অনলাইন ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টায় অগ্নিসন্ত্রাস করলে এর পরিণতি ভালো হবে না। যারা (নির্বাচন বানচালের চেষ্টা) করবে দেশের মানুষই তাদের শাস্তি দেবে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশবাসী ভোট দিয়ে প্রিয় মানুষকে নির্বাচিত করবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সংসদে বসবে, আইন পাস করবে, রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। এটা জনগণের অধিকার। জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে যারা অগ্নিসন্ত্রাস করবে, জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে। আমি জনগণের কাছে সেই আহ্বান জানাই। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০১৩-১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বহু মানুষকে অগ্নিসন্ত্রাস করে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এটা কোন ধরনের রাজনীতি? আমরা চাই জনগণের ভোটের অধিকার অব্যাহত থাকবে। ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যাদের মানুষের ওপর আস্থা নেই, বিশ^াস নেই, দল হিসেবে সুসংগঠিত না, তারাই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে যাচ্ছে। যে সব দল নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, কষ্টের অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা কেউ যাতে ব্যাহত করতে না পারে, সেই আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর রাতের অন্ধকারে বন্দুক নিয়ে ক্ষমতা দখলের পালা চলছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, বৈধতা দেওয়ার জন্য জনগণের ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। আমাদের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে। কিন্তু আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত গণতন্ত্র অব্যাহত আছে বলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। গণতন্ত্রের এই ধারাবাহিকতার কারণে অভূতপূর্ব উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন সম্ভব হয়েছে।
দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা মনোনয়ন ফরম নিচ্ছেন, তারা সবাই যোগ্য, এতে কোনো সন্দেহ নেই। যারা প্রার্থী হবেন তারা ফরম সংগ্রহ করবেন। আট বিভাগের জন্য ১০টি বুথ তৈরি করে দিয়েছি। সংসদ সদস্যদের নম্বর বা সিরিয়াল অনুযায়ী ফরমগুলো সাজানো হবে। এভাবে প্রসেস করে মনোনয়ন বোর্ডে সেগুলো উপস্থাপন করা হবে। দলের সংসদীয় বোর্ডের মাধ্যমে প্রার্থীর যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা দেখে, কার্যক্রম বিবেচনা করে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ভোট এবং নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করা যেতে পারে। আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার অব্যাহত থাকুক এবং ভোটের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন হতে পারে। দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। সুতরাং যারা সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বানচালের চেষ্টা করছে তাদের সম্পর্কে জনগণকে সচেতন থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন বানচাল একটি দেশের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হতে পারে। ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে জীবন ও সম্পত্তি ধ্বংস করা কোন ধরনের রাজনীতি?
হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরিবেশ ও কর্মকাণ্ড ধ্বংস করা হচ্ছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াত জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আমোদ-ফূর্তি করে। নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িতরা কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। বিশাল সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত দেশের অব্যাহত গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করতে না দিতে আমি জনগণের প্রতি আহ্বান জানাব।
এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রির বুথ পরিদর্শন করেন। সুত্র:সময়ের আলো
Leave a Reply