অনলাইন আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একটি বহুতল আবাসিক ভবনে শুক্রবার (৫ আগস্ট) ইসরায়েল হঠাৎ বিমান হামলা চালিয়েছে । এতে পাঁচ বছরের এক শিশু এবং ইসলামিক জিহাদের এক কমান্ডারসহ অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ফিলিস্তিনি পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ইসরায়েলে নির্বাচন সামনে রেখে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেডস জানিয়েছে, গাজা শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্যালেস্টাইন টাওয়ারের একটি অ্যাপার্টমেন্টে বিমান হামলায় মারা গেছেন তাইসির আল-জাবারি নামে তাদের এক কমান্ডার। সংগঠনটি জানিয়েছে, দখলদারদের বিমান হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ১০০র বেশি রকেট ছুড়েছে তারা।
এই ঘটনায় ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে আবারও ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মাত্র ১৫ মাস আগেই অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের মাসব্যাপী হামলায় ২৬০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছিলেন।
দোহা ইনস্টিটিউট অব গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের টেমের কারমাউত বলেন, সবাই বিচলিত, কেউ যুদ্ধ চায় না। কারমাউত গাজার বাসিন্দা এবং তার পরিবার এখনো ওই শহরেই রয়েছে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে গাজায় চার-পাঁচটি বড় সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা এখনো উপত্যকা পুনর্গঠনের কথা বলছি। গাজা কখনোই সত্যিকারে সেরে ওঠেনি। এটি কেবল এক সংঘাত থেকে আরেক সংঘাতে বাস করে।
জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি নেতা বাসাম আল-সাদিকে গ্রেফতারের জেরে কয়েকদিন ধরে চলা উত্তেজনার মধ্যেই এ হামলা চালালো দখলদারবাহিনী। পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলের ওই অভিযানেও এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
আল-জাবারিকে হত্যার পাশাপাশি গাজা সীমান্তে কড়াকড়ি আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। ১৫ বছর ধরে অবরুদ্ধ এলাকাটির সব সীমান্ত ক্রসিং ফের বন্ধ করে দিয়েছে দখলদাররা।
রামাল্লা-ভিত্তিক গবেষক মরিয়ম বারঘৌতি বলেন, ফিলিস্তিনিদের হত্যা করতে ইসরায়েল পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে, যেন তা সামরিক বাহিনীর চেইন অব কমান্ডের অধীনে না হয়। তাই আমরা এখন যা দেখছি, তা হলো ইসরায়েলের সামরিক কৌশলের ‘ভয় ও আতঙ্কের’ তীব্রতা।
তিনি বলেন, এটাও মনে রাখতে হবে যে, আগামী নভেম্বরে ইসরায়েলে নির্বাচন এবং বসতি স্থাপনকারীদের সংখ্যা বাড়াতে গাজাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা রয়েছে ইসরায়েলি নেতাদের মধ্যে।
Leave a Reply