1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন

শিবালয়ে কোস্টগার্ডের নির্যাতনে রোজা ভাঙ্গতে বাধ্য হলেন স্পিডবোট চালক রাসেল

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫
  • ১৩২ বার পড়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোজার কথা বলেও মানিকগঞ্জের শিবালয়ের যমুনা নদীতে কোস্টগার্ডের নির্যাতন থেকে রেহায় পায়নি   স্পিডবোট চালক রাসেল শেখ। অবশেষে কোস্টগার্ডের নির্যাতনে অসুস্থ্য হয়ে রোজা ভাঙ্গতে বাধ্য হলেন রাসেল। কোষ্টগার্ডের নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সাড়ে ৪ ঘণ্টা আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে স্পীড বোট চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় যাত্রীদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

স্পিডবোট চালক রাসেল শেখ বলেন, কোস্টগার্ড মাঝ  নদীতে আমাকে সিঙ্গেল দিলে আমি খেয়াল করিনি। পরবর্তিতে কোস্টগার্ড মাঝ নদীতে আমার বোট আটকায় এবং একজন যাত্রীর গায়ে লাইফ জ্যাকেটের চেইন লাগানো ছিল না বলে আমাকে তাদের বোটে উঠিয়ে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং বেদম মারপিট করে। বললাম আমি রোজা আছি, আমাকে এভাবে মাইরেন না। কোন কথায় শোনলেনা তারা। অবশেষে কোস্টগার্ডের  নির্যাতনের কারণে আমি অসুস্থ্য হয়ে পড়ি এবং রোজা ভাঙ্গতে বাধ্য হই।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জের শিবালয়ের যমুনা নদীর মাঝ নদীতে টহলরত কোস্টগার্ডের ডাকে সাড়া  না দেয়ায় এবং অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার অপরাধে স্পিডবোট চালক রাসেল শেখ ও ফয়সালকে বেদম মারপিট করেছে কোস্টগার্ড।এসময় রাসেল পায়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে গুরুত্বর আহত হয়ে হাটতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তার। এতে সাড়ে ৪ঘন্টা আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে স্পিডবোট সার্ভিস বন্ধ থাকে।

পাবনাগামী যাত্রী সাকিবুল ইসলাম বলেন, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে স্পিডবোটে যাতায়াত অনেক সহজ। যেখানে লঞ্চে এবং ফেরিতে ২ঘন্টা সময় লাগে সেখানে স্পিডবোটে সময় লাগে মাত্র ২০মিনিট। যে কারণে আমি স্পিডবোটেই যাতায়াত করি। কিন্তু আজকে এসে দেখি স্পিডবোট বন্ধ এখন বিকল্প পথে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নাই। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হবে বলে তিনি জানান। অতিদ্রুত এই সমস্যার সমাধান চান তিনি।

স্পিডবোটে যাবার জন্য আরিচা ঘাটে দুই ঘন্টা অপেক্ষা করছিলেন জৈনক এক নারী যাত্রী। তিনি বলেন, লঞ্চে আরিচা-কাজিরহাট যেতে দুই ঘন্টা সময় লাগে। বাচ্চা নিয়ে দুই ঘন্টা লঞ্চে বসে থাকা অনেক কষ্ট। স্পিডবোটে সময় লাগে মাত্র ২০মিনিট। সে জন্য আমরা স্পিডবোটেই যাতায়াত করে থাকি। আজকে এসে দেখি স্পিডবোট সার্ভিস বন্ধ। বাড়িতে আমার বাবা-মা অসুস্থ্য  এ অবস্থায় আমাদের এখন বাধ্য হয়ে বিকল্প ব্যাবস্থায় কষ্ট করে যেতে হবে।

স্পিডবোট চালক ফয়সাল বলেন, মঙ্গলবার সকালে  আরিচা থেকে কাজিরহাট যাওয়ার পথে কোস্টগার্ড মাঝ নদীতে আমার স্পিডবোট আটকায়। এসময় বোটে ১জন যাত্রী বেশী পাওয়ায় আমাকে বেদম মারপিট করে ছেড়ে দেয়।

চালক আপন মিয়া বলেন, একটু এদিক -সেদিক হলেই কোস্টগার্ড স্পিডবোট চালকদেরকে এভাবে মারধর করে। প্রতিদিনই আমাদের কোন না কোন চালক ভাই কোস্টগার্ডের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শুধু তাই নয় অনেক সময় এরা যাত্রীদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করে থাকে। এভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে আমরা আর  বোট চালাতে পারবো না। যে কারণে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে স্পিডবোট সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে।

চালক মো মনির হোসেন বলেন, আগে আমরা ১৮জন যাত্রী নিয়ে পারাপার করতাম। মাঝখানে সরকার পতনের পর আমাদেরকে ১৪ জন যাত্রী নির্ধারণ করে দেয়ার পর থেকে বিগত কয়েক মাস ধরে আমরা ১৪জন যাত্রী নিয়েই পারাপার করছি।এর মধ্যে ১জন যাত্রী বেশী হলেই কোস্টগার্ড আমাদেরকে বেদম মারপিট করে। মাঝে মধ্যে কিছু স্টাফ যাতায়াত করেন যেমন,  বিআইডব্লিউটিএ’র স্টাফ, অথবা সরকারি কোন কর্মকর্তা, অসুস্থ্য লোক আছে এবং কেউ আছেন স্বজনের মৃত্যু এবং তার জানাযা দেওয়ার কথা বলে স্পিডবোটে উঠে পড়ে। এভাবে মাঝে মধ্যে ১জন যাত্রী বেশী হয়। আর এর জন্য আমাদের উপর নেমে আসে কোস্টগার্ডের নির্মম নির্যাতন। এ নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে আমরা আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছি। এর সুষ্ঠ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত স্পিডবোট চালাবেন না বলে চালকরা জানিয়েছেন।

আরিচা নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মো. সেলিম শেখ বলেন, আমি শুনেছি কোস্টগার্ড স্পিডবোটের একজন চালককে হ্যারেজম্যান্ট করেছে। যে কারণে চালকরা স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছে। বিষয়টি দ্রুত সুরাহ করার চেষ্টা করছি।

এব্যাপারে কোস্টগার্ডের দায়ীত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে গেলে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন কোস্টগার্ডের সদস্যরা।

অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যকার ভুলবোঝা-অবসান হলে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে পুণ:রায় আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে স্পিডবোট সার্ভিস চালু হয়েছে বলে বোট মালিক কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :