1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
ঘণকুয়াশায় সাড়ে ৫ঘন্টা আরিচা-কাজিরহাট এবং ৪ ঘন্টা পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ায় যা থাকছে ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হরিরামপুরে ডেবনেয়ার গ্রুপের উদ্যাগে দশ হাজার কম্বল বিতরণ ঘিওরে ক্যান্সার আক্রান্ত নারীকে জবাই করে হত্যা  কান্ঠাপাড়া হাট বাজার পরিচালনা কমিটির  পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিস বন্ধ শিবালয়ে যমুনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে গ্রেপ্তার ২ শিবালয়ে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে গৃহকর্তার সর্বস্থ লুটে নেয়া চক্রের এক সদস্য আটক শিবালয়ে ৭ বছরের শিশু মাহিম উদ্ধার, দু’জন গ্রেপ্তার  

প্রাণ বাঁচাতে নিজ  এলাকা ছাড়ছেন  সীমান্তে বসবাসকারিরা

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৩২৭ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: বালুখালী আশ্রয়শিবিরের ৮-ই ব্লকের বাসিন্দা রোহিঙ্গা সদস্য নূরুন্নবী (৬৫)। পেটের দায়ে ধানক্ষেতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে এসেছিলেন বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলী গ্রামের বাদশা মিয়ার বাড়িতে। দুপুর পৌনে ১টার দিকে রান্নাঘরে কাজ করছিলেন মালিকের স্ত্রী হোসনে আরা (৫৫)। তখন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘুমধুম-তুমব্রু ও বালুখালী সীমান্ত দিয়ে আকাশে টহল দিচ্ছিল কয়েকটি হেলিকপ্টার। ওই পরিস্থিতিতে আকাশে এবং ভূমিতে মুহুর্মুহু মর্টারশেল নিক্ষেপ ও গুলি ছুড়তে থাকে মিয়ানমারের বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)। এর মধ্যেই একটি মর্টারশেল হঠাৎ বাদশা মিয়ার রান্নাঘরের ওপর এসে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রোহিঙ্গা সদস্য নূরুন্নবীর। আর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান গৃহবধূ হোসনে আরা। আহত হয় এক শিশু।

ওপার থেকে আসা মর্টারশেল বিস্ফোরণে বাংলাদেশি নারী হোসনে আরা (৫৫) ও রোহিঙ্গা সদস্য নূরুন্নবী নিহত এবং একটি শিশু আহত হওয়ার তথ্য সময়ের আলোকে নিশ্চিত করেন র্যাব-১৫ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি আবু সালাম চৌধুরী। তিনি জানান, নূরুন্নবী উখিয়া কুতুপালং ৮ নম্বর ক্যাম্পের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। আহত শিশু হোসনে বেগমের নাতি।

এ ছাড়া সীমান্ত লাগোয়া মিয়ানমার অংশে গত শনিবার রাত থেকে চলা শর্টাগান, রাইফেলের গুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের শব্দে এপারে সীমান্তবর্তী এলাকায় ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছাড়ে সব বয়সি বাসিন্দা।

এরআগে রোববার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত গোলাগুলি চললেও রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। এরপর ফের শুরু হয় গোলাগুলি। গুলির শব্দে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটায়। রাত আড়াইটা থেকে পুরো সীমান্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করলেও সোমবার দুপুর থেকে আবারও উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। ওই পরিস্থিতিতে দুপুর পৌনে ১টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতেই  দুজন নিহত হন।

অন্যদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদের নিরস্ত্র করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এদের মধ্যে আরও ৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের উখিয়া, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বিজিবির তত্ত্বাবধানে মোট ৯ জনকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে রোববার রাতে দুজন এবং সোমবার সকালে ৭ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে কঠোর নিরাপত্তায় তাদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ সময়ের আলোকে বলেন, দুপুরে বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে হোসনে আরা ও এক রোহিঙ্গা শ্রমিক কাজ করছিলেন। কাজ শেষে ক্ষেতসংলগ্ন বাড়িতে দুপুরের খাবার খেতে বসেন তারা। এ সময় মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল এসে পড়ে সেখানে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু রোহিঙ্গা শ্রমিকের। গুরুতর আহত অবস্থায় হোসনে আরাকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। নিহত ওই রোহিঙ্গা নাগরিক শ্রমিক হিসেবে ক্ষেতে কাজ করছিলেন।

অনুপ্রবেশ করেছে একই পরিবারের ৫ জন : মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলমান সংঘাতে আতঙ্কিত হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছিল দেশটির সীমান্তসংলগ্ন মংডু জেলার একটি রোহিঙ্গা পরিবার। তবে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) পরিবারটিকে পুশব্যাক করেছে।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে তিন শিশুসহ ৫ সদস্যের রোহিঙ্গা পরিবারটি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, হোয়াইক্যং উলুবনিয়া পয়েন্ট দিয়ে একটি রোহিঙ্গা পরিবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। পরে বিজিবি তাদের পুশব্যাক করে। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

তবে বাপ্পি নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ওপারে মিয়ানমারের সীমান্তের কুয়াইঞ্চপং এলাকায় আরও ৩ থেকে ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।

পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ : এদিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় চলমান অস্থিরতার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা বিদ্যালয়গুলো হলো- বাইশপারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আক্তারুন্নাহার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সীমান্তে আতঙ্ক : বিকট গুলি ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্কের ছাপ দেখা গেছে এলাকাবাসীর মধ্যে। রোববার রাত পৌনে ১১টা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত নির্ঘুম রাত কেটেছে সীমান্তঘেঁষা ঘুমধুম, তুমব্রু, বালুখালী ও উলুবুনিয়াবাসীর। রোববার রাত ২টা পর্যন্ত গোলাগুলি বন্ধ হলেও ফের বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সীমান্তের অদূরে মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান আকাশে চক্কর দিতে দেখা গেছে বলে জানান স্থানীয়রা। তারা জানান, দুপুর ১২টা থেকে বালুখালী ঘুমধুম তুমব্রু এলাকায় হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে ওপারের গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তে বর্ডার গার্ড পুলিশ ক্যাম্প পুরোপুরি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি।

অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছে ৩ জন বাংলাদেশি। আহতরা হলেন- কোনার পাড়ার বাসিন্দা জোতিষ্ট ধরের ছেলে প্রবীন্দ্র ধর (৫০), রহিমা বেগম ( ৪০) ও শামশুল আলম।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ আরও জানান, একশ বছর বয়সি মানুষজনও আছে বর্ডারে, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তারা কখনো দেখেননি। এখন আতঙ্কে আর নিরাপত্তাহীনতায় সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, সীমান্তে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সীমান্তঘেঁষা গ্রামের লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ আতঙ্কিত মানুষ তাদের আত্মীয়দের বাসায় চলে গেছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। সুত্র: সময়ের আলো

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :