অনলাইন ডেস্ক: পরিবেশ সুরক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর আহবান জানিয়েছেন উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশ সুরক্ষায় জাতীয় বাজেট বিশেষ বরাদ্দ করেছে, কিন্তু সেই বরাদ্দ ব্যয়ের সুনিদিষ্ট খাত নির্ধারণ করা হয়নি। বাজেট বাস্তবায়নে সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের পাশাপাশি স্থানীয় জনগনকে যুক্ত করতে হবে।
শনিবার (৮ জুন) পিএসডিআই কনসালটেন্সি, এসেড হবিগঞ্জ ও শেয়ার দ্যা প্লানেট আয়োজিত ‘পরিবেশ সুরক্ষা ও বাসযোগ্য সবুজ প্রথিবীর জন্য প্রয়োজন বহুমূখী ও সমন্বিত উদ্যোগ’ শীর্ষক অনলাইন সংলাপে এ সব কথা বলেন তারা।
পিএসডিআই কনসালটেন্সি’র চেয়ারপার্সন মো. ইসহাক ফারুকীর সভাপতিত্বে সংলাপে বক্তৃতা করেন অ্যাসেড হবিগঞ্জের প্রধান নির্বাহী জাফর ইকবাল চৌধুরী, ফেইথ ইন একশনের নির্বাহী পরিচালক নৃপেন বৈদ্য, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, উপমা নারী কল্যাণ সংস্থা কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক পাপিয়া দে, পিপল্স ভয়েস চট্টগ্রামের সভাপতি শরীফ চৌহান, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেসন-এর ফ্যাকাল্টি কোঅর্ডিনেটর সাইং সাইং উ নিনি, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা খাইরুল মামুন মিন্টু এবং উন্নয়ন গবেষক ও নৃবিজ্ঞানী তুহিন সরকার।
উন্নয়ন গবেষক তুহিন সরকার বলেন, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল সম্পুর্ণভাবে ভূরাজনৈতিক জটিলতার শিকার। ফলে ক্রমাগত নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে যা সম্পুর্ণভাবে কৃষিঅর্থনীতি ও মানুষের জীবন জীবিকার উপর প্রভাব ফেলছে। উত্তরাঞ্চরের কৃষির অন্যতম নিয়ামক হচ্ছে তিস্তা নদী, নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারনে ক্রমান্বয়ে মরুময়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে সরকার গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদী সংকটের দিকে নিয়ে যাবে। কৃষি শ্রমিকরা স্থাানচূত হচ্ছে ও নতুন পেশা বেছে নিচ্ছে, এ সমস্যা হতে উত্তরনে শুধু বাংলাদেশের কথা ভাবলে হবে না, এটিকে আঞ্চলিক সমস্য হিসেবে দেখতে হবে ও আন্তঃদেশীয় নদী সম্পর্কিত চুক্তিগুলোর বাস্তবায়ন সবচেয়ে জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে জাফর ইকবাল চৌধুরী বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলের মধ্যে হাওর এলাকা অন্যতম, অথচ এটি সবচেয়ে উপেক্ষিত। মোট খাদ্যশস্যের মোট ৫ ভাগের ১ ভাগ আসে হাওর এলাকা থেকে। দেশের খাদ্যে চাহিদা মেটানোর অন্যতম সোর্স হচ্ছে হাওর। হাওরের নির্দিষ্ট একটি এলাকা প্রতি বছরই বিশেষ সময়ে পনির নীচে থাকে। যা মূলতঃ প্রতিবেশী দেশের মানুষের প্রকৃতির উপর অত্যাচারের কারনে। সামগ্রীকভাবে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পণায় ঘাটতি আছে, নদী ও খালে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে, উজানের পানির কারনে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, যা প্রায় ২৫ শতাংশ খাদ্যশস্য নষ্ট হচ্ছে যা সার্বিক অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলছে। এজন্য পরিবেশ সুরক্ষায় খাল ও বিল গুলোর পুণঃখননের ব্যাবস্থা করা দরকার।
ঘূর্ণিঝড় রোমালের কারণে উপকূলীয় এলাকার জীবন জীবিকা চরম ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে নৃপেন বৈদ্য বলেন, দূর্যোগ বিবেচনায় বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা অনুদানের পরিবর্তে লোন হিসেবে দিতে আগ্রহী। যেখানে এই জলবায়ু পরিবর্ত
তাদের দায় সবচেয়ে বেশি। উন্নয়নশীল দেশগুলো অস্ত্র খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী বেশি, পরিবেশ সুরক্ষায় তাদের কাজের আগ্রহ কম।
তিনি বলেন, রেমালের কারণে উপকূলীয় এলাকার মানুষ এখনো পানিবন্দী অবস্থায় আছে। সরকারি পদক্ষেপের কারণে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি কমে আসলেও জীবন জীবিকায় চরমভাবে প্রভাব পড়েছে। তাই স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্তার মাধমে দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে হবে।
Leave a Reply