অনলাইন ডেস্ক: মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বেলা ১১টায় মেট্রোরেলের উদ্বোধন আনুষ্ঠানিক করেন তিনি। আর এর মাধ্যমেই মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ।
উদ্বোধনের পর সবুজ পতাকা নেড়ে, লাল ফিতা কেটে প্রথম যাত্রী হিসেবে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করবেন তিনি। আর সেই ট্রেনটি চালাবেন নারী চালক মরিয়ম আফিজা।
মেট্রোরেলে ভ্রমণের জন্য দুই ধরনের টিকিট রাখা হয়েছে। একটি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের এমআরটি পাস, অপরটি এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) কার্ড।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, শুরুতে কেবল মেট্রোরেল স্টেশনের কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট জামানত দিলে মিলবে এমআরটি পাস। আর একবারের যাত্রার জন্য টিকিট মিলবে স্টেশনে থাকা কাউন্টার এবং পাশের স্বয়ংক্রিয় ‘টিকিট মেশিন’ থেকে। যাত্রা শেষে নির্ধারিত মেশিনে টিকিট কার্ডটি ফেরত দিলে তবেই স্টেশন থেকে বের হতে পারবেন যাত্রীরা।
বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের মেট্রোরেল বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবুজ পতাকা উড়িয়ে ও ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন কাঙ্ক্ষিত এ প্রকল্পের। এর মাধ্যমে যোগাযোগের নতুন যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। বেলা দুইটার দিকে প্রথম যাত্রী হিসেবে টিকিট কেটে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উঠে আগারগাঁও স্টেশনে এসে নামবেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
এখন থেকে স্টপেজ ছাড়াই উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে। বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রতিটি ট্রেন প্রথম কয়েক দিনের জন্য প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে ১০ মিনিট যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করবে কারণ নগরবাসী এই নতুন পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত নয়।
মেট্রোরেলের প্রথম পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০০৫ সালে। রাজধানীর জন্য তৈরি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) বলা হয়েছিল মেট্রোরেলের কথা। এরপর মাস গেছে, বছর গেছে, যুগ গেছে, মানুষের অপেক্ষা শুধু বেড়েছে। ২০১৬ সালে দেখা গেল, বেগম রোকেয়া সরণিতে সড়কের মাঝখানে কংক্রিটের ব্লকের বেড়া দিয়ে শুরু হয়েছে মেট্রোরেলের কাজ। ছয় বছর পর মেট্রোরেল এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন।
উত্তরায় এই আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ বেলা দুইটার দিকে দিয়াবাড়ি (উত্তরা) স্টেশন থেকে মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী নিয়ে আগারগাঁওয়ের দিকে ছুটবে। প্রথম যাত্রার যাত্রী হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। সাধারণ যাত্রীরা অবশ্য মেট্রোরেলে চড়তে পারবেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের ফলে শুধু মহানগরীর যানজটই কমবে না, সরকারের সামগ্রিক রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। পূর্ণগতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে প্রতি সাড়ে তিন মিনিট অন্তর একটি ট্রেন চলবে। প্রতিটি স্টেশনে, যাত্রীদের ওঠা ও নামা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনটি অপেক্ষা করবে। প্রতিটি ট্রেন ২,৩০০ জন যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কম হবে।
উত্তরা থেকে মতিঝিল-কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a Reply