অনলাইন ডেস্ক: বাজার থেকে হঠাৎ ‘উধাও’ হয়ে গেছে চিনি। কোথাও পাওয়া গেলেও সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না। তারমধ্যে প্যাকেটজাত চিনি তো নেই বললেই চলে। ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা জনগণকে জিম্মি করে ছিনিমনি করছে। নিজেদের ইচ্ছা মতো দাম বাড়াচ্ছে। তবে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন কমেছে, যার কারণে বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখে গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চিনির দাম। সম্প্রতি খুচরা পর্যায়ে কেজিপ্রতি খোলা চিনি ৯৫ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত চিনি কিছু পাওয়া গেলও ১০০ টাকার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বস্তায় বেড়েছে ৩৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে খুচরা দোকানদারদের সেই পুরোনো অভিযোগ। বেশি দামে কেনা তাই বেশি দামে বিক্রি। পাইকাররা বলছেন, মিলগেট থেকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।
বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আবুল হাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারে চিনির সরবরাহ নেই বললেই চলে। মিল থেকেও চিনি কিনতে পারছি না। মিলাররা জানিয়েছেন, গ্যাস সংকটের কারণে চাহিদা মতো চিনি উৎপাদন করতে পারছে না। সরকারি দামে চিনি বিক্রি করলে তাদের লোকসান গুণতে হবে।
সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে চিনির উৎপাদন কমে গেছে। আগে মিলগুলোতে ২৪ ঘণ্টাই গ্যাস থাকত। এখন ৪ ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। এর প্রভাব চিনি উৎপাদনের ওপরে পড়েছে।
মেঘনা গ্রুপের ডিলার দেলোয়ার হোসেন বলছেন, কোম্পানিতে চিনি সংকটের কারণে আমরা চিনি পাচ্ছি না। তাই খুচনা বাজারেও দিতে পারছি না। কোম্পানি বলছে, গ্যাস সংকটের কারণে চিনির উৎপাদন কমে গেছে।
মেঘনা গ্রুপের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, চিনির কাঁচামালের সংকট নেই। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ কম হওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে।
এদিকে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে রাজাধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়াও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তর।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, শিগগিরেই চিনির বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় রিফাইনারি মিলগুলোতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে চিনির বাজারে স্বাভাবিক করা হবে।
এ ছাড়া যারা পাইকারি ও ডিলার পর্যায়ে চিনি আটকে রেখে সংকট সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি বলেও জানান তিনি।
সূত্র:আরটিভি
Leave a Reply