মোঃ শাহানুর ইসলাম:স্মরণ সভা করতে গিয়ে সভাটিই হয়ে থাকলো স্মরণীয়। আজ সোমবার বেলা ১১টায়২০২৪ সালের ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরন মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভা।
জেলা প্রশাসক ড.মানোয়ার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় শহীদ রফিকুল ইসলামের বাবা মোঃ রহিজ উদ্দীন, শহীদ আফিকুল ইসলাম সাদের বাবা মোঃ শফিকুল ইসলাম, শহীদ ছায়াদ মাহমুদ খানের বাবা মোঃ বাহাদুর খান, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মোকছেদুল মোমেনীন,বিএডিসির যুগ্এন পরিচালক কামাল উদ্দিন
ডিএম নাজমুল হাসান, সদর উপজেলার ইউএনও শেখ মেজবাহ উল সাবেরিন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাথী দাস,মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব মো: শাহানুর ইসলাম,ডিআইও-২ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আহতদের মধ্যে আরমান হোসেন,সাদিকুল ইসলাম রাব্বি, ছাত্র প্রতিনিধি মোঃ ওমর ফারুক প্রমুখ।
শহীদের বাবা-আত্নীয়স্বজন,হামলায় আহতরা ফ্যাসিস্ট পুলিশ,ছাত্রলীগ,আওয়ামী,যুবলীগ সহ সন্ত্রাসীদের নির্মম হামলা,হত্যা সহ নির্যাতনের যখন বর্ননা দিচ্ছিলেন,তখন পুরো হলরুমে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।চোখের পানি আর কান্নার আওয়াজে স্তব্ধ হয়ে পুরো পরিবেশ। এমন কেউ বাকি ছিলো না কান্না ছাড়া।নির্মম বর্ননার সময় হাউ মাউ করে কান্নার ভেঙে পড়ে পুরো হলরুম।বক্তা,শ্রোতা,জেলা প্রশাসক সবাই হয়ে যায় বাকরুদ্ধ।
অতীত ইতিহাসে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এমন সভা কখনও হয়নি।স্মরণ সভাটিই স্মরণীয় সভা হয়ে থাকলো।
বক্তারা শপথ করে বললেন,আমরা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা স্বার্থক করতে দেশের জন্যে কাজ করে যাবো।আমাদের সংগ্রাম চলবেই,আমরা প্রয়োজনে আবার রক্ত দিবো তবে আর কোন ফ্যাসিস্ট মেনে নিবো না।প্রশসনে এখনও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দালালেরা ঘাপটি মেরে বসে আছে। এই আওয়ামী ভূত মুক্ত প্রশাসন চাই।পুলিশের এখনও ঐ গুলিকরা ফ্যাসিস্টদের দোরসরা বসে আছে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। হত্যার মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা সহ সকল অপরাধীদের বিচার দাবী করেন শহীদদের বাবারা ও আহত ছাত্র জনতা।
জেলা প্রশাসক ড.মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন,আমরা শহীদ ও সকল আন্দোলনকারী মহান বীরদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।আমরা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আহতদের পাশে আছি এবং থাকবো ইনশাল্লাহ। আমরা আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্যে যা করা প্রয়োজন তাই করবো।আমরা নতুন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো,যেখানে থাকবে না কোন বৈষম্য, দূর্নীতি,অবরাধ,দখলদারিত্ব, অবিচার-অন্যায়।আসুন সবাই মিলে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
সিভিল সার্জন মোকেছদুল মোমেনিন বলেন,যারা শহীদ তার মৃত না।বরং তারা জীবিত।এটা কোরআনের কথা।আমরা আপনাদের পাশে আছি।
গনঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, আমরা এখনো সুস্থ হয়ে উঠতে পারিনি ঠিক মতো চলাচল করতে পারিনা আমরা প্রায় সকলেই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। ভবিষ্যতে আমরা কী কাজ করব কীভাবে জীবন যাপন করবো জানি না,আমাদের বর্তমানই ঠিক মতো চলছে না,সরকারের কাছে সুদৃষ্টি আকর্ষন করছি যেন আমরা কোন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারি, সে বিষয়ে নজর রাখার জন্য।
গনঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা বলেন যারা নিহত হয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়,কিন্ত তাদের স্মৃতিচারণের জন্য মানিকগঞ্জের যেকোনো জায়গায় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ বানানোর জোর দাবি জানাচ্ছি । পরে শহীদদের আত্মার মাকফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচারনা করেন কোর্ট মসজিদের ইমাম মুফতি মোঃ রফিকুল ইসলাম।
Leave a Reply