1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২০ পূর্বাহ্ন

ভ্রমনে যাত্রীদের মেট্রোরেলের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ২৮১ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: যাত্রীদের ভ্রমণের সময় মেট্রোরেলের নিয়ম ও নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যাত্রীদের কাছে আমার অনুরোধ ভ্রমণের সময় মেট্রোরেলের নিয়ম ও নির্দেশিকা মেনে চলুন। এটি একটি আধুনিক প্রযুক্তি ভিত্তিক ট্রেন। সুতরাং, প্রত্যেকেরই এটি ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত।

 রোববার (৯ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মেট্রোরেল প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী যাত্রীদের মেট্রোরেল পরিষ্কার রাখতে এবং এখানে-ওখানে আবর্জনা না ফেলতে, বরং প্রত্যেককে ট্রেনে বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা ব্যবহার করার আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, এই মেট্রোরেল ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এটি চলতেই থাকবে। সুতরাং, নিয়ম ও নির্দেশিকা অনুসরণ করে এটি ব্যবহার করুন। প্রত্যেকেরই এটি ব্যবহারের সময় মনে রাখা উচিত।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে বিশেষ করে সংসদ ভবন এলাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে সে বিষয়েও জানান।

তিনি বলেন, দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে সরকার নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। আমরা যেকোনো কাজে (উন্নয়ন প্রকল্প) যাওয়ার সময় চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি হয়েছিল। সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সেই প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করেছি।

মেট্রোরেল প্রকল্প সম্পর্কে সরকারপ্রধান বলেন, সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় প্রাথমিকভাবে বিজয় সরণির মধ্য দিয়ে মেট্রোরেল রুট তৈরি করা হয়েছিল, যেখানে আমার ঘোর আপত্তি ছিল। তা হলে আমাদের তেজগাঁও বিমানবন্দর বন্ধ করে দিতে হবে, যেটির ৯ হাজার ফুট দীর্ঘ রানওয়ে রয়েছে। একটা তৈরি করা এয়ারপোর্ট সেটা নষ্ট হোক আমি চাইনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৮ সালের বন্যায় কুর্মিটোলা বিমানবন্দর ডুবে যায়। ফলে ঐ বন্দরের সব ত্রাণসামগ্রী তেজগাঁও বিমানবন্দর দিয়ে এসেছিল। তাছাড়া এখানে ঘন কুয়াশায় কখনো কখনো বিমান চলাচল ব্যবহৃত হয়। গতকালও সাতটি প্লেন কোলকাতায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু তেজগাঁও বিমানবন্দরটা কখনো বন্যা কবলিত হয় না এবং এখানে কুয়াশার পরিমাণটাও খুব কম। কিন্তু এই এয়ারপোর্টকে বন্ধ করে দিয়ে এখানে হাউজিং নির্মাণের প্রস্তাবও আমাদের অনেক জ্ঞানী-গুণীরা দিয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, যে সরকার যখন প্ল্যানেটোরিয়ামের জন্য ডিজাইন করেছিল, তখন এর গম্বুজটা অনেক উপরে করার কথা ছিল। আমরা সেই উচ্চতা কমিয়েছি। যদি উচ্চতা ৬০-৭০ ফুট অতিক্রম করে তবে এটি (তেজগাঁও বিমানবন্দরের) এয়ার ফানেলে পড়ে যাবে। বিমান ওঠানামার জায়গাটা কিন্তু রাখতে হবে।

মেট্রোরেলের রুট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি পুরানো অ্যালাইনমেন্ট কার্যকর করা হয় তবে সরকারকে ২২টি ভবন ভেঙে ফেলতে হতো। সে কারণেই আমি খামার বাড়ি এলাকা ব্যবহার করে নতুন রুট প্রস্তাব করেছি। যদিও আমাদের আঁতেল শ্রেণির তীব্র আপত্তি ছিল সংসদ ভবন নাকি ধ্বংস হয়ে যাবে, খেজুর বাগান নষ্ট হবে। তাছাড়া, এই খেজুর বাগান আমাদেরই লাগানো ছিল।

তিনি জানান, লুই কানের ডিজাইন নিয়ে এসে সে সময় তিনি দেখলেন সংসদ ভবনের পাশে যে দুটি মাঠ রয়েছে তার জায়গা এই ডিজাইনে পড়ে না। তাছাড়া এই বাগানও নষ্ট হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেল রুট সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সেই সময়, মেট্রোরেলের জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনটি তার বাঁক এবং অবতরণের জায়গার জন্য ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলেছিলেন যে, এতবড় স্টেশন ভেঙে আরেকটি নির্মাণ করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করেছি, স্টেশনটিকে অক্ষত রেখে আমরা কীভাবে এটি করতে পারি, প্রয়োজনে মেট্রোরেল স্টেশনের উপর দিয়ে যাবে বা তার বাঁক নেয়ার জন্য অন্য জায়গা খুঁজে নেবে। এখন এটি সেইভাবে বাস্তবায়ন করছে।

শেখ হাসিনা আরো উল্লেখ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ নষ্ট করবে বলে শিক্ষার্থীরা বাধা দিয়েছে। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি যে মেট্রোরেলের কারণে তারা কোন ঝামেলার সম্মুখীন হবে না, কারণ এটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একটি কোণ দিয়ে যাবে, যার কোনো শব্দ থাকবে না, স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলবে।

হলি আর্টিজান (বেকারি) আক্রমণের পরে এটির কাজ বন্ধ করা হয়েছিল যেখানে এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ৭ জাপানি পরামর্শক নিহত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই সময়ে সব জাপানিরা তাদের স্বদেশে ফিরে গিয়েছিল এবং তিনি নিজে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের কাছে তার সমবেদনা প্রকাশ করেছিলেন এবং তার জাপান সফরে সাতজন নিহত জাপানি কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি যা যা করণীয় তার সরকার তা করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাপান সরকার তার অনুরোধ বিবেচনায় নেয়।

তিনি স্মরণ করেন যে, এটি আবার কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম ব্যবহার করে আমাদের প্রকৌশলীরা সঙ্গে মিলে কাজটি ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে গেছে।

পদ্মাসেতু নিয়েও নানা ঢালাও সমালোচনা হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই সেতুতে কে উঠবে আর কোথা থেকে এর টাকা উঠবে; যারা বলেছিল তাদের বলতে চাই- এরই মধ্যে কয়েকমাসের মধ্যে ৪০০ কোটি টাকা উঠে গেছে। আসলে প্রত্যেকটা কাজে বাধা দেওয়াটা আমাদের কিছু মানুষের চরিত্র।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মতো এমন একজন ব্যক্তিত্বকে আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ায় তিনি তাকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি মেট্রোরেল বাস্তবায়নে জাপান সরকারকে, মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় জনগণকেও ধন্যবাদ জানান।

তিনি জানান, আজকে তিনি মানুষের মাঝে বিপুল উৎসাহ ও উচ্ছ্বাস দেখছেন এই মেট্রোরেল নিয়ে।

তিনি আরো বলেন, যাত্রী ও হজযাত্রীদের সুবিধার্থে সরকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করছে। আমরা আন্ডারপাসে বিনা ঝামেলায় চলাচলের জন্য আধুনিক সব সুবিধার ব্যবস্থা করবো।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :