নিজস্ব প্রতিবেদক:মানিকগঞ্জের শিবালয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহিম খান এবং শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু সর্মথকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।যে কোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আংশকা করছেন স্থানীয়রা।নির্বাচনকে ঘিরে ককটেল বিস্ফোরন, মারধর ও গুলির ঘটনায় জনমনে ভীতি ও সংশয়ের সৃষ্টি হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে নির্বাচনী পোষ্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে আরিচা ডাক্তার খানা এলাকায় সৃষ্ট বিশৃংখলার কারণে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা ঘটনাস্থলে এসে রহিম খানের কর্মীদেরকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি এবং কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে চলে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুলির ঘটনায় বিক্ষুপ্ত আব্দুর রহিম খানের দোয়াত কলমের সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বোয়ালী ডাক্তারখানা এলাকায় বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তিন ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং তিন কিলোমিটার যানজটে সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এর ফলে, আরিচা ঘাট দিয়ে যাতায়াতকারী যানবাহন ও যাত্রীরা পথিমধ্যে আটকে ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।
এ ঘটনা সামাল দিতে মানিকগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ ও এসপি মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান ঘটনাস্থলে আসেন এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে শিবালয় ডাক্তার খানা এলাকায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পের পাশে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর পোষ্টার লাগানোর সময় মারামারির ঘটনা ঘটে।এতে আনারস প্রতীকের কর্মী সিয়াম ও জনি আহত হয়ে স্থানীয় উথলী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এ সময় উক্ত ঘটনার সংবাদ পেয়ে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন ঘটনাস্থলে এসে দোওয়াত কলমের কর্মী সমর্থকদেরকে বকাবকি এবং এক পর্যায়ে কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি করে চলে যায় বলে অভিযোগে প্রকাশ করা হয়।এ ঘটনায় বিক্ষুপ্ত দোয়াত কলমের কর্মী সমর্থকরা ও স্থানীয় জনতা আরিচাঘাট ও ডাক্তারখানা এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার দাবিতে শ্লোগান দেন।
এসব বিষয়ে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মানিকগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহিম খান বলেন, ‘আমার প্রতিপক্ষ আনারস প্রতিকের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার গাড়ীতে গুলি ও বোমা মেরেছিল। আমি সেই ঘটনায় মামলা করেছি। তারা আবারও আমার লোকজনের উপর গুলি চালিয়েছে। আমি তাদের গ্রেপ্তার দাবি করি এবং তাদের নামে মামলা করেছি।’ এসব সন্ত্রাসীদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
একই বিষয়ে আনারস প্রতিকের প্রার্থী শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু বলেন, কোথায়, কে, বা কারা, গুলি করেছে তা আমার জানা নেই।আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হচ্ছে এগুলো মিথ্যা। বরং দোয়াত কলমের লোকজন আমার দুইজন কর্মীকে মারপিট করেছে।তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনা সামাল দিতে মানিকগঞ্জ ১ আসনের এমপি সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ ও পুলিশ সুপার শিবালয়ের আরিচাতে ঘটনাস্থলে এসে সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারিরা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাদের অবরোধ তুলে নেন।
শিবালয় থানার অফিসার ইন চার্জ সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে দুই পক্ষ থেকেই মামলা করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আমাদের লোক মাঠে কাজ করছে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৫ মে রাতে আব্দুর রহিম খানের সমর্থক লঞ্চ মালিক মাসুদের বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এছাড়া গত ২৭ এপ্রিল রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিম খানের গাড়িবহরে ককটেল ও গুলি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। উপজেলা নির্বচনকে কেন্দ্র করে চার ইউপি সদস্যকে মারধর করা হয়। এসব ঘটনায় শিবালয় থানায় অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুই পক্ষ থেকেই করা হয়েছে পাল্টা-পাল্টি মানববন্ধন কর্মসুচী।
শিবালয়ে চেয়ারম্যান পদে মোট তিনজন প্রার্থী রয়েছেন।আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply