অনলাইন ডেস্ক: কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে খুন হয়েছেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার! কিন্ত এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি তার মরদেহ। এদিকে এই খুনের ঘটনায় রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, শেষবার এমপির ফোনের লোকেশন ছিল উত্তরপ্রদেশের মুজফফরপুরে। আর এখানেই ঘনীভূত হচ্ছে সন্দেহ। এমপি আনোয়ারুলকে যদি নিউটাউনের ফ্ল্যাটে খুন করা হয় তাহলে তার মোবাইল উত্তরপ্রদেশে গেলো কীভাবে? তাহলে কি খুনের পর সবাইকে বিভ্রান্ত করতেই তার মোবাইলটি উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যায় আতাতায়ী? পাশাপাশি এমপির মোবাইল মেসেজ ঘিরেও বাড়ছে সন্দেহ। কলকাতার বরানগরের বন্ধু গোপাল বিশ্বাস নিজের মেয়ে ও নিজ এপিএসকে একসঙ্গে হোয়াটসআপে মেসেজ করেছিলেন এমপি আনোয়ারুল।
যেখানে লেখা ছিলো, ‘বিশেষ কাজে দিল্লি পৌঁছলাম। আমাকে তোমাদের ফোন করার দরকার নেই। আমিই ফোন করে নেব। আর এই মেসেজ ও মোবাইলের শেষ টাওয়ার ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। আততায়ীদের মধ্যে তাহলে কি কোনও একজন আনোয়ারুলকে খুনের পর সবাইকে বিভ্রান্ত করতে তার মোবাইলটি উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যান? খুনের পর খুনি কি এমপির মোবাইল থেকেই হোয়াটস অ্যাপ করেছিল? যা রীতিমতো ভাবাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবং সিআইডিকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এমপি আনোয়ারুল নিখোজের পর মাঝে মাঝে তার মোবাইল খোলা হচ্ছিল। তবে বেশিরভাগ সময়ের জন্যই বন্ধ করে রাখা হয়েছিল ফোনটি। এমপি আনোয়ারুল খুনের বিষয়টি সামনে আসার পর পুলিশের ধারণা, খুনের পর খুনিরা মোবাইলটি এমপির কাছে থেকে কেড়ে নেয়। এর পর প্রমাণ লোপাট করতেই হয়তো এক আততায়ী তার মোবাইলটি নিয়ে বিহার, ঝাড়খন্ড হয়ে উত্তরপ্রদেশে চলে যায়। সেখান থেকে সে দিল্লি পালায়, এমন সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই ব্যক্তি পুলিশ ও সাংসদের পরিবারের লোকেদের বিভ্রান্ত করতে মোবাইল নিয়ে পালায়। তবে ওই ব্যাক্তি বাংলাদেশি, না ভারতীয় তা নিয়েও দানা বাধছে সন্দেহ। তবে আতাতায়ী যদি বাংলাদেশি হয় সেক্ষেত্রে সে পশ্চিমবঙ্গের লিঙ্কম্যানও হতে পারে। আতাতায়ীর যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য সম্পর্কে যথেষ্ট ধ্যান ধারণা আছে সেটাও বেশ পরিস্কার।
এদিকে, কীভাবে খুন করা হয় এমপি আনোয়ারুলকে, তা নিয়ে ক্রমশ জমাট বাঁধছে রহস্য।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ সূত্রে খবর, ১৩ মে নিউটাউনের আবাসনেই সম্ভবত প্রচুর পরিমানে মদ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় তাকে। খুনের পর টুকরো টুকরো করে কাটা হয় দেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিনদিন ধরে দেহাংশ ট্রলি ব্যাগে করে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। দেহের কিছু অংশ ওই ফ্ল্যাটের ফ্রিজে রাখা হয়েছিলো বলেও মনে করা হচ্ছে।
এমনকি ফ্ল্যাট থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, প্লাস্টিক ব্যাগে ভরেই দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলা হয়েছে। তবে সেই সমস্ত দেহাংশ কোথায় ফেলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। যার খোজে এখন কার্যত হন্যে হয়ে সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ এবং সি আই ডি।
Leave a Reply