অনলাইন ভ্রমন ডেস্ক: প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ও বিপদসংকুল পর্বতশৃঙ্গ ‘কে-টু’ জয় করে দেশে ফিরেছেন পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজরীন। ফিরেই পর্বতারোহণের ভয়ংকর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ভাগ্য সহায়তা করেছে, তাই ফিরে এসেছি।
তিনি বলেন, অক্সিজেনের ভয়াবহ স্বল্পতার কারণে এ পর্বতশৃঙ্গ আরোহণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে আরোহণ করতে গেলে অনেক মানুষের প্রয়োজন হয়। আমার আরোহণ করা সবচেয়ে দুর্গম পর্ব এটি। যেখানে বেশ কয়েকবার পাথরে আঘাত পেয়েছি। ভাগ্য সহায়তা করেছে, তাই ফিরে এসেছি।
বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এসময় তিনি দুই মাসব্যাপী কারাকোরাম অভিযানের রোমাঞ্চকর যাত্রা নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কে-টু’কে স্থানীয় ভাষায় ‘ছোগোরি’ বলা হয়। যা পর্বতের রাজা হিসেবে পরিচিত। প্রতি পদক্ষেপে সেখানে মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে। একবারেই ‘কে-টু’ জয় করে ফেরত আসতে পেরেছেন এমন অল্প কিছু পর্বতারোহীর মধ্যে আমরা রয়েছি। এমনও অনেক পৃথিবী বিখ্যাত পর্বতারোহী রয়েছেন যারা বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করেও এ পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে পারেনি।
ওয়াসফিয়া নাজরীন আরও বলেন, এ অভিযানের স্পন্সর রেনাটা লিমিটেডকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার এই মিশনের ওপর ভরসা রেখেছেন এবং সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করেছেন। এ সাফল্যের জন্য আমার দলের প্রতি কৃতজ্ঞ। দলে যারা ছিলেন, তাদের বেশ কয়েকজনকে এ মুহূর্তে বিশ্বের সেরা পর্বতারোহী হিসেবে মনে করা হয়। যারা আমার মঙ্গল কামনা এবং ভরসা করেছে সবাইকে ধন্যবাদ।
প্রসঙ্গত, কারাকোরাম রেঞ্জে অবস্থিত ‘কে-টু’ পর্বত ৮,৬১১ মিটার উঁচু এবং পর্বতারোহীদের আরোহণের জন্য এভারেস্টের চেয়েও দুর্গম বলে সবার কাছে পরিচিত। বিপদসংকুল পরিবেশ, প্রায় পিরামিড-সদৃশ ঢাল এবং অনিশ্চিত আবহাওয়ার এই পর্বতশৃঙ্গে পা রাখতে পেরেছেন মাত্র ৪শ পর্বতারোহী, যাদের অনেকেই আর নিচে নামার সুযোগ পাননি।
ওয়াসফিয়া নাজরীন প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পর্বতারোহণ এবং ট্রেকিং করার অনুমতি পান। গত ২২ জুলাই তার দলের সঙ্গে ‘কে-টু’ পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করেন। তার দলের অনেকেই পৃথিবী বিখ্যাত পর্বতারোহী। যাদের মধ্যে মিংমা তেনজি শেরপা, মিংমা ডেভিড শেরপা এবং নির্মল পুরজাকে নিয়ে ১৪ পিকস নামে একটি ডকুমেন্টারি করেছে নেটফ্লিক্স।
Leave a Reply