হাতেখড়ি মায়ের হাতেই। কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পূর্বেই আমি বর্ণমালা, ছড়া, বিভিন্ন সুরা, দোয়া এসব শিখে ফেলি। আমাকে শিক্ষিত করে তোলার নিমিত্তে আমার মায়ের যুদ্ধের কেবল শুরু। তারপর সময়ের পরিক্রমায় আমি গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে থিতু হই। প্রতিবার আমাকে শহরের বাসে তুলে বাসের হেল্পারকে হাতে পায়ে ধরে আমার মায়ের সে কি কান্না!, তার আদরের সন্তানকে যেন ঠিক জায়গায় সে নামিয়ে দেয়।বাস ছেড়ে যাওয়া অব্দি মা দাঁড়িয়ে থাকতেন, আর দুইহাতে চোখের পানি মুছতেন। সেই ত্যাগের মধ্যে নিশ্চয়ই দোয়া ছিলো, স্বপ্ন ছিলো – ছেলে একদিন বড় হবে, মানুষের মতো মানুষ হবে।

হ্যাঁ, এটাই আমার কাছে মায়ের একমাত্র চাওয়া ছিলো। যেন আমি ভালো মানুষ হই। হিংসা নয়, বিনয়ই আমার ভাষা হয় যেন। সবসময় বলতে

সেই আদেশ পালনে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিলেন।

অনেক কথা মনে পড়ছে আজ, অনেকের কথা মনে পড়ছে আজ। ছোটবেলার এহেসান স্যার, শাহজাহান স্যার, রাসেল স্যার, লিটন স্যার, নার্গিস ম্যাডাম, শেলী ম্যাডাম, সুইটি ম্যাডাম, মাদ্রাসার বড় হুজুরের কথা খুব মনে পড়ছে। কলেজিয়েটের আবসার স্যার, বোরহান স্যার, সুশান্ত স্যারের কথা মনে আসছে যারা বিভিন্ন সময়ে আমাকে কম বেতনে প্রাইভেট পড়াতে হাসিমুখে রাজি হয়েছিলেন। স্কুলের মসজিদের মুয়াজ্জিন হুজুরের কথা মনে পড়ছে যিনি আমার অভিভাবকের মতো ছিলেন। হোস্টেলের তাজু ভাইয়ের কথা মনে পড়ছে যিনি সকাল দুপুর রাতে আমাকে রান্না করে খাইয়েছেন। এই মানুষগুলো আমাকে বিভিন্নভাবে তৈরী করেছেন আজকের আমি’র জন্যে।

মনে পড়ছে আমার শ্রদ্ধেয় খালেক ভাইয়া, প্রিয় আঙ্কেল আর ছোট আব্বুর কথা যারা আমাকে শহরে আনা নেয়া করেছেন অনেক বছর। হোস্টেলের সময়, স্কুলের বড় মাঠ, আপনভোলা মেস, মনে পড়ছে সবকিছুর কথা। জীবনে চলার পথে এই মানুষ, ঘটনাগুলো হতে যে শিক্ষা লাভ করেছি, যে অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত হয়েছি তা আমাকে আরো শাণিত করেছে।

আজ আমার বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই আমার আজকের এই অর্জন আমার পরিবারের জন্যেই সম্ভব হয়েছে। আমার বাবাকে অল্প বয়সে হারালেও আমি জানি বাবার দোয়া সবসময় আমার মাথার উপর ছায়া হয়ে ছিলো। আমার এমন কোন অভাব নেই যা আমার ভাই দূর করেননি, না চাইতেই সব পেয়েছি আমি উনার কাছে। মা ছিলো বলে আমার কখনো দোয়ার কমতি হয়নি। মমতাময়ী মা সারাক্ষণ আমার জন্যে জায়নামাজে কান্না করে গেছেন। পেয়েছি বোনের অপরিসীম স্নেহ, আদর। ভাবীর কাছে পেয়েছি ছোট ভাইয়ের মতো ব্যবহার।  স্ত্রীর কাছে পেয়েছি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সাহস। আমি পরীক্ষা দিতে গেলে এই মানুষগুলো রোজা রাখতো, নামাজে বসে সেজদায় আল্লাহর কাছে আমার সুস্থতা ভিক্ষে করতো। বিয়ের পর পাওয়া দ্বিতীয় পরিবারে আমার গুরুজনেরাও সবসময় আমার জন্যে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানিয়েছেন। আজ আমি ব্যর্থ হলে এই মানুষগুলোর দুঃখ হতো, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা চান নি।

দোয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। আর এই দোয়ার কোন কমতি আমার ছিলো না। আমি যখন যেখানে গিয়েছি, থেকেছি, সেখান থেকেই দোয়ার ভান্ডার নিয়ে এসেছি। জেনেশুনে কোনদিন কাউকে কষ্ট দিতে চাইনি, চেষ্টা করেছি বড় ভাই, ছোট ভাই, বন্ধু, মেসের খালা, রিক্সাওয়ালা সবার সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে। বিনিময়ে আমার পাওনা হলো কাড়ি কাড়ি দোয়া। আজ এই দোয়াই আমাকে পৌঁছে দিলো আমার স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে।

আমার জীবনের গল্প আল্লাহ অশেষ রহমতের সাথে লিখেছেন। নাহলে এভাবে সব মিলে যাবে কেন! আগস্টেই আমার বিয়ে, আগস্টেই আমার প্রথম চাকরি পাওয়া, আর আজ আগস্টেই আমার বিসিএস স্বপ্ন পূরণ। তাও আবার জীবনের প্রথম বিসিএসে বসেই পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়ার মতো অকল্পনীয় ফলাফল। আল্লাহর রহমত আর মানুষের দোয়া আমাকে শূন্য থেকে শিখরে নিয়ে আসলো। এর জন্যে শুকরিয়া জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।

আজ আমার অর্জনের মাধ্যমে জয়ী হলেন আমার মা, আমার ভাই। জীবনের বেশিরভাগ সময় কোন সাধ আহলাদ পূরণ করতে না পারা আমার মায়ের জন্যে এটাই আমার সর্বোচ্চ উপহার। ‘ভাইকে এতো পড়িয়ে লাভ নেই’- মানুষের মুখে এমন কথা শুনেও কানে না তোলা বড় ভাইটার জন্যে আমার পক্ষ থেকে এই উপহার। আজকের এই অর্জনের মাধ্যমে তাদের কষ্ট, ত্যাগ স্বীকারকেই মূলত আমি স্বীকৃতি দিলাম। আমার পরিবারকে সম্মানিত করতে পেরে, আমার বাবার নাম উজ্জ্বল করতে পেরে আজ আমি ধন্য।

এবার সময় দেশের জন্যে কিছু করার। মহান আল্লাহর দরবারে সেই তৌফিক এবং শক্তি আমাকে দেয়ার আর্জি রাখলাম।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :