1. shahjahanbiswas74@gmail.com : Shahjahan Biswas : Shahjahan Biswas
  2. ssexpressit@gmail.com : sonarbanglanews :
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন

ঋণগ্রস্ত হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২২
  • ৩৩৩ বার পড়েছেন

অনলাইন ডেস্ক: ঋণের লেনদেন স্বাভাবিক বিষয়। প্রয়োজনের কারণে ইসলামেও এটি নিয়ে আলোচনা রয়েছে। ঋণ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। তিনি নিজেও ঋণ গ্রহণ করেছেন। ঋণ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন। উম্মতকে ঋণমুক্তির দোয়া শিখিয়েছেন। এমনকি তিনি অমুসলিম থেকেও ঋণ নিয়েছেন। সুতরাং বলা যায়, ইসলাম বিপদে-আপদে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে অন্যের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করার অনুমতি দিয়েছে।

পাশাপাশি সঠিক সময়ে তা পরিশোধ করার প্রতি কঠোর নির্দেশও দিয়েছে। তবে ঋণের ব্যাপারে সদাসতর্ক থাকা জরুরি। কারণ ঋণগ্রস্ত হয়ে মারা গেলে জান্নাতে প্রবেশ কঠিন হবে। তা ছাড়া রাসুল (সা.) মৃত ব্যক্তির সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টনের আগে মৃতের ঋণ পরিশোধ করার ব্যাপারে জোর তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসের বাণী, ‘আল্লাহর পথে শহিদ হওয়া ব্যক্তিও ঋণের কারণে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না’ (মুসনাদ আহমাদ : ২২৪৯৩)।

বর্তমানে বানের ঢলের মতো বাড়ছে ঋণ। অধিকাংশ মানুষ কোনো-না-কোনোভাবে ছোট-বড় ঋণের কবলে জর্জরিত। আসলে ঋণের মাত্রা এতই তীব্র ভয়াবহ হওয়ার পেছনে রয়েছে অনেক কারণ। প্রথমত সামর্থ্যরে গণ্ডি অতিক্রম করা। অর্থাৎ, যার যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে, ততটুকু গণ্ডির মধ্যে না থেকে সামর্থ্যরে বাইরে গিয়ে পা রাখা আজ ঋণগ্রস্ত হওয়ার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকের লোভী অফার নিয়েও অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন ইনস্যুরেন্স ও ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষ থেকে বেশি ঋণে অল্প সুদ পরিশোধযোগ্য অফার দেওয়া হচ্ছে। যেমনÑ৫০ হাজারে মাত্র দুই-চার হাজার টাকা সুদ দিতে হবে। এক লাখে সাত-আট হাজার সুদ দিতে হবে। তাই এমন অফারে লোভী হয়ে ঝাঁপ দেওয়ার ফলে আজ অধিকাংশই ঋণগ্রস্ত। এটা এই জন্যই ঋণ বলা হচ্ছে, কেননা এর ফলে প্রতি সপ্তাহে কিংবা মাসে একটি নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট বাধ্যতামূলক পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা ব্যক্তি মালিকানায় টাকা থাকুক আর না থাকুক।

অকল্পনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণেও বাড়ছে ঋণের প্রবণতা। ব্যক্তির যতটুকু আয় তার চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ অনেক বেশি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আয় বাড়ছে না চাকরিজীবীর। ফলে পাঁচ টাকার স্থলে ১০ টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ পাঁচ টাকা আয়ের (বেতন) স্থলে ১০ টাকা আয়ের স্কেল বাড়ছে না। যার কারণে ঋণের মধ্যে পা রাখতে হচ্ছে। অপরদিকে কৃষিজীবীদের আরও শোচনীয় অবস্থা। যথার্থ জাকাত অনাদায়ও টেনে আনছে ঋণের অভিশাপ। প্রকৃতপক্ষে ধনীরা যদি সঠিকভাবে জাকাত প্রদান করত, তাহলে ঋণগ্রস্ত হওয়ার দূরের কথা দরিদ্রতা পর্যন্ত দূর হয়ে যেত। অসহায় মানুষদের ঋনের পেছনে ছুটতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঋণ প্রতিকারের ক্ষেত্রে জাকাতেরও একটি ভূমিকা রয়েছে।

ঋণ থেকে বেঁচে থাকতে দরকার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য ও বৈধ উপার্জনের উদ্যম। সতর্কতা হিসেবে কিছু বিষয় মনে রাখা দরকারÑ১. সাধ্যের মধ্যে চাহিদাগুলো সীমাবদ্ধ রাখা। ২. যথাসম্ভব ব্যাংক লোন থেকে বিরত থাকা। ৩. দরিদ্রতা দূর করতে বিভিন্ন কর্মসংস্থান গড়ে তোলার পাশাপাশি সুদমুক্ত কর্জে হাসানা ফান্ড প্রতিষ্ঠা করা। ৪. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখে চাকরিজীবীদের উপযুক্ত বেতন স্কেল নির্ধারণ করা। যাতে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি আয়ের ঘাটতি কমে আসে। ৫. সঠিকভাবে উপযুক্ত ব্যক্তিদের জাকাত প্রধান করা; যাতে ঋণের কবল ও দরিদ্রতা থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। ৬. পারস্পরিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা। ৭. সামাজিকতায় যৌতুক প্রথার মতো নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ডগুলো দূর করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে ঋণের কবল থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন :