নিজস্ব প্রতিবেদক:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের রাজৈর এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে দীর্ঘ দিনেও একটি সেতু নির্মাণ না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। ধলেশ্বরী নদীকে কেন্দ্র করে এর পূর্ব পারে গড়ে উঠেছে গোপালপুর বাজার। পাশেই রয়েছে দরগ্রাম সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদীর দুই পারেই রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বহু প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে রাত অবধি নদী পারাপার করতে হয় তাদের। নদীর দুই পারের লোকজনের একমাত্র ভরসা খেয়া পারাপার। তাদের দাবি, নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে রাজধানী থেকে মানিকগঞ্জ হয়ে দৌলতপুর, শিবালয়, নাগরপুর, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে বিকল্প যোগাযোগ সৃষ্টি হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রয়োজনীয় কাজে প্রচুর মানুষ খেয়া পারাপার হচ্ছে। নদীর কোনো পারেই খেয়াপারের যাত্রীদের জন্য ন্যূনতম কোনো সুব্যবস্থা নেই। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় খোলা আকাশের নিচে। বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। তারপরও জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে।
সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ জানান, এই পথে প্রচুর লোকজন চলাচল করে থাকে। নদীতে সেতুর অভাবে দুই পারের লোকজন চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। তবে এ বছরই এখানে ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার হবে। ৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এলজিইডির সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল করিম জানান, নদীতে সেতু নির্মাণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। চলতি অর্থবছরেই সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হবে।
কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল, আলামিন, রাজ্জাকসহ আরও অনেকের সঙ্গে। তারা বলেন, আমাদের বাড়ি নদীর পশ্চিম পারে। আমরা কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। প্রতিদিন নদী পার হয়ে বাজারে যেতে হয়। এই নদী আমাদের বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। নদীর কারণেই আমরা কৃষি পণ্যের সঠিক দাম পাই না। ঠিক সময়ে খেয়া পার না হতে পারলে দুধ বিক্রি করা যায় না। বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসতে হয়। কলেজ শিক্ষার্থী আসমা আক্তার পপি জানায়, খেয়া পার হতে না পারায় বহু দিন কলেজ করতে পারেনি সে।
খেয়া পারের লোকজন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, খেয়া নৌকায় উঠতে গিয়ে পোহাতে হয় বাড়তি ভোগান্তি। যে পথ দিয়ে খেয়া নৌকায় উঠতে হয় সেটি সবসময় কাদা-পানিতে নোংরা হয়ে থাকে। সেই কাদা-পানি মাড়িয়েই উঠতে হয় নৌকায়। বৃষ্টি নামলে ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই শুধু সেতু করার কথা বলেন জনপ্রতিনিধিরা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও সেতুর কোনো খবর নেই। অথচ যে জায়গায় দরকার নেই সেই জায়গায় সেতু বানানো হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে নদীতে একটি সেতু নির্মাণের জোর দাবি তাদের।
Leave a Reply