অনলাইন ডেস্ক: কয়েক বছর ধরে প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনাম হচ্ছেন মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানি। এর কারণ কেবল তাদের সম্পদ বাড়ছে বলে নয়, একে অপরের সঙ্গে দুই ধনকুবেরের প্রতিযোগিতাও বেশ আলোচ্য বিষয়। পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে ক্ষমতাধর, প্রভাবশালী ও ধনী ভারতীয় যে তারাই।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুসারে, ৬০ বছর বয়সী গৌতম আদানির সম্পদের পরিমাণ ১৩ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। তিনি এই মুহূর্তে ভারতের এক নম্বর ও বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী। আর মুকেশ আম্বানির সম্পদের পরিমাণ নয় হাজার কোটি ডলার। তিনি ভারতের দ্বিতীয় এবং বিশ্বের ৯ম শীর্ষ ধনী।
এই সম্পদের পাহাড়ে চড়ার পথে আদানি ও আম্বানি উভয়েই পাশে পেয়েছেন তাদের সহধর্মিনীকে। নীতা আম্বানি ও প্রীতি আদানি- ভারতের দুই শীর্ষ ধনীর স্ত্রী। তাদের মধ্যে বহু বিষয়ে যেমন মিল রয়েছে, তেমনি কিছু পার্থক্যও স্পষ্ট।
চলুন জেনে নেওয়া যাক দুই ধনী রমণীর খুঁটিনাটি কিছু তথ্য-
ব্যক্তিগত জীবন
নীতা আম্বানির বয়স বর্তমানে ৫৯ বছর। তার জন্ম মুম্বাইয়ে। ১৯৮৫ সালে মুকেশ আম্বানির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি। তাদের তিন সন্তান- ইশা, আকাশ ও অনন্ত।
গৌতম আদানির স্ত্রী প্রীতির বয়স ৫৭ বছর। তাদের কোনো মেয়ে নেই। দুই ছেলের নাম করণ ও জিৎ।
উভয়ের বিয়ে পারিবারিকভাবে
পুত্রের সঙ্গে নীতার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন মুকেশের বাবা ধীরুভাই আম্বানি। শোনা যায়, তিনি কোনো একটি অনুষ্ঠানে নীতাকে নাচতে দেখেই পছন্দ করে ফেলেন। এরপর তাকে ডেকে পুত্রের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেন।
মুকেশ তার জন্য পাত্রী খুঁজতে বাবাকে অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু শর্ত ছিল, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন। তবে দেখা করার পর আর ভাবতে হয়নি। রাস্তায় চলন্ত গাড়ির ভেতরই মুকেশ নীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
প্রীতিও জানিয়েছেন, গৌতমের সঙ্গে তার বিয়ে পরিবারের অভিভাবকদের উদ্যোগেই হয়েছিল। সেসময় দন্তচিকিৎসা বিষয়ে পড়াশোনা করছিলেন প্রীতি। তবে পাস করেছেন বিয়ে হওয়ার পরে।
নীতা অমিতব্যয়ী, প্রীতি হিসেবি
নীতা আম্বানি তার জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য পরিচিত। শোনা যায়, তিনি নাকি এক জোড়া জুতা দুইবারের বেশি পরেন না। নীতার সংগ্রহে জিমি চো, মার্লিন ও গার্সিয়ার মতো ব্র্যান্ডের জুতা রয়েছে। একবার মনি-মুক্তা খচিত ৫০ হাজার ডলার দামের শাড়ি পরে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। এটি ছিল বিশ্বের অন্যতম দামি শাড়ি।
সেই তুলনায় অনেকটাই সাদামাটা জীবনযাপন করেন প্রীতি আদানি। বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনীর ব্যক্তি স্ত্রী হয়েও সাধারণ শাড়ি ও সাজসজ্জায় থাকতেই পছন্দ করেন তিনি।
দুজনেই দাতব্য কাজে জড়িত
ভারতে নারী অধিকার ও কন্যা শিশুদের শিক্ষার প্রসারে কাজ করার জন্য খ্যাতি রয়েছে নীতা আম্বানির। তিনি রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ও ধীরুভাই আম্বানি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারপারসন এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের অন্যতম পরিচালক। ২০১৯ সালে ফেমিনাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নীতা বলেছিলেন, তিনি নিজেকে ‘বহু বাচ্চার মা’ হিসেবে ভাবেন।
প্রীতি দন্তচিকিৎসায় ডিগ্রিধারী। তবে গৌতমকে বিয়ের পর তিনি আদানি ফাউন্ডেশনে নজর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবনমানসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে। ২০০১ সালে গুজরাটে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির পর মুন্দ্রায় দরিদ্রদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন প্রীতি আদানি। সাধারণ ঘরে জন্ম নেওয়া এই নারী মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান বলে জানিয়েছেন।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ব্লুমবার্গ
Leave a Reply