অনলাইন ডেস্ক: ১৯ দিনের ব্যবধানে আবারও বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। এবার নির্বাহী আদেশে গ্রাহকের পাশাপাশি পাইকারি পর্যায়েও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। বাড়তি দর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি গেজেট আকারে প্রকাশ করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এ দফায় গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ এবং পাইকারি পর্যায়ে ৮ শতাংশ দাম বাড়িয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। মাত্র ১৯ দিন আগে ১২ জানুয়ারি গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। অন্যদিকে বিইআরসি সর্বশেষ গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়িয়েছিল। তখন ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা থেকে গড়ে ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ৬.২০ টাকা করা হয়।
নির্বাহী ক্ষমতায় দেওয়া আদেশে পল্লী বিদ্যুৎতায়ন বোর্ডের পাইকারি দর ২৩০ কেভিতে ৮.১০ টাকা, ১৩২ কেভিতে ৮.১৩ টাকা এবং ৩৩ কেভিতে ৫.৮৯ টাকা করা হয়েছে। ২৩০ ও ১৩২ কেভিতে অভিন্ন দর নির্ধারণ করা হলেও ৩৩ কেভিতে ভিন্ন ভিন্ন ধরা হয়েছে। ডিপিডিসির ৩৩ কেভিতে ৮.২২ টাকা, ডেসকো ৮.২৪ টাকা, ওজোপাডিকো ৭.১২ টাকা এবং নেসকোতে ৬.৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিন দফায় গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘটনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী লাইফ লাইন (৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী) গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম এর আগে ১৯ পয়সা বাড়িয়ে ৩.৯৪ টাকা করা হয়েছিল। এবার আরও ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৪.১৪ টাকা করা হয়েছে। প্রথমধাপে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যমান দর ৪.৪০ টাকা বাড়িয়ে ৪.৬২ টাকা, দ্বিতীয় ধাপে ৭৬-২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যমান দর ৬.০১ বাড়য়ে ৬.৩১ টাকা, ২০১-৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যমান দর ৬.৩০ টাকা বাড়িয়ে ৬.৬২ টাকা ৩০১-৪০০ ইউনিটের বিদ্যমান দর ৬.৬৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬.৯৯ টাকা, ৪০১-৬০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যমান দর ১০.৪৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০.৯৬ টাকা, সর্বশেষ ধাপ ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে ব্যবহারকারীদের বিদ্যমান দর ১২.০৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২.৬৩ টাকা করা হয়েছে।
কৃষি সেচে গত ১২ ডিসেম্বর ২১ পয়সা বাড়িয়ে ৪.৩৭ টাকা করা হয়েছিল, এবার আরও ২২ পয়সা বাড়িয়ে ৪.৫৯ টাকা করা হয়েছে। শিক্ষা, ধর্মীয়, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে ৬.৩২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬.৬৪ টাকা, রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পে ৮.০৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮.৪৯ টাকা, বাণিজ্যিক ও অফিসের বর্তমান দর ফ্ল্যাট রেটে ১০.৮২ টাকা বাড়িয়ে ১১.৩৬ টাকা, অফ-পিকে ৯,৭৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০.২২ টাকা পিকে ১২.৯৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩.৬৩ টাকা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্পে ( নিম্নচাপ) ফ্ল্যাট রেটে ৯.৪১ টাকা, অফপিকে ৮.৪৬ টাকা, পিকে ১১.২৯ টাকা দর ধরা হয়েছে।
মধ্যমচাপে শিল্প গ্রাহকদের ফ্ল্যাট রেটে ৯.৪৩ টাকা, অফ পিকে ৮.৪৯ টাকা, পিকে ১১.৭৮ টাকা করা হয়েছে। উচ্চচাপ (৩৩ কেভি) গ্রাহকদের ফ্ল্যাট রেটে ৮.৮৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯.৩১ টাকা, অফ-পিকে ৭.৯৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮.৩৯ টাকা এবং পিকে ১১.০৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১.৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের উপর গত ১৮ মে গণশুনানি গ্রহণ করে বিইআরসি। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বর্তমান দর ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৫৮ টাকা করার আবেদন করেছিল। বিপিডিবির পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলেছিল, চাহিদা মতো গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে গেছে।
২০১৯-২০ অর্থ বছরে বিদ্যুতে গড় উৎপাদন খরচ ছিল ২.১৩ টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১৬ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, কয়লার মূসক বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালে ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে ৪.২৪ টাকায়। পাইকারি দাম না বাড়লে ২০২২ সালে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান হবে। ওই শুনানির পর ১৯.৯২ শতাংশ পাইকারি দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
Leave a Reply