শাহজাহান বিশ্বাস:আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে নাব্যতা সংকটের কারণে নতুন বিকল্প পথে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেরি কর্তৃপক্ষ।এতে একদিকে ঘোরা পথে যাতায়াতে সময় বেশী লাগছে এবং জালানি খরচও বেশী হচ্ছে।অপরদিকে নৌপথ ঠিক রাখতে দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরে ড্রেজিংকৃত চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল এখনও বন্ধ রয়েছে।অবশেষে ২৪ঘন্টা বন্ধ থাকার পর রবিবার সকাল থেকে বিকল্প পথে নতুন চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে।এতে ড্রেজিংয়ের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্ছা যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে নাব্যতা ঠিক রাথতে এবং খনন কাজের জন্য বিআইডব্লিউটিএ পাঁচটি ড্রেজার দিয়ে প্রায় এক মাস পূর্ব থেকেই আরিচা ঘাটের অদুরে যমুনায় খনন কাজ শুরু করেছে বিআইডিব্লউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগ। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। উক্ত নৌচ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে, বিকল্প পথে চলছে ফেরি। কিন্তু থেমে নেই ড্রেজার দিয়ে পানির নীচ থেকে মাটি খননের কাজ। ড্রেজিং বিভাগের ব্যাপক কর্মজজ্ঞ চলছে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের একাধিক পয়েন্টে।যা কোন কাজে আসছে না।আদৌ কোন কাজে লাগবে কিনা তা বলা মুসকিল। কারণ ড্রেজিংকৃত নদীর মাটি ভাটিতে নদীতেই ফেলা হচ্ছে। এতে আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে নির্ধারিত নৌ-চ্যানেল। বিগত এক মাস ধরে ড্রেজিংয়ের নামে এভাবে নৌপথ খননের খেলা চলছে আরিচার যমুনায়।এতে গচ্ছা যাচ্ছে সরকারের কোটি, কোটি টাকা।
রোকেয়া ফেরির মাস্টার মো.আবু সাইদ জানান, দীর্ঘ দিন ধরে ড্রেজিং করার পরও পুরান চ্যানেলে নাব্যতা সংকটের সমাধান না হওয়ায়, আমরা নতুন ঘুর পথে বিকল্প চ্যানেল দিয়ে ফেরি চালাচ্ছি। এতে প্রায় এক ঘন্টা সময় বেশী লাগছে এবং জ্বালনি খরচও বেশী হচ্ছে।পূর্বে আরিচা থেকে কাজিরহাট যেতে সময় লাগতো সোয়া ১ ঘন্টা আর ঘুর পথে এখন সময় লাগছে সোয়া ২ ঘন্টা। এভাবে কত দিন চলবে তা বলতে পারছি না।
শিবালয় ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ড্রেজিংয়ের নামে পানির নীচে কি করে, সেটা ওরা জানে আর আল্লাহ জানে। যত ফাকি-ঝুকির কাজ আছে এই ড্রেজিং ইউনিটে।কারণ ড্রেজিংকৃত নদীর মাটি নদীতে ফেলার কোন বিধান নেই। কিন্তু আরিচাতে যমুনা নদীর ড্রেজিংকৃত নদীর মাটি নদীতেই ফেলা হচ্ছে। সরেজমিনে এমনও দেখা গেছে, খননকৃত একটি ড্রেজারের মাটি আরেকটি ড্রেজারের খনকৃত স্থানে এবং আশপাসেই পড়ছে।ফলে মাস ভরে খনন করেও কোন কাজে আসছে না। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। এটা এক ধরনের শুভংকরের ফাঁকি বলা যেতে পারে।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহ মুহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ড্রেজিং করার পরও পূর্বের যে চ্যানেলটি ছিল সেটির নাব্যতা সংকটের কোন উন্নতি হয়নি। যে কারণে গত শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা আমাদের ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল। পরবর্তিতে ঘুর পথে বিকল্প নতুন একটি চ্যানেল দিয়ে আমরা ফেরি সার্ভিস চালু করেছি। এতে সময় বেশী লাগছে এবং জ্বালানি খরচও বেশী হচ্ছে।
এব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের দায়ীত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে কেউ ফোনকল ধরেননি এবং খুদে বার্তারও কোন উত্তর দেননি।
Leave a Reply