1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১১:৫৭ অপরাহ্ন

মশারির বাইরে ডেঙ্গু রোগী থাকায়, আতঙ্ক অন্য ওয়ার্ডে

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩
  • ১৩৮ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ। একই সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশের ৫৬ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ পৌনে দুইগুণ বাড়লেও রাজধানীর বাইরের হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ।

এদিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীরা মশারি ব্যবহার না করায় আতঙ্গে রয়েছে ওয়ার্ডের অন্য রোগীরা। আর চট্টগ্রামে ৪৯১টি প্রজননক্ষেত্র থেকে এডিস মশার বিস্তার হচ্ছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।

ময়মনসিংহ ব্যুরো জানিয়েছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রাজ্জাক (৫৪) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি গাজীপুরের মাওনা এলাকায় কাজ করতেন। তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২ জুলাই বিলকিস আক্তার (৩০) নামে আরও এক নারী মারা গেছেন। তিনি ধানমন্ডি এলাকায় বসবাস করতেন। তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরে।

এদিকে হাসপাতালে ভর্তি ৪টি ওয়ার্ডে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ডেঙ্গু রোগীরা মশারি ব্যবহার না করায় আতঙ্কে রয়েছে ওয়ার্ডের অন্য রোগীরা।

সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের ১৩, ১৪, ১৫ ও ২০ নং ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ডেঙ্গু রোগীরা। হাতেগোনা কয়েকজন রোগী মশারির ভেতরে, বাকিরা মশারির বাইরে স্বজনঘেরা। রোগীদের ভাষ্য, ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের একটি ওয়ার্ডে স্থানান্ত করা হলে অন্য রোগীরা স্বস্তি পেত। তারা জানান, ডেঙ্গু রোগীদের মশারির নিচে রাখা হচ্ছে না। ফলে ওই সব ওয়ার্ডের অন্য রোগীরা ডেঙ্গুতে আতঙ্কে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের ডেঙ্গু ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. ফরহাদ হোসেন হীরা জানান, প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে মেডিসিন ইউনিটের আওতায় ৪টি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ডেঙ্গু রোগী। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তাদের জন্য আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, চট্টগ্রামে মশার ৪৯১টি প্রজননক্ষেত্র থেকে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। যেগুলোকে চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫২টি মশার প্রজননস্থল রয়েছে চসিকের ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডে। চসিকের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত জরিপে এসব প্রজননস্থল চিহ্নিত করা হয়। আর এসব প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে মাঠে নামছে চসিক।

শনিবার দুপুরে এ তথ্য জানান চসিকের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম মাহী। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে মশার প্রজনন এবং ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার বিবেচনায় ৪৯১টি হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে অনাবাদি জমি, নালা ও ঝোপঝাড়, ডোবা, খাল, পুকুর-জলাশয় ও পরিত্যক্ত বাড়ি রয়েছে। নগরবাসীর অভিযোগ, ক্রাশ প্রোগ্রাম উদ্বোধন ছাড়া আর কোথাও এর কার্যক্রম দেখা যায় না। নগরীর কোথাও মশক নিধন ওষুধ ছিটানো হয়েছে, এর কোনো তথ্য নেই নগরবাসীর কাছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, মশক নিধনে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এখন মশার হটস্পটগুলোতেও ওষুধ ছিটানো হবে। মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা গেলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামে হঠাৎ ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। জেলার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিট চালু না থাকলেও বর্তমানে মেডিসিন বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গত ১০-১২ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে মোট ৫ জন। এদের মধ্যে সবাই কোনো না কোনোভাবে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে চাকরিরত। তার মধ্যে একজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে প্রথম একজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম পাপ্পু (২৫)। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ঢাকাচন্দ্রগাঁতি গ্রামে তার বাড়ি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মারা যান তিনি।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ জানান, গত ২ জুলাই পাপ্পুকে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও জানান, গত জুন মাস থেকে এ হাসপাতালে ডেঙ্গ জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে। শনিবার ৮ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন।

নড়াইল প্রতিনিধি জানান, নড়াইলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ঈদের পরে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হয়েছে। তবে আক্রান্ত রোগীর অধিকাংশই জেলার বাইরে থেকে আসা। নড়াইল সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, অতিরিক্ত বেড না থাকায় একই জায়গায় অন্য রোগীদের সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা করতে হচ্ছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ডেঙ্গু পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।

নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. সাজেদা বেগম পলিন জানান, এ পর্যন্ত মোট ৫৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। বর্তমানে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি ৭ জন ও লোহাগড়া হাসপাতালে একজন। ভর্তি সব রোগীর অবস্থা উন্নতির দিকে।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :