অনলাইন ডেস্ক: গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো- সামগ্রিকভাবে আমাদের জনগণের উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং অর্থনীতির উন্নয়ন। এই ইস্যুতে আমি মনে করি আমাদের ২টি দেশ একসঙ্গে কাজ করছে। এতে শুধু ভারত ও বাংলাদেশের মানুষই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ উন্নত জীবন পেতে পারে। এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
রাষ্ট্রপতি ভবনে তিনি আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। আমি যখনই ভারতে আসি, এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের, বিশেষ করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের অবদানের কথা আমরা সবসময় স্মরণ করি। আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করছি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করি এটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হবে এবং আমাদের মূল লক্ষ্য অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন করা এবং আমাদের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা – যা আমরা করতে সক্ষম হবো। বন্ধুত্বের মাধ্যমে আপনি যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেন। সুতরাং, আমরা সবসময় এটিই করি।’
হিন্দি ও বাংলা ভাষায় কথা বলার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানের জন্যও ধন্যবাদ জানান।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছান শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর ভারতীয় নেতৃবৃন্দ এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেখ হাসিনাকে পরিচয় করিয়ে দেন মোদি।
সোমবার নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর পরপরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এসময় তারা বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। পরে দিল্লির নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহও পরিদর্শন করেন শেখ হাসিনা।
এএনআই বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে, ভারত ও বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তব ফলাফল অর্জন করেছে। এর মধ্যে ভূমি ও সমুদ্রসীমার সীমানা নির্ধারণ, নিরাপত্তা, যোগাযোগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, সামুদ্রিক অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য।
এর আগে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪০মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম জারদোশ এবং দেশটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান স্বাগত জানান।
করোনা মহামারির পর প্রথমবারের মতো ভারতে শেখ হাসিনার এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।
প্রধানমন্ত্রীর চারদিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা আলোচ্যসূচির শীর্ষে রয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া সফরের এজেন্ডার শীর্ষে উভয় দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও উন্নত করা, আঞ্চলিক সংযোগের উদ্যোগ সম্প্রসারণ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টিও রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও এই সফরে ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা।
Leave a Reply