নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৮ মে ২০২৫
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনা ও ইছামতি নদী সংযুক্ত কান্তাবতী নদীর মাঝে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব।প্রায় দেড় মাসের বেশী সময় ধরে রাজনৈতিক পরিচয়ে স্থানীয় একটি চক্র অবৈধভাবে নদী থেকে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় উক্ত চক্রের হাতে ইতোমধ্যে নাজেহাল হতে হয়েছে অনেককেই। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার মিলেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, শিবালয় উপজেলার উথলী-জাফরগঞ্জ সড়কের পাশে বাসাইল, কলাবাগান এলাকায় কান্তাবতী নদীতে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে নির্বিচারে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে একদিকে নদী পারের হাজারো মানুষ ভুগছেন পানির সমস্যায়।অপরদিকে অবৈধভাবে প্রশাসনকে কোন তোয়াক্কা না করে রাতের আধারে নদীর বুকে ভ্যাকু দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ অপকর্ম যেন দেখার কেউ নেই।
এদিকে, নদীর মাঝে বাঁধ ও মাটি কাটার বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন প্রতিবাদ করায় তাদের বিভিন্নভাবে নাজেহাল করছে বিএনপি নামধারী কতিপয় দূর্বৃত্তরা। যে কারনে এলাকার কেউ তাদের ভয়ে মুখ খুলছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার বাশাইল গ্রামের জনৈক ব্যক্তি জানান, বর্তমান সময়ে বিএনপি’র ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটির পদ-পদবীতে থাকা কয়েক নেতা নদীর মাটি কেটে মোটা অংকের টাকায় অন্যত্র বিক্রি করছে। যার মধ্যে উথলী ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি মোঃ ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান, ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ আব্দুর রাজ্জাকের নাম উঠে এসেছে।
কলাবাগান ও বাশাইল এলাকার স্থানীয় কয়েকজন কৃষক ডা. কালিপদ মন্ডল, ফরিদ শেখ, রাজ্জাক মুন্সী ও করিম শেখ বলেন, নদীতে বাঁধ দেয়ায় যমুনার পানি ইছামতি হয়ে কান্তাবতীতে প্রবাহিত হচ্ছে না। এতে নদী পাড়ের মানুষ পানির সমস্যায় ভুগছে। রাতের আধারে চলা মাটির ট্রাকের ধুলোবালু ও পানি সংকটে ফসলের ক্ষেত-খামারেও দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা।
উথলী ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি মোঃ ফজলুল হক মাটি কাটার বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নদীর মাঝের মাটি কাটছিনা। নদী পাড়ের জমি কিনে সেখান থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছি। ট্রাক পারাপারের জন্য নদীতে বাঁধ তৈরী করা হয়েছে। এ ব্যবসার সাথে স্থানীয় ও রাজনৈতিক দলের অনেকেই সম্পৃক্ত রয়েছেন।
শিবালয় উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, দলের পদ-পদবী ব্যবহার করে ও নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অপকর্মের কোন সুযোগ নেই। দলে সুদ্ধি অভিযান চলছে। এমন অপকর্মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নিবে বলে তিনি জানান।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নদীতে বাঁধের বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। আমার এসিল্যান্ড নায়েব সাহেবকে সরজমিন রিপোর্ট করতে বলেছি। এখনো কোন রিপোর্ট আমার কাছে পৌঁছেনি। তবে, দ্রুত এ কর্মযজ্ঞের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও বাঁধ অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply